ছবি: সংগৃহীত
চুরি ও হত্যার উদ্দেশ্যে মরধর করার অভিযোগের মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি। গত ২৫শে জুন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারাহ দিবা ছন্দা শুনানি শেষে দুই হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
সোমবার (জুলাই) গুলশান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলায় মির্জা আবুল বাশার নামে আরেকজনকে আসামি করা হয়েছে। গত ২৩শে জুন গুলশান থানায় এ মামলা করেন ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা।
মামলায় অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাকিব উদ্দোজা ওয়াই এন সেন্টার এজিএম পদে প্রায় ২ মাস ধরে কর্মরত আছেন। ওই ভবনের ৭ম তলায় ভুবান নামীয় রেস্টুরেন্টটি আবুল বাশার ও ববি প্রায় ২ মাস ধরে জোর করে দখল করার চেষ্টা করছে। রেস্টুরেন্টের মালিক তাদের বারবার রেস্টুরেন্ট ছেড়ে দিতে বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। পরে মালিক গত ২৩শে জুন সেখানে নতুন তালা লাগিয়ে দেন। সেদিন দুপুর ১টার দিকে অনুমান ভবনের মেইন গেইট আটকানো ছিল এবং পকেট গেইটে সিকিউরিটি বসা ছিল। সিকিউরিটি গার্ড গেইট খুলে দেওয়ার আগেই আবুল বাসার গাড়ি দিয়ে মেইন গেইট ভেঙ্গে প্রবেশ করেন। এতে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
আরো পড়ুন: আলিয়াকে রেখে কাকে নিয়ে সমুদ্র সৈকতে মেতেছেন রণবীর!
এ সময় সাকিবের অফিস কলিগ বাধা দিলে আবুল বাশার তাকেও গাড়ি দিয়ে চাপা দিতে যায়। তখন তিনি সরে গেলে গাড়ি থেকে নেমে তাকে মারধর করেন আবুল বাশার। সাকিব বাধা দিলে নায়িকা ববি ও আবুল বাশার তার ওপর উত্তোজিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করে। তার পকেটে থাকা এক লাখ টাকা নিয়ে নেয়।
জানা গেছে, ববি ও মির্জা আবুল বাসার যৌথভাবে গুলশানের ওয়াই এন সেন্টারে একটি রেস্টুরেন্ট ক্রয় করেন। ঐ রেস্টুরেন্টটি নায়িকা তার নামে নামকরণ করেন ‘ববস্টার’। এই রেস্টুরেন্টের আগের মালিককে ৫৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল ববি ও বাশারের। প্রথমে ১৫ লাখ পরে ১০ লাখ টাকার চেক দিলেও দুটি চেকই বাউন্স করে। বারবার প্রথম পক্ষের মালিক টাকার জন্য তাগাদা দিলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাঁধে। প্রথম পক্ষ টাকা চাইলে ববি ও তার পার্টনার আবুল বাসার তাদেরকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল।
এদিকে, এ ঘটনায় ববি ও বাশারও পাল্টা মামলা করেছেন। ববির পক্ষ হয়ে মো. আব্বাস মামলা করেন। ভবনের মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, তার সন্তান জাওয়ান আল মামুনসহ ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের নামে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। ৫৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করা হয়েছে। একটি ঘড়ি চুরি হয়েছে, যার দাম চার লাখ টাকা। এ ছাড়া নগদ ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণের চেইন ও একটি আইফোন চুরি হয়েছে। যা উদ্ধার হয় নাই।
এ ঘটনা নিয়ে ববির অপারেশন পার্টনার (সহযোগী) আবুল বাশার বলেন, রেস্তোরাঁ করার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হই। মূলত এটা ববির রেস্তোরাঁ হওয়ার কথা ছিল। আমি ছিলাম অপারেশন পার্টনার। ববির পক্ষ থেকে কাজ করতাম। মে মাসের ভাড়াও দিয়েছি। আমাদের ইনভেস্টমেন্ট ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার মতো হয়ে গেছে। এখন বিষয়টা দেখেন, যখন ববি কোনো রেস্টুরেন্ট করবে, সেটার কাগজপত্র নিয়ে অনেকের আগ্রহ থাকবে। সেই কারণেই আমরা মালিকপক্ষের কাছে পরে ভবনের বৈধতার কাগজ চাই। দিব দিব করে তারা ঢিলেমি করেন। এখান থেকেই ঝামেলা শুরু হয়।
মারধরের ভিডিও রয়েছে উল্লেখ করে বাশার বলেন, অনেক বলার পরও বৈধ কাগজ দেন নাই। পরে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। তা ছাড়া ফায়ার এক্সিট নাই। এটা–সেটা নিয়ে ঝামেলা করেন। একদিন গিয়ে দেখি, আমাদের জিনিসপত্র সব বাইরে ফেলে রেখেছেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো আমাকে মেরে তারা নাটক সাজান। আমার কাছে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে।
এসি/