মঙ্গলবার, ২০শে মে ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-পাকিস্তান সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ যে কারণে ভূমিকা রাখতে পারছে না

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৭ পূর্বাহ্ন, ২৯শে এপ্রিল ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ইস্যুতে দেশ দু'টি পরস্পরকে দোষারোপের পাশাপাশি পাল্টাপাল্টি বেশকিছু শক্ত পদক্ষেপও নিয়েছে। উভয় দেশের শীর্ষ নেতার মনোভাবে এখনো সমাধান বা উত্তেজনা অবসানের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে—এ বিষয়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের করণীয় কী? ভারত-পাকিস্তান সমস্যার সমাধানে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ যে ভূমিকা রাখতে পারত, তা সে রাখতে পারবে কী? 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের পক্ষে বাংলাদেশ। দু'টি বন্ধুপ্রতিম দেশ চাইলে বাংলাদেশ মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে এর আগে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক ও অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ সুখবর ডটকমকে বলেন, 'ভারত-পাকিস্তান সমস্যার সমাধানে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ যে ভূমিকা রাখতে পারত, তা সে রাখতে পারছে না। কারণ, দেশে যারাই ক্ষমতায় যায়, হয় তারা কিছুটা ভারতমুখী হয়ে পড়ে অথবা পাকিস্তানের দিকে হেলে পড়ে। তারা যদি শুধু বাংলাদেশপন্থীই হতো, তবে হয়তো দুই দেশের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে পারত।'

তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের রাজনীতিকরা ক্ষমতায় থাকার জন্য একদিকে ঝুঁকে পড়েন; তারা সেই নিরপেক্ষতা কিংবা ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন না। এ কারণে আমাদের সেই পেশাদারিত্ব তৈরি হয় না। কাশ্মীরের ঘটনায় আমরা ‘নন-স্টেট অ্যাক্টর’ দেখছি। পুরো দক্ষিণ এশিয়ায়ই নন-স্টেট অ্যাক্টরের সমালোচনা রয়েছে। সেই জায়গায় আলোচনা হতে পারে। 

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ক গবেষক আলতাফ পারভেজ মনে করেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই দেশের চলমান উত্তেজনা ঘিরে এ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা উচিত। বাংলাদেশের উচিত, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোকে বলা যে, ভারত-পাকিস্তানের উচিত কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান করা কিংবা ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির উচিত এখানে মধ্যস্থতা করা। কারণ, এ উত্তেজনা পুরো অঞ্চলের জন্যই ক্ষতিকর।'

তিনি বলেন, 'এখন বাংলাদেশের উচিত ওআইসিসহ অন্যান্য ফোরামগুলোকে বলা যে, কাশ্মীর ইস্যুটা স্থায়ীভাবে সমাধান করা উচিত। তাহলে এ অঞ্চলে উত্তেজনার উৎসটা বন্ধ হবে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাটা রাখতে হবে, শুধু দর্শক হয়ে থাকলে হবে না। আন্তর্জাতিক পরিসরে সক্রিয়ভাবে ভয়েস রেইজ করতে হবে। আমি বলব, আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের উচিত ভাবমূর্তিটা এমনভাবে তৈরি করা যে, ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের মধ্যে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হওয়ার শঙ্কা তৈরি করছে।'

এ ইস্যুতে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর মনোভাব নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, 'এ উত্তেজনায় বিশ্বের সুপার পাওয়ার দেশগুলো নীরব দর্শক হয়ে আছে। শীতল যুদ্ধটা যেন এশিয়ার দিকে চলে আসছে।'

এইচ.এস/

কাশ্মীর

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন