শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী সিদ্ধিরগঞ্জের মিনজার

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, ১৬ই এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি উত্তরপাড়ায় বসবাস করেন মিনজার হোসেন। সেখানে ৮ শতাংশ জমিতে লাউ চাষ করেছেন তিনি। ক্ষেতের মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে লাউ। রোদ উপেক্ষা করে মিনজার তার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

মিনজার হোসেন লাউ চাষ করে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এবার লাউয়ের ভালো ফলন হওয়ায় ভীষণ খুশি তিনি।

মিনজার হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে লাউ চাষ করি। মাচাসহ এ ক্ষেত তৈরি করতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবার কয়েকগুণ বেশি ফলন হয়েছে। ফলে গত ৫-৬ বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি লাভ হচ্ছে। আর কোনো কাজ না থাকায় একাই ক্ষেতের কাজ করি। পাশাপাশি অবসর সময়ে ছেলে আমাকে সহযোগিতা করে। বেশি কাজ পড়লে অতিরিক্ত লোক নিতে হয়। শুরু থেকেই পরিবার ভালো সমর্থন দিয়ে আসছে।’

তিনি বলেন, ক্রেতারা এসেই নিজেদের পছন্দমতো লাউ কিনে নিয়ে যান। এবার ক্ষেতে ৭০০-৮০০ পিস লাউ হয়েছে। একেকটা লাউ আকারভেদে ৫০-২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। লাউ শাক বিক্রি করেও ভালো আয় হয়।’

মিনজার বলেন, ‘জমিটা আমার বাবার। জমিতে দোকান করলে হয়তো বেশি আয় করতে পারতাম। তবে কৃষির বিষয়টা আলাদা। লাউয়ের পাশাপাশি শাক বিক্রি করে যা উপার্জন হয়, তাতে চলতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না। বর্তমানে চাষাবাদের জন্য মাটি পাওয়া কঠিন। আমার আগে থেকেই মাটি সংগ্রহ করা ছিল। এতে শুধু গোবর মিশিয়ে কৃষিকাজের উপযোগী করে তোলা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার পরবর্তী প্রজন্ম হয়তো এখানে বাড়িঘর করে ফেলবে। কিন্তু আমি যতদিন বেঁচে আছি; ততদিন এখানে কৃষিকাজই করে যাবো। অনেক কষ্টের পর যখন ফলন পাই; তখন খুব আনন্দ পাই। অন্য কোনো কাজে কখনোই তা পাবো না।’

আরো পড়ুন: খিরা চাষে ঝুঁকছেন সোনাগাজীর কৃষকরা, খরচের চেয়ে লাভ অনেক বেশি

ছেলে সামিউল আলম বলেন, ‘বাবার সঙ্গে কাজ করে খুব ভালো লাগে। ভালো ফলন হলে তিনি খুব আনন্দিত হোন। তার এ আনন্দ দেখলে আমার আনন্দও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ছোটবেলা থেকেই কৃষিকাজের প্রতি আমার প্রবল আগ্রহ ছিল। আমার দাদা এখানে চাষাবাদ করতেন। পড়াশোনার ফাঁকে আব্বুকে সময় দিই। বাবার সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্ববোধ করি।’

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা হাসনাত বলেন, ‘সিদ্ধিরগঞ্জে দিন দিন কৃষিজমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তবে এখনো অনেকেই শখের বসে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। শাক-সবজিতে প্রচুর ভিটামিন আছে। কীভাবে রোগবালাইমুক্ত শাক-সবজি উৎপাদন ও বেশি ফলন পাওয়া যায়, এসব পরামর্শ দিয়ে থাকি। সরকার কৃষকদের জন্য কোনো প্রণোদনা দিলে আমরা তা কৃষকদের মাঝে সুষমভাবে বণ্টন করে থাকি।’

এসি/ আই. কে. জে/ 

স্বাবলম্বী লাউ চাষ

খবরটি শেয়ার করুন