শুক্রবার, ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর মাহাত্ম্য

উপ-সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৭:০৩ অপরাহ্ন, ২৫শে আগস্ট ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

ভাদ্র মাসের অষ্টম তিথিতে জন্মাষ্টমী পালিত হয়। পুরাণ অনুসারে পাঁচ হাজার বছর আগে এই ধরাধামে অবতীর্ণ হন ভগবান কৃষ্ণ। তার আবির্ভাব তিথি প্রতি বছর জন্মাষ্টমী নামে পালিত হয়। মথুরায় কংসের কারাগারে দেবকী ও বসুদেবের অষ্টম গর্ভের সন্তান কৃষ্ণের জন্ম হয়। কংসের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টির রাতে যমুনা পেরিয়ে বৃন্দাবনে যশোদা ও নন্দের সংসারে কৃষ্ণকে রেখে আসেন বসুদেব। স্বয়ং বিষ্ণু কারাগৃহে উপস্থিত হয়ে দেবকী ও বাসুদেবকে দর্শন দেন এবং তাদের পূর্বজন্মের তপস্যা সম্পর্কে জানান। তার পুণ্যফলের জন্যই দেবকী ও বাসুদেবের কাছে তিন বার অবতার নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিষ্ণু দেবকীকে জানান যে, প্রথম জন্মে বৃষ্ণীগর্ভ নামক এক পুত্র হয়। দ্বিতীয় জন্মে দেবকী যখন দেবমাতা অদিতি ছিলেন, তখন বিষ্ণু ছিলেন, এবং তিনিই বামন অবতারে রাজা বলিকে উদ্ধার করেন। এবার ভগবান বিষ্ণু তৃতীয় জন্মে দেবকীর পুত্র কৃষ্ণ হিসেবে জন্মগ্রহণ করে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন ।

পৃথিবীতে যখন অধর্মের প্রাদুর্ভাবে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠে, তখন শান্তি প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ ধর্ম সংস্থাপনের জন্য ভক্তের আকুল প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে ভক্তকূলকে রক্ষা করতে ভগবান ‘অবতার’ রূপে আগমন করেন। তখন তিনি ষড়গুণ (ঐশ্বর্য, বীর্য, তেজ, জ্ঞান, শ্রী ও বৈরাগ্য) নিয়ে অবতার রূপে প্রকাশিত হন। সনাতন ধর্মের দশ অবতারের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণ অষ্টম অবতার। শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান। তিনি তার জন্ম নিয়ে নিজেই বলেছেন, ‌‌‌'আমার জন্ম-মৃত্যু সাধারণ মানুষের মতো নয়। মানুষ জন্মগ্রহণ করে এবং মারা যায়। আমি জন্মরহিত হয়েও আবির্ভূত হই এবং অবিনশ্বর হয়েও অন্তর্ধান করে থাকি। আবির্ভূত হওয়া ও অন্তর্হিত হওয়া—দুটিই আমার অলৌকিক লীলা।’

গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন, ‘যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত। অভ্যুত্থানম ধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্। পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুস্কৃতাম্। ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।’ শ্রীকৃষ্ণ কংসের কারাগারে যখন আবির্ভূত হয়েছিলেন, তখন কংসের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল পুরো পৃথিবী। তখন অত্যাচারী কংসকে পরাজিত করে পৃথিবীকে পাপমুক্ত করে  শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাবের উদ্দেশ্য।

জন্মাষ্টমীর দিনটিতে শ্রীকৃষ্ণের পূজা, মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জলন, গীতাযজ্ঞ, নামসংকীতন, প্রার্থনা সভা, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃত্ব ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে সমাপ্তি হয়।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কৃপায় সমাজে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে—— শুভ পূর্ণ তিথিতে এটাই হোক প্রার্থনা। 

এসি/ আই.কে.জে/

জন্মাষ্টমী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ

খবরটি শেয়ার করুন