ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ছত্তিশগড়ের খৈরাগড় জেলার সারাগোন্ডি গ্রামের বৃদ্ধা দেবলা বাই। নিঃসন্তান দেবলা বাই দুই দশক আগে নিজের উঠানে একটি ছোট অশ্বত্থগাছ লাগিয়েছিলেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, তিনি গাছটিকে নিজের সন্তানের মতো যত্ন করতেন। নিয়মিত পানি দিতেন, পরিচর্যা করতেন। কিন্তু সম্প্রতি সেই গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কেউ গোপনে গাছটি কেটে ফেলেছে। খবর এনডিটিভির।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ বছর ধরে লালন করা গাছটি কেটে ফেলায় কান্নায় ভেঙে পড়েন ৮৫ বছরের বৃদ্ধা দেবলা বাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কেটে ফেলা গাছের পাশে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন দেবলা বাই। গাছের গুঁড়ির পাশে বসে অঝোরে কাঁদছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘অত্যন্ত হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ২০ বছর আগে লাগানো অশ্বত্থগাছ কেটে ফেলার পর বৃদ্ধা নারী বিলাপ করছেন। ঘটনাটি ছত্তিশগড়ে ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি।’
স্থানীয়দের অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৫ই অক্টোবর সকালে খৈরাগড়ের ইমরান মেমন নামের এক ব্যক্তি তার সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে গাছটি কাটার চেষ্টা করেন। তবে গ্রামবাসী বাধা দিলে তারা সরে যান। কিন্তু পরদিন সকালে দেখা যায়, গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।
ঘটনার পর খৈরাগড় থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৮ ধারা (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা) ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩(৫) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
খৈরাগড়-ছুইখাদান-গানদাই (কেসিজি) পুলিশের তত্ত্বাবধানে অভিযুক্ত ইমরান মেমন ও তার সহযোগী প্রকাশ কোসরেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খৈরাগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (এসএইচও) অনিল শর্মা।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন, মেমন সম্প্রতি একটি জমি কিনেছেন। তার জমির সামনেই ছিল দেবলা বাইয়ের গাছটি। নিজের জমি রাস্তার সমান করতে ওই গাছটি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন মেমন।
এ জন্য প্রকাশ কোসরেকে ডেকে গাছ কাটার মেশিন ব্যবহার করে রাতের আঁধারে গোপনে গাছটি কেটে ফেলেন। গাছ কেটে ফেলার পর তারা খৈরাগড়ে পালিয়ে যান এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য মেশিনটি নদীতে ফেলে দেন। পুলিশ ডুবুরি নামিয়ে মেশিনটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর নানান প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়া উচিত।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন