ছবিঃ সংগৃহীত
২০২২ সালে চীনা নারীদের প্রজনন হার রেকর্ড সর্বনিম্ন ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গত কয়েক দশকের তুলনায় সবচেয়ে কম। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির মোট জনসংখ্যা ১৪১ কোটি।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) চীনা রাষ্ট্রীয় পত্রিকা ন্যাশনাল বিজনেস ডেইলি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ন্যাশনাল বিজনেস ডেইলির প্রতিবেদন বল ছে, চীনের জনসংখ্যা ও উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের পরিসংখ্যান তথ্যানুযায়ী দেশটির ১০ কোটিরও অধিক জনসংখ্যার মধ্যে সর্বনিম্ন প্রজনন হার পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ পরিসংখ্যান তথ্য সম্ভবত দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও চিন্তিত করবে কেননা জন্মাহার বাড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে চীন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, হংকং ও সিঙ্গাপুরের পাশাপাশি চীনের প্রজনন হার বিশ্বের সর্বনিম্ন।
বিগত ছয় দশকের মধ্যে চীন সম্প্রতি প্রথম জনসংখ্যা হ্রাসের ঝুঁকিতে পড়ে। একই সঙ্গে দেশটিতে দ্রুত বয়স্ক লোকের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে জরুরি ভিত্তিতে জন্মহার বাড়ানোর জন্য আর্থিক উদ্দীপনা ও উন্নত শিশু যত্ন সুবিধাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় বেইজিং।
চলতি বছরের মে মাসে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ বিষয়ে আলোচনা সভা করেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, জনসংখ্যার গুণমান উন্নত করতে ও ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সচেষ্ট হবে বেইজিং। এ ক্ষেত্রে মডারেট ফার্টিলিটি বা মধ্যম প্রজনন স্তর বজায় রাখতে শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মনোনিবেশ করা হবে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, শিশু লালনপালনের উচ্চ খরচ তো রয়েছেই, একই সঙ্গে শিশুদের যত্ন নিতে অনেক নারী কর্মক্ষেত্রে আসতে পারেন না। বন্ধ হয়ে যায় উপার্জনের পথ। এসব কারনে একাধিক সন্তান জন্ম দিতে অনীহা রয়েছে চীনা নারীদের। এছাড়া লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিবন্ধকতাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটিতে নারীরাই মূলত শিশুদের লালন পালন করার কাজটি করে আসছে। যদিও সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ শিশু লালন-পালনের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন কিন্তু পিতৃত্বকালীন ছুটি এখনও বেশিরভাগ প্রদেশে সীমিত।
চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের পরিবার পরিকল্পনা সংগঠন মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) এক পৃথক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সন্তানহীন মহিলাদের সংখ্যা পাঁচ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে গত বছর ৪৩ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এক বা দুই সন্তানের দম্পতির শতকরা হারও কমেছে। প্রতি মহিলার গড় সন্তানের সংখ্যা ২০১৭ সালের ১ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে নেমে গত বছর (২০২২ সালে) রেকর্ড সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক নয় শতাংশে পৌঁছেছে।
এসকে/