ছবি: সংগৃহীত
দিন দুয়েক আগে গুজরাটের মেহসানা এলাকায় এক ব্যক্তির শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঠিক সেই সময়েই সেখানে হাজির হন ওই 'প্রয়াত' ব্যক্তি। তবে আত্মা রূপে তার এই আবির্ভাব ঘটেনি, বরং তিনি সেখানে পৌঁছন সশরীরেই! অর্থাৎ জীবিত অবস্থায়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ৪৩ বছরের বৃজেশ সুতহার গুজরাতের নরোদা এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের দাবি, গত ২৭শে অক্টোবর নিজের বাড়ি থেকেই আচমকা উধাও হয়ে যান তিনি! এরপর তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। তাই শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন তারা। বৃজেশের নামে একটি নিখোঁজ ডায়ারিও করেন।
বৃজেশের নিরুদ্দেশ হওয়ার প্রায় দু'সপ্তাহ পর পুলিশের কাছ থেকে খবর আসে, নিকটবর্তী সবরমতী সেতুর কাছে একটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। সেই দেহ বৃজেশের হলেও হতে পারে। দেহ চিহ্নিত করার জন্য বৃজেশের পরিবারের সদস্যদের ডেকে পাঠায় পুলিশ।
কিন্তু পরিবারের সদস্যদের পক্ষে সেই দেহ শনাক্ত করা সহজ ছিল না। কারণ সেটি একেবারে পচে গিয়েছিল! কিন্তু সেই দেহের গড়নের সঙ্গে বৃজেশের দৈহিক গড়নের মিল ছিল। তাই পরিবারের সদস্যরা ধরে নেন, সেটি তারই দেহ!
এরপর নিয়ম মেনেই সেই দেহটি দাহ করা হয়। তবে বিপত্তি ঘটে তখন, যখন শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন সেখানে এসে হাজির হন স্বয়ং বৃজেশ! প্রথমে ভয় পেয়ে গেলেও পরে তার পরিবারের সদস্যরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন এবং সকলেই এই ঘটনায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
পরবর্তীতে জানা যায়, মধ্যবয়সী বৃজেশ বেশ কিছু দিন ধরেই হতাশায় ভুগছিলেন। তার প্রধান কারণ ছিল, আর্থিক অনটন। বেশ কিছু জায়গায় অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার কোনো সুফল পাচ্ছিলেন না। তা নিয়েই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি।
আরও পড়ুন: বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার নিষিদ্ধ করলো সৌদি আরব
এই ঘটনায় একইসঙ্গে শোকে এবং আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়েন বৃজেশের বৃদ্ধা মা। তিনি বলেন, 'আমরা সব জায়গায় ওকে খুঁজেছি। ওর ফোনও অফ ছিল। তারপর পুলিশ আমাদের একটা দেহ দেখাল। সেটা পচে গিয়েছিল। আমরা ঠিক মতো চিনতে পারিনি। শ্রাদ্ধ-শান্তিও করে ফেলেছি।'
বৃজেশের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, আর্থিক কারণেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন। খুব সম্ভবত সেই কারণেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।
কিন্তু এই ঘটনার জেরে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন পড়েছে বিপাকে। তাদের কাছে এখন প্রধান প্রশ্ন হলো, বৃজেশ ভেবে যে মৃতদেহটির দাহকার্য সম্পন্ন করে ফেলা হল, সেটি তাহলে কার ছিল।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
এসি/ আইকেজে