ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পরিচালিত এক জরিপের তথ্য বলছে, ৮০ শতাংশ নাগরিক মনে করেন, ‘দেশের জনপ্রশাসন ব্যবস্থা জনবান্ধব নয়’। ৬৬ শতাংশের বেশি নাগরিক মনে করেন, সরকারি কর্মচারীরা (আইন অনুযায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই কর্মচারী) নাগরিকদের সঙ্গে ‘শাসকের মতো আচরণ’ করেন।
জরিপে অংশ নেওয়া ৩১ শতাংশের মতে, কর্মচারীরা ‘অসৌজন্যমূলক আচরণ’ করেন। আর ৫২ শতাংশের মতে, ‘ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়া যায় না’ এবং ৪৬ শতাংশের মতে, তারা সেবা চাইতে গিয়ে ‘হেনস্তার শিকার’ হন। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনে জরিপের এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
শনিবার (৮ই ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে জনপ্রশাসন সংস্কারসহ ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে বুধবার (৫ই ফেব্রুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেন কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন জনপ্রশাসন ও শাসনকাঠামোয় বড় রকমের পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার–সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে নাগরিকদের মতামত নিতে অনলাইনে এক জরিপ পরিচালনা করেন তারা। ১ লাখ ৫ হাজার নাগরিক বিভিন্ন প্রশ্ন সম্পর্কে তাদের মতামত দেন। নির্ধারিত প্রশ্নের বাইরে উন্মুক্তভাবে মতামত দেওয়ারও সুযোগ রাখা হয়।
জরিপের তথ্য বলছে, ৮৪ শতাংশের বেশি নাগরিক মনে করেন, দেশের জনপ্রশাসনে সংস্কার প্রয়োজন। প্রায় ৬৯ শতাংশ নাগরিকের ধারণা, বিগত ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে ‘নিরপেক্ষতার অভাব’ ছিল। ৫৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন, জনপ্রশাসনকে জনবান্ধব করার পথে ‘প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’। ৪২ শতাংশের মতে, দুর্নীতিই হচ্ছে প্রধান বাধা।
জরিপে অংশ নেওয়া ৫২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রধান কাজ জবাবদিহি নিশ্চিত করা। আর ৩৬ শতাংশের মতে, দুর্নীতি দূর করতে পারা হচ্ছে আসল কাজ। আর ৯৬ শতাংশ নাগরিকের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, জনপ্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব রয়েছে।
হা.শা./কেবি