শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৭ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ‘জনশক্তি’ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি : জাতীয় নাগরিক কমিটি *** চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, শুধু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়েছে : হাসনাত *** লাইসেন্স ও ট্যাক্সের আওতায় আসছে ব্যাটারিচালিত রিকশা *** মেঘাচ্ছন্ন ঢাকার আকাশ, সূর্যের দেখা মিলবে যেদিন *** বছরের দীর্ঘতম রাত আজ, সবচেয়ে ছোট দিন আগামীকাল *** পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে ট্রেনের ভাড়া ও সময়সূচি *** মূল্যস্ফীতি প্রকাশে কারচুপি নেই, তাই বেশি দেখাচ্ছে : অর্থ উপদেষ্টা *** জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ *** চাঁদাবাজদের তালিকা হচ্ছে, ২-৩ দিনের মধ্যে অভিযান : ডিএমপি কমিশনার *** মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেফতার ২২

শাড়ি পরার দিন আজ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:২৩ অপরাহ্ন, ২১শে ডিসেম্বর ২০২৪

#

ছবি : সুখবর

‘শাড়িতে নারী’ এ কথাটি বেশ প্রচলিত। বাঙালি নারীর নাকি আসল সৌন্দর্য ফুটে ওঠে শাড়ি গায়ে জড়ালে। আপনি যদি একজন শাড়িপ্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের দিনটি আপনারই। আজ ২১শে ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক শাড়ি দিবস’। 

সৌন্দর্য, বহুমুখিতা এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বের জন্য পরিচিত শাড়ি। বিশ্বের অন্যতম আইকনিক এবং চিরন্তন এই পোশাকটির প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশে দিবসটি পালিত হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঐতিহ্যবাহী ফ্যাশনের একটি গ্লোবাল চিহ্ন হিসেবে পরিণত হয়েছে শাড়ি। 


বিশ্ব শাড়ি দিবসের উৎপত্তি

শাড়ির সাংস্কৃতিক গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং এর বৈশ্বিক জনপ্রিয়তা প্রচার করার জন্য বিশ্ব শাড়ি দিবস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যদিও এই দিনের সঠিক উৎপত্তি সেভাবে জানা যায়নি, তবে এটি শাড়ি প্রেমী এবং সাংস্কৃতিক সমর্থকদের দ্বারা তৈরি হয়েছে এটুকু জানা যায়। তারা এই পোশাকটির ঐতিহ্য ও কারিগরি দক্ষতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চেয়েছিলেন। 

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক শাড়ি 

শাড়ি কেবল একটি পোশাক নয়— এটি সংস্কৃতির সারবত্তা এবং ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রথাগতভাবে দক্ষিণ এশিয়ার নারীরা শাড়ি পরিধান করলেও, বিশ্বের অন্যান্য অংশেও পরিচিত একটি পোশাক। সাধারণত শাড়ি বলতে পাঁচ থেকে নয় গজ দীর্ঘ একটি কাপড়ের টুকরো বোঝানো হয় যা শরীরের চারপাশে বিভিন্নভাবে পরিধান করা হয়। স্থানীয় ও উৎসবের ভিত্তিতে এর পরিধানের ধরন পরিবর্তিত হয়। 

শাড়ির সরলতা ও সৌন্দর্য একে দৈনন্দিন পোশাক এবং ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিধানযোগ্য করে তোলে, যা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বহুমুখী পোশাকগুলোর একটি করে তোলে। বিভিন্ন অঞ্চলের শাড়ি পরার নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। আবার শাড়ির কাপড়ের নানা ধরন রয়েছে। যেমন- সুতি, সিল্ক, মসলিন, জর্জেট, শিফন বা ক্রেপ। বিভিন্ন আবহাওয়া, উৎসব বা ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী শাড়ি পরিবর্তিত হতে পারে।

বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে নারীরা শাড়ি পরিধান করে থাকেন। স্থানীয় সীমানা পেরিয়ে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এই পোশাকটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। দক্ষিণ এশীয় না হওয়া অসংখ্য নারীরা বিশ্বব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানে শাড়ি পরিধান করে থাকেন। এটি একধরনের মাধুর্য এবং নারীত্বের প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।


সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্বের ডিজাইনাররা শাড়িকে আধুনিক রুচি অনুযায়ী পুনরায় ডিজাইন করেছেন। নতুন নতুন কাপড়, ডিজাইন এবং শাড়ি পরার পদ্ধতি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন তারা। ফলে এটি তরুণ প্রজন্মের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক উপাদানের সংমিশ্রণে শাড়ি এখন একটি গ্লোবাল ফ্যাশন স্টেটমেন্ট, যা আন্তর্জাতিক রানওয়ে এবং রেড কার্পেটেও দেখা যায়। বছরের পর বছর ধরে তাই পোশাক হিসেবে রাজত্ব করে আসছে শাড়ি নামের পোশাকটি। 

আরো পড়ুন : নারকেল তেলও কমাবে ওজন!

বিশ্ব শাড়ি দিবসের গুরুত্ব

শাড়ি যারা ভালোবাসেন তাদের জন্য আলাদা কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না। তবুও বিশ্ব শাড়ি দিবস এমন একটি সুযোগ, যেখানে শাড়িপ্রেমীরা এই আইকনিক পোশাক তৈরির শিল্পকর্ম এবং কারিগরি দক্ষতাকে উদযাপন করতে পারেন। শাড়ি তৈরি করার জন্য কাপড় বোনা থেকে শুরু করে সূক্ষ্ম ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা, হাতে সেলাই করার প্রক্রিয়া সবকিছুই অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ এবং দক্ষতার কাজ। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের গ্রামীণ অঞ্চলের কারিগররা শতাব্দীজুড়ে শাড়ি বোনা এবং তৈরির ঐতিহ্যকে জীবিত রেখেছেন। তাদের জ্ঞান আর কৌশল প্রজন্মের পর প্রজন্মে উপহার দিচ্ছে নানা রঙের নানা ঢঙের শাড়ি। 

এই দিনটিতে, ব্যক্তি ও সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে শাড়ি পরিধান করে এবং তাদের বিভিন্ন স্টাইল ও কাপড় প্রদর্শন করে ঐতিহ্য উদযাপন করেন। এই দিনটি নারীদের শাড়ি শিল্পে অবদানও তুলে ধরতে সাহায্য করে। কারণ শাড়ি ডিজাইন, তৈরি এবং বিক্রিতে নারীরা বড় ভূমিকা পালন করে থাকেন।

বিশ্ব শাড়ি দিবস উদযাপন করবেন কীভাবে? 

শাড়ি পরুন

বিশ্ব শাড়ি দিবস উদযাপনের সবচেয়ে সহজ ও সরাসরি উপায় হল শাড়ি পরিধান করা। অফিস বা অনুষ্ঠানে আজ শাড়ি পরে যেতে পারেন। কোনো বিশেষ উপলক্ষ না থাকলে কেবল এই দিবস উদযাপন করতে এমনিই আনন্দের জন্য শাড়ি পরতে পারেন। শাড়ি পরিধান করে এই ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে পারেন।

স্থানীয় কারিগরদের সমর্থন করুন

শাড়ি কিনে বা হস্তশিল্পীদের সমর্থন করে দিনটি উদযাপন করতে পারেন। এটি শাড়ি তৈরির ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখে এবং শাড়ি তৈরি করা কারিগরদের সাহায্য করে।

শাড়ির ইতিহাস ও কারিগরি সম্পর্কে জানুন

আজকের দিনটিতে শাড়ির ইতিহাস, এর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব এবং বিশ্বের বিভিন্ন শাড়ি পরার স্টাইল সম্পর্কে জানুন। শাড়ির বিভিন্ন কাপড়, ডিজাইন এবং বোনা কৌশল সম্পর্কে জানলে এর প্রতি আপনার আগ্রহ এবং সম্মান আরও বাড়াবে।

উৎসব আয়োজন করুন

পরিচিতদের নিয়ে উৎসব আয়োজন করতে পারেন আজ। শাড়ির ফ্যাশন শো, প্রদর্শনী হতে পারে। আবার বান্ধবীরা মিলে শাড়ি পরে কোথাও ঘুরতেও যেতে পারেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন

কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না? সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের শাড়ি পরা ছবি আপলোড করুন, শাড়ি নিয়ে কোনো স্মৃতি বা গল্প শেয়ার করুন। কেন শাড়ি ভালোবাসেন তা জানানোর উৎকৃষ্ট দিন আজ। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এই চিরন্তন পোশাকের প্রতি ভালোবাসা এও শ্রদ্ধা প্রকাশ করার দিন আজ। 

বিশ্ব শাড়ি দিবস এমন একটি দিন, যা শতাব্দীর ঐতিহ্য, কারিগরি দক্ষতা এবং সৌন্দর্যের একটি পোশাককে শ্রদ্ধা জানানোর উপলক্ষ। ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই হোক কিংবা নিজের আনন্দ প্রকাশের মাধ্যম হোক, আজ শাড়ি পরুন। আপনি পুরুষ হলে, প্রিয় নারীকে শাড়ি উপহার দিন। 

এস/কেবি

শাড়ি

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন