ছবি: সংগৃহীত
থাইল্যান্ডে এইডস ও এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি নিরাময়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাকারী ও বিতর্কিত এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে অনুদান আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৭শে আগস্ট) বিবিসি জানিয়েছে, ৬৫ বছর বয়সী ভিক্ষু লুয়াং ফোর অ্যালংকটকে গতকাল মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের কেন্দ্রীয় প্রদেশ লপবুরিতে অবস্থিত তার নিজস্ব মন্দির থেকে আটক করে পুলিশ।
তবে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ফ্রাবাতনাম্পু মন্দিরের প্রধান ভিক্ষু বা আবোট ছিলেন অ্যালংকট ওয়াত। ১৯৯২ সালে তিনি সেখানে এইচআইভি ও এইডস আক্রান্তদের জন্য একটি নিরাময়কেন্দ্র চালু করেন এবং এই মানবিক উদ্যোগের কারণে তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান।
এই কেন্দ্রে অন্যান্য রোগীকেও আশ্রয় দেওয়া হয়, পাশাপাশি রোগীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়।
অ্যালংকট ওয়াত ছাড়াও সেক্সান সাপসুবসাকুল নামের এক সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ওই ইনফ্লুয়েন্সার মন্দিরের জন্য অর্থ সংগ্রহে সহযোগিতা করেছিলেন।
প্রথমে সাপসুবসাকুল বিরুদ্ধেই অনুদান অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। পরে এটি নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, স্বয়ং অ্যালংকটও এই দুর্নীতিতে জড়িত।
গত সপ্তাহে অনুদান কেলেঙ্কারির খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর ভিক্ষুর পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন অ্যালংকট। থাইল্যান্ডের সেন্ট্রাল ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর উপ-কমিশনার জারুনকিয়াত পানকায়েভ জানিয়েছেন, অ্যালংকট পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন এবং বিনা চাপে ভিক্ষুত্ব ত্যাগ করতে রাজি হয়েছেন।
থাইল্যান্ডের নিয়ম অনুযায়ী, অভিযুক্ত হওয়ার আগে ভিক্ষুদের ভিক্ষুত্ব ত্যাগ করতে হয়।
থাইল্যান্ডে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা অত্যন্ত সম্মানিত। কারণ দেশটির ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক ভিক্ষুকে আইন ও ধর্মীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে দেখা গেছে।
বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে ব্রহ্মচর্যের শপথ ভঙ্গ, মাদক পাচার ও অর্থ কেলেঙ্কারির মতো ঘটনায় ভিক্ষুদের জড়িত থাকার তথ্য সংবাদমাধ্যমে প্রায় সময়ই এসেছে।
গত জুলাই মাসে এক নারীর সঙ্গে অন্তত ৯ জন ভিক্ষুর সম্পর্কের ও কয়েকজনের সমকামিতার প্রমাণ পাওয়ার পর পুলিশ একটি হটলাইন চালু করেছিল।
এর উদ্দেশ্য ছিল, যাতে মানুষ অশোভন আচরণকারী ভিক্ষুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে পারে। ২০১৭ সালে এক ভিক্ষু যৌন অপরাধ, জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আন্তর্জাতিকভাবে শিরোনাম হয়েছিলেন।
খবরটি শেয়ার করুন