রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

থাইরয়েড উদ্দীপক হরমোন কমানোর সহজ উপায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৩৭ অপরাহ্ন, ২রা জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে থাইরয়েডের সমস্যা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। দেহের মূল বিপাক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য থাইরয়েড নির্দিষ্ট হরমোন তৈরি করতে না পারলে ‘হাইপোথাইরয়ডিজম’ সৃষ্টি হয়।

দুর্বলতা, মন খারাপ, ওজন বৃদ্ধি এবং খাবার গ্রহণে অপারগতা ‘হাইপোথাইরয়ডিজমের লক্ষণ। এর সঠিক চিকিৎসার অভাবে ওজন বৃদ্ধি, অনুর্বরতা, হৃদরোগ এবং সংযোগস্থলে ব্যথা দেখা দেয়।

টাইমসঅবইন্ডিয়া ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের হাইপোথাইরয়ডিজম চিকিৎসার জন্য ‘ফিসিকো ডায়েট ক্লিনিক’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বিধি চাওলা বলেন, ‘হাইপোথায়রয়ডিজম’য়ের লক্ষণ ও উপসর্গ কমাতে ‘টিএসএইচ’ বা ‘থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন’য়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।  এক্ষেত্রে থাইরয়েডের ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।”

তিনি পরামর্শ দেন, “এরকম সমস্যায় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তন করলে উপকার পাওয়া যায়।”

হাইপোথাইরয়ডিজম আছে এমন ব্যক্তির শরীর থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে পারে না। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন থাইরয়েডের সমস্যা দূর না করলেও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

আইয়োডিন, সেলেনিয়াম ও জিংক এমন কিছু উপাদান যা থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে। কিছু খাবার আবার থাইরয়েডের কার্যকারিতার ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, ‘থায়রয়ডিজম’য়ের লক্ষণগুলো বাড়িয়ে তুলতে পারে।

থাইরয়েড ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত পুষ্টি উপাদান সমূহ

চাওলার মতে, “কিছু নির্দিষ্ট খাবার এবং সম্পূরক নিয়নন্ত্রিত মাত্রায় খাওয়া উপকারী। কারণ এগুলো দেহের থাইরয়েড প্রতিস্থাপন থেরাপি কতটা ভালো মতো শোষণ করে তার ওপরে প্রভাব রাখে।”

আয়োডিন

আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো হল- ডিম, পনির, লবণ ও দুধ। আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে সতর্ক থাকতে হবে। এটা হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে হাইপো ও হাইপার- দুই ধরনের থাইরয়েডিজমের ক্ষতির কারণ হতে পারে।

সেলেনিয়াম

সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হল- টুনা, মুরগি, ওটমিল, বাদামি চাল, ডিম। এগুলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান সমৃদ্ধ এবং থাইরয়েড হরমোনের সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখে। আর এটা প্রাকৃতিকভাবেইই থাইরয়েড কোষে পাওয়া যায়।

জিংক

জিংক সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে সবজি, দই, শস্য, কুমড়ার বীজ ও মুরগি। সেলেনিয়ামের সাথে জিংকের পরিপূরক মিলিত হলে হাইপোথাইরয়েড হওয়া নারীদের থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়ায়।

থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়াতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে

গইট্রোজেন্স এমনই একটি উপাদান যা বেশি পরিমাণে খাওয়া থাইরয়েডের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ব্রকলির মতো গইট্রোজেনযুক্ত শাকসবজি সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যকর এবং এটা পরিমিত খাওয়া থাইরয়েডের কার্যকারিতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে না।

তাছাড়া রান্নার ফলে শাকসবজিতে থাকা গইট্রোজেনিক পদার্থ অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

এই উপাদান সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে অধিকাংশ সবুজ ক্রুসিফেরাস সবজি যেমন- ব্রাসেলস স্প্রাউটস, মটর, ব্রকলি, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। 

সয়া: এটা থাইরয়েড হরমোন তৈরির ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তবে ঠিক কীভাবে এটা কাজ করে তা জানতে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে।

ডা. চাওলা, পরিমিত পরিমাণে সয়া খাওয়ার পরামর্শ দেন।

সয়া ভিত্তিক খাবারের মধ্যে আছে টফু, এডামেম, সয়া সস, সয়া দুধ ইত্যাদি।

থাইরয়েডের ওষুধ গ্রহণে পরামর্শ

দেহে সম্পুর্ণ শোষণের জন্য খালি পেটে থাইরয়েডের ওষুধ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। রাতের খাবার খাওয়ার কমপক্ষে তিন থেকে চার ঘন্টা পর অথবা সকালের নাস্তার ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা আগে এটা খাওয়া উপকারী।

আয়রন বা ক্যালসিয়াম ধরনের খাবার খাওয়ার কমপক্ষে চার ঘণ্টা সময়ের মধ্যে এই ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন: মাছের মাথা খেলে কি সত্যিই বুদ্ধি বাড়ে?

এছাড়াও, ওষুধ ও পুষ্টিকর সম্পূরক গ্রহণ দেহকে থাইরয়েডের ওষুধ যেমন- অ্যাসিড নিউট্রিলাইজার বা অ্যান্টাসিড, ক্যালসিয়াম সম্পূরক ও দুধ, উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ খাবার যেমন- তিসি, ফাইবার বার ও ফাইবার পানীয় এবং লৌহের যৌগ শোষণে বাধা দিতে পারে বলে জানান, ডা. চাওলা।

মোড়কজাত খাবার এড়িয়ে চলা

উচ্চ প্রক্রিয়াজাত ও বাড়াতি শর্করা সমৃদ্ধ খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণ ও স্বাভাবিক সুস্থতার পথে অন্তরায়। অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয়তে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে।

এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে ভাজা পোড়া খাবার, বার্গার, হটডগস, ডোনাট, কেক, কুকিজ সোডা পানীয় ইত্যাদি।

এম এইচ ডি/ আই.কে.জে/


খাদ্যাভ্যাস থাইরয়েড লাইফস্টাইল

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন