ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার (১৪ই জুন) সকালে টেলিফোনে কথা বলেন। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ৫০ মিনিটের এ আলোচনায় ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানান, পুতিন এ আলোচনায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানকে ‘নিন্দনীয়’ বলে আখ্যা দেন এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে বলে সতর্ক করেন। খবর ব্লুমবার্গ ও রয়টার্সের।
তবে উল্লেখযোগ্যভাবে রাশিয়া আমেরিকার বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো সমালোচনা করেনি, যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন যে তার প্রশাসন ইসরায়েলের পরিকল্পিত হামলার ব্যাপারে জানত।
রুশ পক্ষ জানায়, আলোচনায় পুতিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং আমেরিকান ফ্ল্যাগ ডে উপলক্ষে শুভকামনা জানান। দুই নেতা তাদের ‘ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ’ প্রকাশ করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে ক্রেমলিন ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং আমেরিকার রাজনীতিতে তার প্রভাব বিবেচনায় রাশিয়া ভবিষ্যতের সম্ভাবনার প্রতি নজর রাখছে।
হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন আমাকে খুব ভদ্রভাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান, তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল ইরান প্রসঙ্গে আলোচনা। আমরা দীর্ঘ সময় ধরে কথা বলেছি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তিনি যেমন মনে করেন, আমিও মনে করি—ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত। আমি তাকে বলেছি, তার যুদ্ধটিও শেষ হওয়া দরকার।’
এ মন্তব্যকে অনেকে দেখছেন এক ধরনের সমান্তরাল বার্তা হিসেবে—যেখানে ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে কথা বললেও রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের প্রতি চাপ প্রয়োগের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
রাশিয়া বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় নিজেদের তুলে ধরতে চাচ্ছে। একদিকে ইরানকে সমর্থন জানিয়ে তারা মুসলিম বিশ্বে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে, অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ধরে রেখে ইউক্রেন ইস্যুতে সম্ভাব্য চাপ থেকে মুক্ত থাকতে চায়।
ইসরায়েল ইরানে ধারাবাহিকভাবে বিমান হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্র, সামরিক ঘাঁটি এবং দক্ষিণ পারস্য গ্যাসক্ষেত্র। ইরান পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি করছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন