শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার মঞ্চে আবারও ‘সিদ্ধার্থ’, ৫ দিনে ৭টি শো

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১৯ অপরাহ্ন, ২৫শে জানুয়ারী ২০২৪

#

নাট্যদল আরশিনগর-এর চতুর্থ প্রযোজনা ‘সিদ্ধার্থ’। নোবেলজয়ী বিখ্যাত সাহিত্যিক হেরমান হেসের লেখা উপন্যাসটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক ও নির্দেশক রেজা আরিফ। গত বছর আগস্টে মঞ্চে আসে নাটকটি। টানা তিন দিনে চারটি প্রদর্শনী হয়েছিল তখন। উপন্যাসের মতো নাটকটিও দর্শকদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। সবকটি শো-ই হাউজফুল ছিল। এমনকি টিকিট না পেয়ে সেবার ফিরে যেতে হয়েছে অনেক দর্শককে। 

নন্দিত এই নাটকটি আবারও মঞ্চে আলো ছড়াতে আসছে। এবার আরশিনগর টানা পাঁচ দিনে সাতটি প্রদর্শনী করবে। ২৬ থেকে ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে সিদ্ধার্থ। প্রথম দুইদিন ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৭টায় অনুষ্ঠিত হবে দুটি করে প্রদর্শনী এবং ২৮, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় থাকবে নাটকটির একটি করে শো।

গৌতম বুদ্ধের আরেক নাম সিদ্ধার্থ হলেও হেরমান হেসের সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ নয়। নির্দেশক রেজা আরিফ বলেন, “গৌতম বুদ্ধের ঔজ্জ্বল্যে আড়াল হয়ে পড়া গৌতমের ব্যক্তিগত মনোজগতের রঙে সিদ্ধার্থকে আঁকা হয়েছে।” 

নাটকের গল্পে দেখা যাবে, ব্রাহ্মণ কুমার সিদ্ধার্থ পিতার অমতে ঘর ছাড়ে, সন্ন্যাস গ্রহণ করে। দীর্ঘ তিন বছর সন্ন্যাসব্রতের কঠোর সাধনা, আত্ম-নিগ্রহ, উপবাস, দৈহিক নির্যাতনের পর সন্ন্যাস ত্যাগ করে। এরপর সৌভাগ্য হয় বুদ্ধের সাক্ষাৎ লাভ ও উপদেশ শোনার আশ্চর্য অভিজ্ঞতার। কিন্তু বুদ্ধের শিষ্যত্ব গ্রহণ না করে পথে বেরিয়ে পড়ে সিদ্ধার্থ। পথে দেখা হয় নগরের শ্রেষ্ঠ বারাঙ্গনার, পরিচয় হয় নতুন এক জীবনের সাথে। সে জীবনের নাম সংসার-সন্তান লাভের খেলা। দীর্ঘ কুড়ি বছর সে জীবনের নেশায় বুদ হয়ে থাকার পর সিদ্ধার্থের মনে হয় এ খেলা শেষ হয়েছে। এ খেলা একবার, দুবার, দশবার ভালো লাগে- কিন্তু বারবার এ খেলার প্রয়োজন আছে কি? মাত্রাতিরিক্ত ভুরিভোজনের পর যেমন খাদ্যের উপর আকর্ষণ চলে যায়, খাদ্য দেখলে যেমন বমিভাব হয়, সংসারের উপর সিদ্ধার্থের তেমনই বিতৃষ্ণা জাগে। সিদ্ধার্থ সে জীবন ত্যাগ করে আশ্রয় নেয় নদীর কাছে। নদীর কাছে থাকতে থাকতে সিদ্ধার্থ শেখে নদীর ভাষা। উপলব্ধি করে জীবনের বৃহত্তর মানে। জীবন ও মৃত্যু, পাপ ও পূণ্য, বোধ ও নির্বুদ্ধিতা- সবকিছুরই প্রয়োজন আছে জীবনে। এ সকল অভিজ্ঞতা জীবনকে পূর্ণ করে। এ অভিজ্ঞতার নামই জ্ঞান। যা কাউকে শেখানো যায় না; অর্জন করতে হয়। নির্দেশনা প্রসঙ্গে রেজা আরিফ বলেন- “প্রযোজনাটির চূড়ান্ত মনোযোগ জীবনোপলব্ধির প্রতি, বাহ্যিক আভরণে নয়।”

যারা ১ম বার মঞ্চে ‘সিদ্ধার্থ’ দেখেছেন, তারা নিশ্চয়ই নির্দেশকের এই বক্তব্যের সাথে একমত হবেন। নাটক শেষ করে জীবন সম্পর্কে নতুন ধারণা  আর অজস্র প্রশ্ন নিয়ে বের হবেন থিয়েটার থেকে। তবে বাহ্যিক আভরণের দিকে যে নির্দেশক একেবারেই মনযোগী নন, সে কথাও পুরোপুরি ঠিক নয়। মঞ্চে অভিনেতাদের দৃষ্টিনন্দন কোরিওগ্রাফি, কম্পোজিশন আর আলোর অপূর্ব ব্যবহার মুগ্ধতা ছড়ায় মুহুর্মুহু।

অগ্রিম টিকেটের জন্য যোগাযোগ করা যাবে— ০১৮৮৩৮৯২৬৯৮ নম্বরে।


ওআ/ আই.কে.জে/

সিদ্ধার্থ মঞ্চ নাটক আরশিনগর

খবরটি শেয়ার করুন