ছবি : সংগৃহীত
পড়াশোনার ধরন এখন অনেকটা বদলে গেছে। বিজ্ঞাননির্ভর গবেষণার মাধ্যমে উঠে এসেছে পড়ার বিভিন্ন কৌশল। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেসের লার্নিং অ্যান্ড ফরগেটিং ল্যাবের গবেষক মাইকি গার্সিয়া। পড়াশোনার কার্যকর উপায় খোঁজা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন তিনি। তার মতে, ‘অনেকেই মনে করেন তারা ভালো শিক্ষার্থী নন। আসলে কার্যকর অনুশীলনপ্রক্রিয়া ব্যবহার করেন না বলেই তারা এমনটা ভাবেন।’ গবেষক মাইকি একটি পাঁচ মিনিটের ভিডিওর মাধ্যমে জানিয়েছেন—কীভাবে মানুষের মস্তিষ্ক পড়ালেখায় আরও সক্রিয় হতে পারে। এরকমই কিছু উপায় সম্পর্কে চলুন জানা যাক-
শেখানোর জন্য শিখুন
আপনি নিজে যখন শিখবেন, তখন এমনভাবেই শিখুন, যেন ভবিষ্যতে অন্য কাউকে শেখাতে পারেন। শুরু থেকেই এ বিষয় মাথায় রাখুন। মনে মনে অনুশীলন করুন, যা শিখছেন, সেটা অন্যকে কীভাবে বোঝাবেন। এতে পড়ার বিষয়ে শুধু যে মনোযোগ বাড়বে, তা নয়, বিষয়টি আপনি বিশ্লেষণও করতে পারবেন।
মনে রাখার কৌশল আয়ত্ত করুন
গবেষক মাইকি বলছেন, ক্লাস শেষ হওয়ার ১০ মিনিট পর শিক্ষার্থীদের তিনি একটা ‘অ্যাসাইনমেন্ট’ দেন। একটি খালি কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ক্লাসে কী কী হলো, লিখে ফেলো। একই দিন রাতের জন্য সবাইকে একটা বাড়ির কাজও দেন তিনি। খালি কাগজে আবারও লিখতে হবে, আজ ক্লাসে কী শিখলাম। দুইবার লেখার কারণে পুরো ক্লাসে যা যা পড়া হয়েছে, অনেক দিন তা শিক্ষার্থীদের মনে থাকে।
আরো পড়ুন : কোন রঙের ছাতা ব্যবহার করলে গরম কম লাগে?
নিজেকে পরীক্ষা করুন
পরীক্ষার জন্য শুধু মুখস্থ করে পড়া যাবে না। প্রশ্ন বা অধ্যায়ের শিরোনাম আর উপশিরোনাম ধরে নিজেকে পরীক্ষা করুন। শিরোনাম–সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদে যা আছে, তা কল্পনা করার চেষ্টা করুন। হুটহাট নিজেকে প্রশ্ন করুন। কী, কেন, কীভাবে—এসব জিজ্ঞাসা করে নিজের সঙ্গে নিজের বোঝাপড়া বাড়িয়ে নিন।
অনুশীলনে বিরতি নিন
কখনো জিমে ব্যায়াম করতে গেলে দেখবেন, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তারা সারা সপ্তাহই ব্যায়াম করেন না। পড়ালেখাটাও শরীরচর্চার মতো। সপ্তাহে এক দিন পড়াশোনায় বিরতি দিন। কিংবা দিনে আপনার পড়াশোনা জন্য চার ঘণ্টা থাকলে বাড়তি এক ঘণ্টা সৃজনশীল কোনো কাজে ব্যয় করুন। আবার পুরো ১ ঘণ্টা টানা না পড়ে মাঝখানে ১৫ মিনিটের বিরতি নিয়ে পড়াশোনার সময় ভাগ করে নিন।
এক বিষয় বেশিক্ষণ পড়বেন না
আমরা এক বসাতে অনেক পড়া শেষ করতে চাই। এমনটা কখনোই করবেন না। একটানা অনেকক্ষণ এক বিষয় না পড়ে আলাদা আলাদা বিষয়ে অল্প অল্প পড়ুন। এতে বেশি পড়া মনে থাকে। গণিত করার বিরতিতে কিছুক্ষণ ইংরেজি শব্দ শিখতে পারেন। পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার মধ্যে কিছুটা বাংলা ভাষা নিয়ে পড়ে নিতে পারেন।
বিভিন্ন জায়গায় পড়াশোনা করুন
আমরা সাধারণত ঘরের একটি কোনেই নির্ধারিত টেবিলে পড়াশোনা করি। আবার লাইব্রেরির নির্দিষ্ট স্থানে অনেকে পড়েন। এমন না করে বিভিন্ন জায়গায় পড়াশোনার চেষ্টা করুন। ক্লাসরুমে, বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের করিডরে, মাঠে কিংবা ছাদেও পড়াশোনা করতে পারেন। পড়া মনে রাখার জন্য স্থানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যত বেশি বৈচিত্র্য থাকবে, তত আপনার পড়াশোনা মনে থাকবে।
দ্রুত বই বা ফ্ল্যাশকার্ড ওলটাবেন না
কোনো কিছু মনে না পড়লে আমরা দ্রুত বই বা লেকচার দেখে নিই। এমনটা যতটা সম্ভব কম করবেন। আমাদের মস্তিষ্ক যত সমস্যায় পড়ে, তত সে সমাধানের উপায় খুঁজতে থাকে। কোনো কিছু মনে না পড়লে মাথা খাটানোর চেষ্টা করুন। মনে করার চেষ্টা করুন। দ্রুত বই দেখে চট করে জেনে নেওয়ার বদলে মস্তিষ্ককে উপায় বের করতে দিন। এতে বেশি মনে থাকবে পড়ার বিষয়।
সূত্র: ইঙ্ক ডট কম
এস/ আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন