ছবি: সংগৃহীত
নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন শফিকুল ইসলাম রানা নামের একজন যুব কৃষি উদ্যোক্তা। তার কমলা বাগানে গাছের হলুদ কমলা প্রতিটি মানুষের দৃষ্টি কাড়ছে। ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। তার এ কমলা বাগানের কমলা যেমন মিষ্টি, সুস্বাদু এবং দেখতেও চমৎকার।
রানা'র কমলা চাষের সফলতা স্থানীয় অনেক উদ্যোক্তাকে আকৃষ্ট করেছে। রানা আজ থেকে পাঁচ বছর আগে মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নে ঈশ্বর লক্ষ্মীপুর গ্রামে তার ১০ কাঠা জমিতে ৪৫টি কমলা গাছের চারা রোপণ করেন। বাংলাদেশে সাধারণত সবুজ রঙের কমলা চাষ হলেও রানার বাগানের কমলাগুলো প্রকৃত কমলা রঙের।
ওই গ্রামের খায়বর আলীর পুত্র শফিকুল ইসলাম রানা চুয়াডাঙ্গা থেকে চারা সংগ্রহ করে তাদের নিজস্ব ১০ কাঠা জমিতে রোপণ করেন আজ থেকে পাঁচ বছর আগে। চারার মূল্য পরিচর্যা খরচ জমির তৈরি ইত্যাদি বাবদ তার মোট খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা।
গতবছর গাছগুলোতে প্রথমবারে তেমন ফল না আসলেও এ মৌসুমে দ্বিতীয় বার গাছে গাছে পর্যাপ্ত ফল এসেছে। জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে গাছে মুকুল এসেছে এবং গড়ে চার মাস পর নভেম্বর মাসে কমলাগুলো হারভেস্টিং করার মোক্ষম সময়। বর্তমানে প্রত্যেকটি গাছে কমপক্ষে ২০ কেজি করে কমলা রয়েছে। সেই হিসেবে ৪৫টি গাছ থেকে এবছর কমপক্ষে ৯০০ কেজি কমলা পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে এ বাগানের কমলা স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি শুরু হয়েছে। এসব বাজারে তারা ২০০ টাকা কেজি দরে কমলাগুলো বিক্রি করছেন। স্থানীয় গ্রামীণ বাজার ছাড়াও ক্রেতা সাধারণ সরাসরি বাগান থেকেও কমলা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তারা সেই হিসেবে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা'র কমলা বিক্রি করবেন।
কমলার বাগান পরিচর্যার কাজে সার্বক্ষণিক কাজ করেন শফিকুল ইসলাম রানার বড় ভাই আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন কমলা চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। সামান্য কিছু জৈব সার এবং সামান্য সেচ দিতে হয়।
আরও পড়ুন: প্রতিদিন দেড় কোটি টাকার শিম বিক্রি হয় যে বাজারে
প্রতিবেশী ইউনুস এবং ফরহাদ জানিয়েছেন, শফিকুল ইসলাম রানার এ বাগানের কমলাগুলো খুবই মিষ্টি এবং সুস্বাদু। বিদেশ থেকে যে কমলাগুলো আমাদের বাজারে পাওয়া যায় রানার বাগানের কমলা সেগুলো থেকে স্বাদে কোনভাবেই কম না। তারা নিয়মিত বাগানে আসেন এবং কমলার স্বাদ গ্রহণ করে থাকেন।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, মহাদেবপুরের মাটি বরেন্দ্র অঞ্চলভুক্ত। এ জমিতে কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। কমলা চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। একবার গাছ লাগালে অনেকদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এক্ষেত্রে সামান্য জৈব সার সেচ এবং নিড়ানী দিতে হয়। তারপরেও এটি লাভজনক। কমলা চাষে যদি কেউ এগিয়ে আসেন কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সব ধরনের পরামর্শ এবং সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
এসি/কেবি