ছবি: সংগৃহীত
চীনের বেইজিংয়ের একটি কলেজকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মাসিক হওয়ায় অসুস্থতাজনিত ছুটির আবেদন করেছিলেন এক ছাত্রী। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে মাসিকের ‘প্রমাণ’ দেখাতে ট্রাউজার খোলার নির্দেশ দেয়। খবর বিবিসির।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণী বয়স্ক একজন নারীকে প্রশ্ন করছেন, ‘অসুস্থতার ছুটি পেতে কি প্রতিটি মেয়েকে ট্রাউজার খুলে আপনাকে দেখাতে হবে?’ জবাবে ওই নারী বলেন, ‘মোটামুটি হ্যাঁ। এটা আমাদের কলেজের নিয়ম।’
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গেংডান ইনস্টিটিউট নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ক্লিনিকে। সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—তাদের কর্মীরা নিয়ম অনুসরণ করেছেন। তবে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এ ঘটনাকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার চরম লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন।
আজ সোমবার (২৬শে মে) বিবিসি জানিয়েছে, ঘটনার বিষয়ে ছাত্রী ও প্রতিষ্ঠান উভয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ভিডিও ও কলেজের বিবৃতি পরে সরিয়ে নেওয়া হলেও এর স্ক্রিনশট ও অংশবিশেষ সামাজিক মাধ্যমে আবারও ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোতেও এটি প্রকাশিত হয়েছে।
চীনের টিকটক হিসেবে পরিচিত ‘দৌইইন’-এ এক ব্যবহারকারী নিজেকে ওই ছাত্রী দাবি করে জানিয়েছেন, হয়রানির ভিডিওটি পোস্ট করার পর তার অ্যাকাউন্ট ৩০ দিনের জন্য ‘অশ্লীলতার’ অভিযোগে স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে ১৬ই মে গেংডান ইনস্টিটিউটের বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ভিডিওটি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে এবং যারা মিথ্যা ভিডিও ইচ্ছাকৃতভাবে ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ ও কটাক্ষের ঝড় বয়ে যায়। এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘আমার মাথা ব্যথা করছে, তাহলে কি মাথার খুলি খুলে দেখাতে হবে?’
গেংডান ইনস্টিটিউটের এক কর্মী স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, শিক্ষার্থীরা যেন মাসিকের অজুহাতে ছুটি না নেয়, সে কারণে এ নিয়ম করা হয়েছিল। তবে এ ব্যাখ্যা জনমনে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।
একজন উইবো ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘যদি মাসে একাধিকবার কেউ এমন অজুহাত দেয়, তাহলে তার একটা রেকর্ড রাখলেই হয়—বিষয়টিকে এত জটিল করার কী আছে?’
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। চায়না ন্যাশনাল রেডিওতে প্রকাশিত এক মতামতে বলা হয়েছে, ‘মাসিক এমনিতেই নারীদের জন্য অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয়। এমন নিয়ম শিক্ষার্থীদের অস্বস্তিতে ফেলবে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন