ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনকে নিতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক। এ লক্ষ্যে তুরস্কের পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস হয়েছে। টানা চার ঘণ্টার বিতর্কের পর জোটটিতে সুইডেনকে নিতে রাজি হন তুর্কি আইনপ্রণেতারা।
আর এর ফলে সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার পথে আরেকটা বাধা দূর হলো। বুধবার (২৪শে জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার ঘণ্টার বেশি বিতর্কের পর তুরস্কের পার্লামেন্ট সুইডেনের ন্যাটো সদস্য পদের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। তুর্কি আইনপ্রণেতারা মঙ্গলবার (২৩শে জানুয়ারি) ২৮৭-৫৫ ভোটে সুইডেনের ন্যাটোতে প্রবেশাধিকার প্রোটোকল অনুমোদন করেন।
আশা করা হচ্ছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করবেন। এরপর সুইডেনের সদস্যপদের বিষয়টি হাঙ্গেরি যদি অনুমোদন করে দেয়, তাহলে দেশটি ন্যাটোর সদস্য হতে পারবে।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আগে সুইডেনের সদস্য হওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সেসময় তিনি বলেছিলেন, তিনি এই প্রস্তাব অনুমোদন করবেন না। পরে অবশ্য সেই সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরে এসেছেন। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে সুইডেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার অনুমোদনও দিতে চলেছেন তুর্কি এই প্রেসিডেন্ট।
এদিকে তুরস্কের পার্লামেন্টে ২৮৭-৫৫ ভোটে প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার পর সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টারসন জানিয়েছেন, এটা খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমরা ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আরও কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম।’
এছাড়া সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রমও তুরস্কের পার্লামেন্টের এই অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিলস্ট্রম এক লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এখন অনুমোদনের নথিতে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের স্বাক্ষর করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
আরো পড়ুন: যে কারণে গোল্ডেন ভিসা বাতিল করল অস্ট্রেলিয়া
ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গও তুরস্কের পার্লামেন্টের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি এখন হাঙ্গেরির দিকে তাকিয়ে আছেন। তারাও দ্রুত সুইডেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জার্মানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তুরস্কের পার্লামেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। দেশটির সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, ফিনল্যান্ডের মতো সুইডেনও ন্যাটোর সদস্য হলে এই জোট আরও শক্তিশালী হবে। সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে বাকি প্রক্রিয়াও দ্রুত শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জার্মানি।
’উল্লেখ্য, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ২০২২ সালে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করে। মূলত রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর দেশ দুটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত বছরের এপ্রিলে ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দেয়।
কিন্তু তুরস্ক ও হাঙ্গেরি অনুমোদন দিতে দেরি করায় সুইডেন এখনও পর্যন্ত ন্যাটোর সদস্য হতে পারেনি। ন্যাটোর নিয়ম হলো, সব সদস্য দেশ অনুমোদন না দিলে নতুন কোনও দেশ এই জোটের সদস্য হতে পারে না। মঙ্গলবার তুরস্কের পার্লামেন্ট প্রস্তাব অনুমোদন করায় সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার পথে আরেকটা বাধা দূর হলো। আর এবার হাঙ্গেরির অনুমোদন নিয়ে সুইডেন সামরিক এই জোটের সদস্য হলে ন্যাটো রাশিয়ার উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।
সূত্র: আল জাজিরা
এইচআ/ আই.কে.জে