অজিত কুমার মহলদার
উপমহাদেশে সাধারণ নির্বাচনে দলগতভাবে কম ভোট পেয়েও কয়েকটি রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করেছে স্বাচ্ছন্দ্যে। রাজনৈতিক মুন্সিয়ানা দেখানোর কারণে দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে সরকার পরিচালনা করছে মসৃণভাবে। নবম থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক চাপই আওয়ামী লীগকে বিচলিত করতে পারেনি। বরং রাশিয়া, ভারত ও চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বহাল রেখে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করে যাচ্ছে। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বন্ধুরাষ্ট্র জাপানকেও আর্থিকভাবে পাশে পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ‘কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’- এই নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে জ্বালানি, গ্যাস ও খনিজ পদার্থ উত্তোলন-উৎপাদনে সর্বাধিক সহযোগিতা করছে। বিমানের সরঞ্জামাদিও বিক্রি করছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুপ্রতীম জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তারা বাংলাদেশ থেকে কম খরচে পোশাক তৈরি করে নিচ্ছে। এ সব কিছু সম্ভব হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায়। তাই দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে টিআইবি, সিপিডি, সুজন এবং বিএনপি যেসব অযৌক্তিক বাগাড়ম্বর করেছিল, করছে; তা সম্পূর্ণই মিথ্যা।
নির্বাচনী তথ্য সরবরাহ করে ইন্ডিয়াভোটস ডটকম। তারা বলছে, ভারতে বিগত লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ৩৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। যার ফলে ভারতীয় সংসদের মোট ৫৪৫ আসনের মধ্যে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসনে জয় পায়। ১৯৮৯ সালের পর সাধারণ নির্বাচনে এটাই সবচেয়ে বড় জয়।
২০১৯ সালে ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে শতকরা ৬৭ ভাগ ভোট পড়েছিল। এর মধ্যে উপমহাদেশের অন্যতম পুরাতন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ১৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ ভোটারের মন জয় করতে পেরেছিল। ২০১৪ সালে কংগ্রেস ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, তখন বিজেপি ৩১ শতাংশের বেশি ভোট পায়। বিজেপি ১৯৮৪ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছিল, আর দুটি আসনে জয় পায়। এরপর ধীরে ধীরে বিজেপির উত্থান ঘটে। ২০১৪ সাল থেকে দলটি টানা দুইবার সরকার গঠন করে। ভারতে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হতে পারে আগামী এপ্রিল-মে মাসে। এমন বাস্তবতায় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠন করা হয়েছে, পাল্টা হিসেবে রয়েছে বিজেপির আওতাধীন এনডিএ জোট।
১৯৫২-২০১৪ পর্যন্ত কংগ্রেস ১৯৮৪ সালে সর্বোচ্চ ৪৮ শতাংশ ভোট পায়। বিগত দুটো নির্বাচনে কংগ্রেসের ভোটহার ২০ শতাংশের মতো। আর ৩০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিজেপি পরপর দুইবার সরকার গঠন করেছে। বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মভিত্তিক গণতান্ত্রিক দল বিজেপি বহাল তবিয়তে টিকে আছে ক্ষমতায়।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ব্যাপক জয় পায় ক্রিকেট অলরাউন্ডার ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। কয়েকটি ছোট দল নিয়ে পিটিআই সরকার গঠন করে। কিন্তু পোড় খাওয়া রাজনৈতিক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন) সরকার গঠন করতে অক্ষম হয়। সেই নির্বাচনে পিটিআই ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ভোট পায়। যেখানে পিএমএল-এন ২৪.৩৫% পেয়েছে। সে সময় পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছিল নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়েছে।
একটি নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন নেটওয়ার্ক (এফএএফইএন) দাবি করেছিল, পাকিস্তানে ২০১৮ সালের নির্বাচন পূর্ববর্তী নির্বাচনের তুলনায় কিছু দিক দিয়ে আরও স্বচ্ছ হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছিল, নির্বাচনের দিনে কোনো কারচুপি হয়নি। ২০১৮ সালে অবশ্য ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পড়ে। এর আগের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫৫ শতাংশ। বিপুল ভোটে জয়ী হলেও ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হন ইমরান খান। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছিল সেনাবাহিনী; হাত ছিল আমেরিকার। পরে পাকিস্তান মুসলিম লীগের (এন) পক্ষে শেহবাজ শরীফ সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু তিনি নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হন। এজন্য অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ার-উল-হক কাখর। চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।
শ্রীলংকায় বিগত দুটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ২০২০ সালে সংসদীয় নির্বাচনে ৮৬; ২০১৫ সালে ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ২০১০ সালের নির্বাচনে কেন্দ্রীয়, জেলা, বিভাগ ও দ্বীপপুঞ্জ অনুসারে ভোটের ফলাফলে দেখা যায়, গড়ে ৬০ শতাংশের ওপরে মানুষ ভোট দিয়েছে। এর আগের নির্বাচনে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এতেই অনুমেয় শ্রীলংকার মানুষ ভোট দিতে পছন্দ করে।
উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে মালদ্বীপে বিগত দুটো রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে।
নেপালে ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে ঊণসত্তর শতাংশ ভোট পড়েছিল। ২০২২ সালে ভোট পড়ার হার কমে যায়, সাত শতাংশ কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৬১ শতাংশে। এদিকে আফগানিস্তান ও মিয়ানমারে অগণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আছে। আফগানিস্তানে ধর্মভিত্তিক শাসন চলছে আর বার্মায় চলছে সামরিক জান্তা।
‘বাংলাদেশে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল জয় পেয়েছে। যদিও একাদশ সংসদের শেষ দিকে বিএনপির উপস্থিতি ছিল না তবুও তারা বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত। এই দল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তিনশ’ আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে নির্বাচন হয়েছে। একটি আসনের ভোট স্থগিত। ২২৩ আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে মাত্র ১১ আসনে। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্বতন্ত্র নির্বাচন করে ৬২ আসনে জয় পেয়েছেন। বাকিরা পেয়েছে অন্য তিন আসন। এই নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ’। আওয়ামী লীগ কত শতাংশ ভোট পেয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া যায়নি এখনও। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, রাশিয়া ও চীন শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়েছে।
এর আগে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে প্রায় ৭৫ শতাংশ ভোট পায়। অবশ্য ভোট পড়ার হার ছিল ৫৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। একই বছর প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে ৫৭ শতাংশের বেশি মানুষ ভোট প্রদান করেছিল। স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ ভোটগ্রহণ হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। তারা ৭৩ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পায়। ওই সময় প্রায় ৫৫ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে যায় কেন্দ্রে। তখন বিএনপি ছিল না।
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ঘটনায় পট পরিবর্তন হয়। ১৯৭৯ সালে নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বিএনপি জয় পায়। দলটি ৪১ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেতে সক্ষম হয়। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ ভোট পায়। যদিও নির্বাচনে ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
আরেকটি হত্যাকাণ্ডে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর ক্ষমতায় বসেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তারা দুইজনই সামরিক শক্তিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছিল না তাদের। এই অবস্থায় ১৯৮৬ সালে নির্বাচন দিয়ে এরশাদ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগ যথাক্রমে ৪২ ও ২৬ শতাংশ ভোট পায়। যদিও মোট ৬১ শতাংশ নাগরিক ভোট প্রদান করেছিল। এই নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি। কিন্তু দুই বছরের মাথায় ফের নির্বাচন দিতে হয়। সেই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৬৮ শতাংশ ভোট পায়, আর সমন্বিত একটি বিরোধী জোট ১৩ শতাংশ ভোট পায়। সবমিলিয়ে ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল ওই নির্বাচনে।
জিয়া-এরশাদের পতনের পর বহু কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন হয় ১৯৯১ সালে। এই নির্বাচনে জয় পায় বিএনপি। দলটি ৩১ শতাংশ ভোট পায়। অপরদিকে আওয়ামী লীগ ৩০ ভাগ মানুষের মন জয় করে। জাতীয় পার্টি-জামাত ১২ শতাংশ করে ভোট পায়। তখন অবশ্য মোট ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ৭৫টি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও মাত্র ১২টি দল আসন পায়। সরকার গঠন করেন খালেদা জিয়া।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি শুধু ফ্রিডম পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে একতরফা নির্বাচন করে। তখন মাত্র ২১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি। ভোট বর্জন করেছিল। গঠিত হলেও খালেদা জিয়ার সরকার ভেঙে পড়ে। প্রচণ্ড গণদাবির মুখে বিএনপি সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী আনে, এর মাধ্যমেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের তত্ত্বাবধানে ১৯৯৬ সালের জুন মাসে নির্বাচন হয়, এতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ তখন প্রথম বাংলাদেশে মোর্চা সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ ৩৭ শতাংশ, অপরদিকে বিএনপি ৩৪ শতাংশ ভোট পায়। ৭৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল তখন। সব থেকে বেশি ৮১টি দল নির্বাচন অংশ নেয়। একুশ বছর পর শেখ হাসিনার দল ক্ষমতায় আসে।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০০১ সালে বিএনপি ৪১ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসে। এর কাছাকাছি ভোট পায় আওয়ামী লীগ, তারা ৪০ শতাংশ ভোট পায়। এই নির্বাচনে ৭৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
নবম সাধারণ নির্বাচনে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় বসে। বহুল আলোচিত মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিন নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হয়। এতে আওয়ামী লীগ ৪৮ শতাংশ ও বিএনপি প্রায় ৩৩ শতাংশ ভোট পায়। আওয়ামী লীগ মহাজোট গঠন করে। এই জোট ৫৬ শতাংশ ভোট পায়। বিএনপির চারদলীয় জোট ৩৮ ভাগ ভোট পায়। বাংলাদেশে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছিল এই নির্বাচনে, যার হার ছিল ৮৭ শতাংশ।
অনির্বাচিত কোনো ‘কাঠামো’ ক্ষমতায় থাকতে পারে না- এই যুক্তিতে সুপ্রিমকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে। দলীয় সরকারের অধীনে দশম নির্বাচনে ২০১৪ সালে ভোট পড়েছিল ৪০ শতাংশ। দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৭২ ভাগ। দেড় শতাধিক আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন এমপিরা। বিএনপি নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে ভোট বর্জন করে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সালে মোট ভোট পড়েছিল ৮০ শতাংশ। আওয়ামী লীগ ৭৫ শতাংশ ভোট পায়। অপরদিকে বিএনপি মাত্র ১৩ শতাংশ ভোট পায়। এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও বিএনপির কয়েকজন সংসদ সদস্য সংসদে যোগ দেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কম দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, মাত্র দুটি। আর সব থেকে বেশি ৮১টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয় ১৯৯৬ সাালে তত্ত্বাবধায়ক আমলে। এরপর আওয়ামী লীগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে, তাতে কমপক্ষে ১২টি এবং সর্বোচ্চ ৫৪টি দল অংশ নেয়। দ্বাদশ নির্বাচনে নিবন্ধিত ২৮টি দল অংশ নেয়। সেদিক দিয়ে বিএনপি আমলের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ। ১৯৯৬ সালে মাত্র একুশ শতাংশ ভোটের হার নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করেছিল, কিন্তু টেকেনি।২০১৪ সালে ৪০ ও চলতি বছর ৪২ শতাংশ ভোট পড়লেও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে আন্তর্জাতিক মহলে টিকে আছে, এটাই শেখ হাসিনার সাফল্য। ২০০৮ ও ’১৮ সালে ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। ১৯৭৯ সালে যখন বিএনপি সরকার গঠন করেছিল তখনও খুব বেশি ভোট পড়েনি, ৫১ শতাংশ মানুষ ভোট দেয়। এদিকে ১৯৭৮, ’৮১ ও ’৮৬তে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গড়ে ৫৪ শতাংশ ভোট পড়ে দেশে।
শেষ করছি ভারতের কূটনীতিক পঙ্কজ সরণের লেখা দিয়ে। তার একটি লেখা ২২ জানুয়ারি প্রথম আলো প্রকাশ করে। দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলছেন, ‘বিএনপির নির্বাচন বর্জনটা দুর্ভাগ্যজনক ও গণতন্ত্রের নীতির পরিপন্থী’। তিনি বলছেন, চীন-রাশিয়ার গণতন্ত্র, ইরানের সুষ্ঠু নির্বাচনও পশ্চিামাদের পছন্দ নয়। নির্বাচনের মাধ্যমে মিশর যে সামরিক শাসনের দিকে ধাবিত, সেটা পশ্চিমাদের খুব পছন্দের। কারণ মিশর পশ্চিমাদের বন্ধু। তাই বলতে হয়, সামরিক শক্তি পছন্দ করে যুক্তরাষ্ট্র, গণতন্ত্র নয়। অপরদিকে আন্তর্জাতিক মহলে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারলে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়, তার উদাহরণ শেখ হাসিনার সরকার।
অজিত কুমার মহলদার, প্রাক্তন নির্বাহী সদস্য, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন