শুক্রবার, ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২১শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** গোপালগঞ্জে সহিংসতা: তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ল ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত *** প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের সাক্ষাৎ, নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি *** নুরের ওপর হামলা তদন্তে তিন সদস্যের কমিশন গঠন *** পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আজ থেকে বর্ণাঢ্য আয়োজন *** দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত তারেক রহমানকে নিতে হবে, দরকার হলে ডকুমেন্ট দেবে সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** চিরকুমার আরমানির ১০ বিলিয়ন ডলারের ফ্যাশন সাম্রাজ্য এখন কার *** গাজীপুরে বাড়ল ১ আসন, কমল বাগেরহাটে *** দুবাইয়ে ১২০০ কোটি টাকা পাচার: সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা সিআইডির *** মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগপত্র দাখিল হলেই নির্বাচনের অযোগ্য হবেন, সরকারি চাকরিও থাকবে না *** জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা আশিস কাপুর যে কারণে গ্রেপ্তার

পাহাড়িয়া সম্প্রদায়

শুক্রবার খাওয়ানো হবে খাসি জবাই করে, রোববার ছাড়তে হবে ঘর

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

খাসি জবাই করে সবাইকে ভরপেট খাওয়ানো হবে। তারপর মহল্লার বাসিন্দারা একদিন সময় পাবেন জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে। আগামী রোববার (৭ই সেপ্টেম্বর) তাদের ঘর ছাড়তে হবে। ৫৩ বছর ধরে বসবাসের পর এমন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছেন তারা।

আগামীকাল শুক্রবার (৫ই সেপ্টেম্বর) এ ভোজের আয়োজন হবে রাজশাহীর মোল্লাপাড়া এলাকার আদিবাসীপাড়ায়। পাড়াটির অবস্থান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫৩ বছর আগে এখানে ১৬ কাঠা জমির ওপর বাড়ি করে পাহাড়িয়া সম্প্রদায়ের ছয়টি পরিবার। তিন প্রজন্মে ছয়টি বাড়ি এখন ১৬টি হয়েছে। পাড়াটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে আদিবাসীপাড়া হিসেবে পরিচিত। এত দিন পর এখন এ জমির মালিকানা দাবি করছেন সাজ্জাদ আলী নামের এক ব্যক্তি।

তিনি পাহাড়িয়াদের উচ্ছেদ করে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জায়গাটি দখলের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন। সাজ্জাদের চাপে ইতিমধ্যে তিনটি পরিবার জায়গা ছেড়ে চলে গেছে। এখন ১৩টি পরিবার রয়েছে। আগামী রোববার তাদেরও এ পাড়া ছেড়ে যেতে হবে।

পাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবার ভারতে চলে গিয়েছিল। স্বাধীনতার পর তারা দেশে ফিরে আর বাড়িঘর পায়নি। তখন ইন্দ্র ধুপি নামের এক ব্যক্তি তার ১৬ কাঠা জমিতে ছয়টি পরিবারকে বাস করতে দেন।

ইন্দ্র ধুপি অনেক আগে মারা গেছেন। মহল্লার মানুষের সুবিধার জন্য সিটি করপোরেশন এখানে দুটি পাকা শৌচাগার নির্মাণ করে দিয়েছে। একটি নলকূপও বসিয়ে দেওয়া হয়। এত দিন পর এখন সাজ্জাদ আলী নামের এক ব্যক্তি দাবি করছেন, ইন্দ্র ধুপি মৃত্যুর আগে এ জমি তার কাছে বিক্রি করে গেছেন। এখন ঘর ছাড়তে হবে সবাইকে।

পাড়ার বাসিন্দা মিশ্র রাম বর্মণ (৪০) জানান, বছর দুয়েক আগে সাজ্জাদ আলী তাদের বাড়ি ছাড়তে বললে তৎকালীন ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম দুই পক্ষকে নিয়ে বসেছিলেন। সেখানে সাজ্জাদ আলীর কাগজপত্র দেখে কাউন্সিলর বলেছিলেন—এ দলিল জাল। তখন কৌশলে কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে পালিয়ে যান সাজ্জাদ আলী।

এরপর তাদের আর উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়নি। গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিন দিন পর সাজ্জাদ আলী ফের মহল্লায় এসে সবাইকে ঘর ছাড়তে বলেন। পাহাড়িয়ারা বাড়ি ছাড়তে না চাইলে একপর্যায়ে কিছু টাকা নেওয়ার প্রস্তাব দেন সাজ্জাদ।

মিশ্র রাম বর্মণ বলেন, ‘পরিস্থিতি এমন যে, আমরা কারও কাছে যেতে পারছি না। কাউন্সিলরও নেই। তাই চিন্তাভাবনা করে টাকা নিতে রাজি হলাম। সাজ্জাদ হাজি বললেন যে, যুদ্ধের পর ছয়টা পরিবার ছিল, ওই ছয় পরিবার ধরে ৫ লাখ টাকা করে দিবে। এখন তার ছেলেরা টাকা ভাগ করে নিবে। এ টাকা নিয়েই চলে যেতে হচ্ছে।’

পাহাড়িয়া সম্প্রদায়

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন