ছবি : সংগৃহীত
অনেকের বসে থাকলেই পা নাচানোর স্বভাব থাকে। কাজের ফাঁকে, গাড়িতে বসে থাকলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাজটি করেন তারা। আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ মনে হলেও কেউ কেউ এই অভ্যাসকে অভদ্রতা মনে করেন।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন পা নাচানোর অভ্যাসই একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতে, অযথা পা নাচানো সহজাত কোনো স্বভাব নয়। এর পেছনে নার্ভ সিস্টেমের সমস্যা দায়ী হতে পারে। এমনকী এই বদভ্যাসের কারণে হরমোনের কার্যকারিতাও বিগড়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
যা বলছে সমীক্ষা
রিসার্চ অনুযায়ী, পা নাচানোর স্বভাবের সঙ্গে নার্ভ সিস্টেমের সংযোগ রয়েছে। নার্ভ সিস্টেমের এই অসুখে আক্রান্ত রোগীর পা নাচানোর সময় শরীরে ডোপামাইন অর্থাৎ হ্যাপি হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে। আর তাই পা নাচালে ওই ব্যক্তির মনে খুশির হাওয়া বয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পা নাচাতে ভালো লাগলেও এটি একধরনের ডিসঅর্ডার। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যার নাম নিউরো সেনসরি ডিসঅর্ডার। এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের সন্ধ্যা আর রাতে পা নাচানোর ইচ্ছা বাড়ে। এসময় শুয়ে বসে থাকলেও তারা অসচেতনভাবেই পা নাড়াতে শুরু করেন আক্রান্ত ব্যক্তি। বয়স যত বাড়ে, এই প্রবণতা তত বাড়ে।
আরো পড়ুন : ভালোবাসার দিনে প্রিয় মানুষটিকে পাঠাতে পারেন সুন্দর একটি মেসেজ
পা নাচানোর ইচ্ছা জাগে কেন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘসময় এক জায়গায় বসে থাকতে পারেন না। তাদের অদ্ভুত অস্বস্তি হয়। এজন্য অফিসে, বাড়িতে, গাড়িতে পা ঝুলিয়ে একটানা বসলেই তাদের মনে পা নাচানোর ইচ্ছা জাগে। রাত বাড়লেই এই ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একধরনের ছটফটানি শুরু হয়। আর অস্বস্তি কাটানোর জন্যই এরা পা নাড়াতে থাকে। এমনকি অনেকসময় ঘুমের ভেতর থেকেও এনারা পা নাচান।
সমাধানের উপায় কী?
এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়ও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের পরামর্শ, পা নাচানোর ইচ্ছে হলেই উঠে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ হেঁটে নিন। কিংবা পা মুড়ে বসেন। তাহলেই এই প্রবণতা কমে যাবে। পাশাপাশি এই সমস্যা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত ঘুমেরও প্রয়োজন।
পা নাচানোর সমস্যা থেকে বাঁচতে নিয়মিত ইয়োগা করুন। এতেও উপকার মিলবে। তবে কিছুতেই যদি এই অভ্যাস থেকে মুক্তি না মিললে অবশ্যই চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন।
চিকিৎসকদের মতে, শুধু নার্ভের অসুখ নয়, এর পাশাপাশি এই সমস্যাটি অ্যানিমিয়া, ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত হতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
এস/ আই.কে.জে
খবরটি শেয়ার করুন