ছবি: সংগৃহীত
ঘরের ছাদ ও পরিত্যক্ত জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করে সাড়া ফেলেছেন আক্কাচ শাহ নামের এক কৃষক। স্বল্প জায়গায়, কম সময়ে বস্তায় আদা চাষে স্বাভাবিক চাষ পদ্ধতির চেয়ে তিনগুণ ফলন পাওয়ার আশা এই কৃষকের। মেহেরপুরের গাংনীতে বাড়ির উঠানেই আক্কাচ শাহ বস্তায় আদা চাষ করেন। উৎপাদন খরচ বাদেও কয়েক গুণ লাভ দেখে আগ্রহী হচ্ছেন অন্য চাষিরাও।
কৃষি বিভাগ বলছে, আধুনিক সময়ে বিভিন্ন পন্থায় কৃষকরা বিভিন্ন আবাদে ঝুঁকেছেন। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় মেহেরপুরে কয়েক জায়গায় বস্তায় আদা চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। আমাদের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা পিএসকেএস নানা পদক্ষেপ নিয়ে কৃষকদের সমৃদ্ধ করছে।
দৈনন্দিন পুষ্টির চাহিদা পূরণ, শারীরিক সুস্থতা এবং ওজন হ্রাসে মসলা জাতীয় ফসলের গুরুত্ব থাকায় পিএসকেএস আদা চাষের প্রকল্প বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে। কৃষকদের আদা চাষে আর্থিক সহায়তা করছে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)।
গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আক্কাচ আলী শাহের বাড়ি সংলগ্ন একটি বাঁশবাগানের চারপাশে বিভিন্ন ফলদ বৃক্ষের গাছে ভরা। এসব গাছের সঙ্গে বস্তায় আদা চাষ করেছেন তিনি। প্রথমে তিনি ২০০টি বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। গাছতলায় এই পদ্ধতিতে চাষ করে দ্বিগুণ ফলন হয়েছে। প্রতিটি বস্তায় দেড় থেকে দুই কেজি করে আদা পাওয়া যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে স্থানীয়দের কাছে প্রতি কেজি আদা বিক্রি করছেন ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায়।
কৃষক আক্কাচ আলী শাহ বলেন, চলতি বছরের জুন মাসে পলাশীপাড়া সমাজকল্যাণ সমিতি আমাকে বিনামূল্যে হাইব্রিড জাতের ৪০ কেজি আদার বীজ ও বস্তা দিয়ে সহায়তা করে। কীভাবে বস্তায় আদা চাষ করতে হবে সে পদ্ধতি হাতে-কলমে শিখে বস্তায় লাগাই। ২০০ বস্তা দিয়ে শুরু করি। বীজ সংগ্রহ, বস্তা, সারসহ মোট খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচের সব বহন করছে পিকেএসএফ। চার মাস পরে আদা বিক্রির যোগ্য হয়েছে। প্রতিটি বস্তা থেকে প্রায় দেড় কেজি থেকে দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমান বাজারদর হিসেবে যার মূল্য ১ থেকে দেড় লাখ টাকা। তবে ছায়াযুক্ত জায়গায় ফলন বেশি হয়েছে। আগামীতে ২ হাজার বস্তায় আদা চাষ করবেন এমন প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষক আক্কাচ আলী।
আরও পড়ুন: চুইঝাল চাষে খরচ কম লাভ বেশি, চাষ হচ্ছে সারা দেশে
তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, বাড়ির আশেপাশে আমার অনেক জায়গা পড়ে আছে। আক্কাচ আলীর বস্তায় আদা চাষ দেখে আমরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছি। তার কাছ থেকে বীজ নিয়ে আদা চাষ করবো।
পিএসকেএস এর কৃষি কর্মকর্তা মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘বস্তায় আদা চাষ অত্যন্ত লাভজনক। আক্কাচ শাহকে দেখে অনেক কৃষক পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমরাও তাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও উৎসাহ দিচ্ছি। আক্কাচ শাহকে মসলার উন্নত জাত প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্পে সহায়তা দেওয়া হয়। অন্য কৃষকদের মধ্যে এটি সম্প্রসারিত হলে এলাকায় মসলা উৎপাদন আরও সমৃদ্ধ হবে।’
এসি/ আই.কে.জে