ছবি: সংগৃহীত
পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক যুগ্ম সচিবের ময়ে জুবায়দা রহমান। পোশাক-আশাকে সবসময় থাকে অভিজাত্যের ছোঁয়া। এসব পরিচয়কে ছাপিয়ে তিনি একজন নারী চোর। পাঁচ তারকা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে চোখের পলকে ব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার, টাকা-পয়সা চুরি করাই ছিল তার অভ্যাস।
এভাবে গত ১২ বছরে ৮০০ মোবাইল ও ব্যাগ চুরি করেছেন। এমন কর্মকাণ্ডের জন্য পরিবার থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। তারপরও এমন কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে পারেননি। অবশেষে শেষ রক্ষা হয়নি। ঢাকা ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে নারী চিকিৎসকের মোবাইল ও ব্যাগ চুরি করে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হয়েছে জুবায়দাকে।
শুক্রবার (১৫ই মার্চ) গোয়েন্দা পুলিশ এই নারী চোরকে গ্রেফতার করে। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার থেকে চুরির নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটি।
শনিবার (১৬ই মার্চ) সকালে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, জুবায়দার বাবা পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক যুগ্ম সচিব ছিলেন। চুরি করার অভ্যাসের কারণে তার (জুবাইদা) বাবা তাকে বাসা থেকে বের করে দেন।
হারুন অর রশীদ জানান, মূলত যেসব ক্লাবে কর্মজীবী নারীরা প্রোগ্রাম করেন জুবায়দা সেগুলোতে যান। এরপর সুযোগ বুঝে ব্যাগ, টাকা ও যা যা পায় নিয়ে যান। এসব জিনিসের কিছু নিজে ব্যবহার করেন, আবার কিছু তার দ্বিতীয় স্বামীর মাধ্যমে বিক্রি করতেন।
আরও পড়ুন: কন্যা সন্তান বিক্রি করতে গিয়ে গ্রেফতার বাবা
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঢাকা ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে জুবায়দা এক নারী চিকিৎসকের ফোন চুরি করেন। এরপর সেই ফোন থেকে ক্যান্সারের রোগীকে ফোন করে কাজ করে দেওয়ার কথা বলে দ্রুত টাকা পাঠাতে বলেন। ওই রোগীর স্বজনরা বিশ্বাস করে দ্রুত টাকা পাঠান। বিষয়টি জানতে পেরে ওই চিকিৎসক পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগে জুবায়দাকে শনাক্ত করতে একজন নারী কনস্টেবলকে নিযুক্ত করা হয়। তিনি নারী ক্যান্সার রোগী সেজে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন তার কাছেও জুবায়দা টাকা চায়।
কিভাবে ১২ বছরে ৮০০ মোবাইল-ব্যাগ চুরি করেন জুবাইদা!
হারুন অর রশীদ জানান, জুবায়দা ১২ বছরে ৮শ মোবাইল ফোন ও ব্যাগ চুরি করেছেন। তার টার্গেট হলো উত্তরা ক্লাব, শেরাটন হোটেল ও ঢাকা ক্লাবসহ অভিজাত ক্লাবে চুরি করা। তবে এসব ব্যাগ ও মোবাইলের অধিকাংশই তিনি বিক্রি করেছেন। আবার পছন্দের জিনিসগুলো ব্যবহার করতেন। ফলে তার পোশাক ও ব্যবহারকৃত জিনিস দেখে হয়তো অনেকে তাকে সন্দেহ করতেন না।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জানান, জুবায়দা কোন কোন হোটেল যান এবং কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করতেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অভিজাত হোটেলের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তার কোনো সখ্যতা আছে কি না তাও তদন্ত ও যাচাই করা হবে। তাকে কারা সহায়তা করতো তাও খতিয়ে দেখা হবে।
এসকে/
খবরটি শেয়ার করুন