শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেডিকেল কলেজ নির্মাণে বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতে চান বগুড়ার মিঠু

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, ১৭ই এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তুলে ভবন নির্মাণের নকশা তৈরি করেছেন বগুড়ার তরুণ প্রকৌশলী এ বি এম মনোয়ারুল হাসান মিঠু। এই স্থাপত্যশৈলীর ভবন নির্মাণ করা গেলে সেটিই হবে বিশ্বের কোনো মানুষের আবক্ষ প্রতিকৃতির প্রথম ভবন-- এমনটিই দাবি মিঠুর। 

নকশাটি তৈরি করতে তার সময় লেগেছে প্রায় ২০ বছর। একটি থ্রি-ডি নকশা প্রদর্শন করে মিঠু জানিয়েছেন এই আদলে ভবন নির্মাণ করলে ওপর থেকে (আকাশ) দেখতে হুবহু বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি ভেসে উঠবে। ৫তলা বিশিষ্ট এই অবকাঠামোটি নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সময় লাগবে প্রায় ৩ বছর।

সম্প্রতি এই গবেষণা নিয়ে বগুড়ার একটি মোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন এ বি এম মনোয়ারুল হাসান মিঠু। এসময় তিনি বলেন, এতদিন রঙতুলি, শস্যচিত্র, মুর‌্যাল ও ভাস্কর্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ চিত্র সবাই দেখলেও ব্যতিক্রমী এই স্থাপত্যশৈলীর চিত্র দেখেননি কেউ।

আরো পড়ুন: সেনা অভিযানে কেএনএফের ৮ সদস্য আটক

তিনি বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার বাসিন্দা। লেখাপড়া করেছেন বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। তার বাবা প্রয়াত আব্দুল বাসেদও ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। লেখাপড়া শেষে পিবিএল, ম্যাক্স, শামীম এন্টারপ্রাইজসহ বেশ কিছু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে ভবন ও রাস্তা নির্মাণ কাজের প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।

এই স্থাপত্য ভবনার বিষয়ে মিঠু বলেন, ১৯৯৫ সালে সবেমাত্র বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে বগুড়া পলিটেকনিকে ভর্তি হয়েছি। পলিটেকনিকে ভর্তির পর ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করি। আওয়ামী লীগ তখন বিরোধী দলে। সেসময় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বগুড়া এসেছিলেন।

সেই সফরে বগুড়ায় ছাত্রলীগের একটি সভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘তোমাদের চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে নতুন কিছু দিতে হবে।’ তার সেই কথা আমার মনে ধরে। এই কারণে নতুন কিছু করার আগ্রহ থেকেই ১৯৯৮ সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিপ্লোমা করার পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি নিয়ে কাজ করতে শুরু করি।

এরই মাঝে কিছুদিন চাকরিতে সময় দিয়েছি। তবে ওই গবেষণা থেকে সরে যাইনি। বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকীতে এসে চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুনরায় এই কাজে মনোযোগ দিই। এখন সেটির থ্রি-ডি ভার্সন সম্পন্ন হয়েছে। একটি ৫তলা ভবনের স্থাপত্য নকশায় বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি ফুটে তুলতে সক্ষম হয়েছি।

মিঠু আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু আমাদের জাতির পিতাই নন, তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই উদ্যোগ। পৃথিবীর কোথাও মানুষের প্রতিকৃতি দিয়ে কোনো স্থাপনা নির্মিত হয়নি। এই নকশায় ভবন নির্মাণ করা গেলে মানুষের প্রতিকৃতি দিয়ে প্রস্তুতকৃত সেটিই হবে পৃথিবীর প্রথম স্থাপনা। ভবনে এমন এক নেতার মুখচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে তার স্মৃতিকে ধরে রাখা সম্ভব।

উপস্থাপিত মডেল সম্পর্কে তিনি বলেন, একটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের উদ্দেশ্যে মডেলটি তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিলে বঙ্গবন্ধুর নামে যে কোনো বৃহৎ বা ছোট স্থাপনাও এই স্থাপত্যশৈলীতে নির্মাণ করা সম্ভব।

মিঠু তার থ্রি-ডি নকশায় যে ভবনটির নির্মাণের কথা বলেছেন সেটি বাস্তবায়নে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৭৬৫ বর্গফুট বা ৯ দশমিক ৮৮১ একর জমির প্রয়োজন। সেখানে মূল অবকাঠামো হবে ২ লাখ ২৪ হাজার ৪১৫ দশমিক ২৩ বর্গফুটের।

এইচআ/  আই.কে.জে/


মেডিকেল কলেজ বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি থ্রি-ডি নকশা

খবরটি শেয়ার করুন