ফাইল ছবি
এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দী সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্যেরা এখনো আছেন ভয় ও অনিশ্চিত পরিবেশে। তাদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনা ঠিকমতো হচ্ছে না। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর প্রায় দেড় বছর কাটলেও তারা নিজের জন্য স্বাভাবিক চলাফেরার পরিবেশকে এখনো পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত মনে করতে পারছেন না। তবে দেড় বছরে পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে বলে তারা মনে করেন। কারাগারে থাকা অন্তত পাঁচ সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যেরা এমন তথ্য সুখবর ডটকমকে জানিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৭ই অক্টোবর তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা পর্যবেক্ষণে যে কমিটি গঠন করেছিল সরকার, ১৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এর কোনো অগ্রগতি হয়নি। গত বছরের ২৭শে অক্টোবর সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়, তারা যেন হয়রানির প্রমাণসহ তথ্য জমা দেন। কমিটি ৭২টি মামলার তথ্য সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার না থাকায় তালিকাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় তদন্তের জন্য। তালিকাটি সেখানেই আটকে আছে।
কারাবন্দী সাংবাদিক, লেখক শাহরিয়ার কবিরসহ অন্যদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং তাদের নিরাপত্তা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি এ পর্যন্ত কয়েকবার আহ্বান জানায় ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নানা সংগঠন। এক বছরের বেশি সময় ধরে ‘মিথ্যা’ হত্যা মামলায় তারা কারাগারে বন্দী রয়েছেন জানিয়ে সংগঠনগুলোর দাবি, কারাগারে তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। নিয়মিত অপমানজনক আচরণ ও মানবেতর পরিবেশের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
সরকার সরাসরি মামলাগুলো দায়ের না করলেও এসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর বলেই মনে হচ্ছে। ফলে কারাবন্দী সাংবাদিকদের মাসের পর মাস ধরে জামিন হচ্ছে না। অন্য মামলাগুলোরও তদন্তে অগ্রগতি নেই। পরিবারের সদস্যেরা ও আইনজীবীদের অভিযোগ, বারবার আবেদন করা হলেও তারা জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন না। সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ‘প্রোস্টেট ক্যান্সার’, শ্যামল দত্ত ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’, শাহরিয়ার কবির বার্ধক্যজনিত এবং ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদ নানা রোগে আক্রান্ত।
তাদের স্বজনেরা বলছেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে নিহতদের ত্যাগের বিচার প্রতিষ্ঠার বদলে দায়ের হওয়া মামলাগুলো এখন রাজনৈতিক লড়াইয়ের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। অনেক মামলার বাদী চেনেন না আসামি সাংবাদিককে। বিষয়টি বিভিন্ন মামলার বাদীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে এর মধ্যে প্রমাণিত।
ঢাকায় ও সারাদেশে যেসব সাংবাদিক আত্মগোপনে আছেন মবের ভয়ে ও গ্রেপ্তার এড়াতে, বা যারা ইতিমধ্যে বিদেশে চলে গিয়ে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করছেন, তাদের মধ্যে অনেকের পরিবারের সদস্যও দেশে আতঙ্কে আছেন। তাদের অভিযোগ, অমুক সাংবাদিকের নিকট আত্মীয় হওয়ার ‘অপরাধে’ কখন মবের শিকার হন, কখন বাড়ি-ঘরে হামলা হয়, এ আতঙ্কে থাকেন তারা। অনেক সাংবাদিকের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ সদস্যেরা গত দেড় বছরের মধ্যে কয়েকবার থাকার জায়গা বদল করেছেন।
গত বছরের ৫ই আগস্টের আগে পর্যন্ত যেসব বাড়িতে তারা থাকতেন, তা ছেড়ে অন্য এলাকায় চলে গেছেন। তারা বলছেন, অমুক সাংবাদিক আমার আত্মীয়, এ পরিচয় একসময় গর্বের হলেও এখন তা তাদের কাউকে কাউকে সামাজিকভাবে কোণঠাসা করার পাশাপাশি ভয়ের পরিবেশের মধ্যে রাখে।
ধর্মীয় বিশ্বাসের নিরিখে যেসব সাংবাদিক হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান; তাদের পরিবারের সদস্যদের আতঙ্ক যেন তুলনামূলক বেশি। তাদের অভিযোগ, সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী হওয়ার পাশাপাশি এই সাংবাদিকেরা ধর্মীয় সংখ্যালঘু। জুলাই অভ্যুত্থানের পর গণমাধ্যমেও বিশেষ টার্গেটে পরিণত হন সংখ্যালঘু সাংবাদিকেরা। যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যারা জাতীয় সংবাদমাধ্যমের শীর্ষপদে ছিলেন, তাদের প্রায় সবাইকে 'পরিকল্পনা অনুযায়ী চাকরিচ্যুত' করা হয়েছে।
অনেকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। মুন্নী সাহাসহ আরো কয়েক প্রকাশ্যে লাঞ্চিত ও মবের শিকার হয়েছেন। এর পেছনে সরকার-ঘনিষ্ঠ সাম্প্রদায়িক কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীর পরিকল্পনা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ। তবে সংখ্যালঘুরা সব সরকারের আমলেই কম-বেশি নির্যাতিত। এ কারণে তারা বেশি আতঙ্কিত। কী অপরাধে ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা, সেই প্রশ্নও তুলছেন তারা।
এটিএন নিউজের সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক মুন্নী সাহা, নিউজ২৪-এর সাবেক হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ ঘোষ সৈকত, একুশে টিভির সাবেক হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, বৈশাখী টিভির সাবেক বার্তা প্রধান অশোক চৌধুরী ও ডিবিসি নিউজের সাবেক সম্পাদক প্রণব সাহার আত্মীয়-স্বজনরা এসব অভিযোগ করেন।
মব সন্ত্রাসের কারণে তারা বাসা থেকে বের হতেও ভয় পান। তাদেরসহ ভুক্তভোগী সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের দাবি, কারাবন্দীদের জামিন হোক, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুক সরকার, সাংবাদিকদের আত্মগোপনে থাকার যে রাজনৈতিক বাস্তবতা দেশে বিদ্যমান, এর অবসান ঘটুক। কেউ প্রকৃত দোষী হয়ে থাকলে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার, বা তাদের বিচার করুক সরকার।
ডেইলি স্টারের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানের তথ্য উল্লেখ করে এর সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, 'সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই ১৮ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও লজ্জাজনক বাস্তবতা হলো, অন্তত ২৯৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে—যার অনেকগুলোই হত্যার অভিযোগে—যেসব মামলায় তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তদন্তই হয়নি, কিংবা আজ অব্দি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মামলায় অভিযুক্ত সাংবাদিকদের মধ্যে প্রায় ৭৪ শতাংশ ঢাকার বাইরের।'
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানে রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের অপমান করছে বাংলাদেশের ইতিহাসে সাংবাদিকদের ওপর সবচেয়ে বড় বিচারিক হয়রানি হতে দিয়ে। আইন উপদেষ্টা বলেছেন, সরকার কাউকে মামলা করতে বাধা দিতে পারে না। যেখানে আইন অপব্যবহারের বিষয়টি স্পষ্ট, সেখানেও কি সরকার বাধা দিতে পারে না?
সুখবর ডটকমকে স্বজনেরা জানান, কারাবন্দী সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ‘প্রোস্টেট ক্যান্সারে’ আক্রান্ত, গত বছর গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়ার কয়েক মাস আগে তার অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া দৈনিক ভোরের কাগজের সাবেক সম্পাদক শ্যামল দত্ত ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ (ঘুমে সাময়িকভাবে দম বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত জটিল রোগ), ডায়াবেটিসে ভুগছেন। গত বছরের আগস্টে গ্রেপ্তার একাত্তর টিভির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদ ও একই চ্যানেলের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপা একাধিক রোগে আক্রান্ত। মায়ের মৃত্যুর পর রুপা শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন কারাগারে।
বাবা-মা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে একধরনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপার একমাত্র মেয়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের বাসার ঠিকানা প্রচারিত হওয়ার পর শাকিল-রূপার পরিবারের অনেক সদস্য ভয়ে অনেকদিন বাসা ছেড়ে অন্য স্থানে থেকেছেন৷’ এখন তারা ওই বাসায় থাকলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। কখন কী ঘটে যায়, এ আতঙ্ক তাদের পিছু ছাড়ে না। তাদের মতো অনেক সাংবাদিকের পরিবার আছে এক ধরনের ট্রমার মধ্যে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন চলাকালে ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক মন্তব্য ঘিরে আন্দোলন পরে অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেছিলেন ফারজানা রুপা ও এটিএন নিউজের সাবেক সাংবাদিক প্রভাষ আমিনের প্রশ্নে। এর জের ধরে তারা দুজন সমালোচনার শিকার এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ‘উস্কে দেওয়ার’ অভিযোগে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে অভিযুক্ত হন। গত আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে প্রভাষ আমিনের পরিবারও নিরাপত্তা সংকটের মুখোমুখি।
দুই সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যেরা জানান, রুপা ও প্রভাষের বিরুদ্ধে নানা মামলা দায়ের হওয়ায় তাদের পরিবারে স্বস্তি নেই। অজানা উদ্বেগ, আতঙ্কে দিন কাটে তাদের। একই পরিস্থিতির মুখোমুখি শ্যামল দত্তের পরিবারও। মামলা ও জন-আক্রমণ থেকে বাঁচতে ঢাকার বাইরের অনেক সাংবাদিক আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় তাদের পরিবারের সদস্যরাও বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে পড়েন। অনেকের ছেলেমেয়ের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। গত বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা দেওয়া হয়নি বেশ কয়েক সাংবাদিকের ছেলেমেয়ের।
মামলা হওয়ার পর ঢাকার দৈনিক পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল থেকে তারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। চলাফেরা করতে নানা ‘বাধা’ থাকায় ব্যবসা, চাকরি বা অন্য কাজ করতে পারছেন না। ফলে তাদের পরিবারগুলো আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এতে প্রায় ক্ষেত্রে তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন কঠিন হয়ে পড়েছে৷
গাজী টিভির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি জহির রায়হান ঢাকার দায়ের হওয়া এক মামলায় গত ১৭ই আগস্ট থেকে কারাগারে। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট উত্তরায় মিছিল চলাকালে এক বিক্ষোভকারীর দুই পায়ে গুলি করার ঘটনায় মামলাটি করা হয় গত ৭ই জুলাই। জহিরের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন বলেন, 'আমার স্বামী এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।' স্বামীকে আটকে রাখার পর থেকে তিন সন্তানকে একা বড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন শাহনাজ। তিনি বলেন, 'আমি রাতে ঘুমাতে পারছি না। সন্তানরা তাদের বাবাকে দেখতে চায়। খুব কঠিন সময় যাচ্ছে।'
মাহফুজ আনাম বলেন, ‘যেসব সাংবাদিকের নামে মামলা দায়ের হয়েছে, সেসব সাংবাদিক একটা ভয়ের মধ্যে থাকেন। তারা মব আক্রমণের (দলবদ্ধভাবে আক্রমণ) ভয়ে থাকেন। এ রকম দুই-একটা ঘটনাও ঘটেছে।’ দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গণহারে মামলা দায়ের, তাদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্যপদ স্থগিত করা ইত্যাদি প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে আমি এখন ছায়াকেও ভয় পাচ্ছি। কোনো সরকারের আমলেই সাংবাদিক হিসেবে আমি ভালো ছিলাম না।’
জানা যায়, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ২৬শে জুলাই ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ কয়েক সাংবাদিক তাকে আন্দোলন আরও কঠোর হাতে দমনে উৎসাহ দেন। অনেকে মনে করেন, তারা সাংবাদিক হিসেবে নন, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সেদিন কাজ করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের অনুসারীরা ছাত্রদের উপর গুলি চালান গত বছরের জুলাই-আগস্টে, তখন একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে, স্থানীয় দু’জন সাংবাদিক শামীম ওসমানের সঙ্গে একটি মিছিলে ছিলেন।
একজন সাংবাদিককে দুই হাতে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতেও দেখা গেছে ওই ভিডিওতে। বিভিন্ন জেলার এমন সাংবাদিক, যারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধাভোগী ছিলেন, তারাও আছেন মামলা দায়ের হওয়া ২৯৬ জনের তালিকায়। ডেইলি স্টারের বিশ্লেষণ মতে, ২৯৬ জনের তালিকায় থাকা সাংবাদিকদের প্রায় ২০ শতাংশের আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক ছিল—যাদের কেউ কেউ দলটির প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন, কেউ কেউ ছিলেন সংগঠনের পদে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে মামলা হওয়া কয়েক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের গত সরকারের আমলে আর্থিক সুবিধা নেওয়াসহ প্রায়ই একতরফা বা সরকারের পক্ষে সাংবাদিকতা করার অভিযোগ আছে।
ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান মনে করেন, এটা ঠিক যে, গত বছরের ২৩শে জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) সঙ্গে এডিটরস গিল্ডের এক বৈঠকে আন্দোলনকারীদের নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্য করেন কয়েক সাংবাদিক। এ ধরনের বক্তব্যের কিছু অংশ ধাক্কা খাওয়ার মতো ছিল। তবে এসব বক্তব্যের কোনো অংশেই দেখা যায় না যে, তারা কেউ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন বা তা সমর্থন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনার যথেষ্ট যুক্তিসংগত কারণ থাকলেও ‘রাজনৈতিক আনুগত্য কিংবা কোনো কর্তৃত্ববাদী শাসনের কট্টর সমর্থক বা প্রচারক হওয়াটাই অপরাধ নয়’।
খবরটি শেয়ার করুন