ছবি: সংগৃহীত
দারিদ্র্যকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে টাঙ্গাইলের পান চাষী জহুরুল ইসলামের। জেলায় পান চাষির উদাহরণ এখন তিনি। জহুরুল নাগরপুর উপজেলার মামুদ নগর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত সরব আলীর ছেলে।
অন্যের টেইলারিং (দর্জি) দোকানে কাজ করে অভাব-অনটনের মাঝে সংসার চলত তার। রাজশাহীর এক বন্ধুর পরামর্শে সেখান থেকে প্রথম ৫ হাজার মিষ্টি জাতের পানের চারা এনে বাড়ির পাশে ২৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে পান রোপণ করেন। পান চাষ করে প্রথম বছরেই সে সুখের মুখ দেখেন।
এলাকাবাসী মো. হামিদ খান বলেন, ‘জহুরুল অনেক কষ্ট করে রাজশাহীর মিষ্টি পানের একটি বরজ তৈরি করেছে। আমরা তার এখান থেকে পান কিনে খাই। পানের স্বাদ রাজশাহীর পানের মতোই। এলাকায় যদি জহুরুলের মতো আরও উদ্যোক্তা তৈরি হয়, তাহলে জেলার পানের চাহিদা অনেকটা পূরণ হবে।’
মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘২০২১ সাল থেকে আমি পান চাষ করছি। নাগরপুর উপজেলায় আমিই প্রথম রাজশাহীর মিষ্টি পানের চাষ শুরু করি। পানের বরজ তৈরি করতে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়। কোনো সমস্যা হলে রাজশাহীর চাষিদের পরামর্শ নিই। পান চাষে এ পর্যন্ত ২ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লাভের পরিমাণ বাড়বে।’
আরও পড়ুন: বর্গা নেওয়া জমিতে নার্সারি করে সফল উদ্যোক্তা সোহাগ মজুমদার
তিনি বলেন, ‘আমি এই বাগানের পান স্থানীয় হাট-বাজারে পাইকারি বিক্রি করি। মাঝে মাঝে বিক্রির জন্য রাজশাহীতেও পাঠাই। এ বছর ঝড় ও টানা বৃষ্টিতে বরজের প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু পান গাছ মারা গেছে। পোকার উপদ্রব ঠেকাতে ওষুধ ছিটানো ছাড়া অতিরিক্ত কোনো খরচ নেই বলে পান চাষ লাভজনক।’
জহুরুল আরও বলেন, ‘আমার পান চাষে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক পরিদর্শনের পাশাপাশি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে। আমার কাছে কেউ যদি পান চাষের বিষয়ে সহযোগিতা চান, তাহলে সহযোগিতা করবো। সরকার যদি সহযোগিতা করে, তাহলে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব।’
নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন বলেন, ‘পান চাষের উপযোগী এলাকা নাগরপুর। যার দৃষ্টান্ত উপজেলার মামুদ নগরের জহুরুল ইসলাম। আমরা সার্বক্ষণিক পরিদর্শনের পাশাপাশি কারিগরি পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া উপজেলায় পান চাষের উদ্যোক্তা তৈরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এসি/ আই.কে.জে