সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হজের যেসব স্থানে দোয়া কবুল হয়

ধর্ম ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৫২ অপরাহ্ন, ৫ই মে ২০২৪

#

প্রতীকী ছবি

হজের সফর দোয়া কবুলের মোক্ষম সময়। হজ কিংবা ওমরার জন্য ইহরামের নিয়ত করা থেকে শুরু করে হজ ও ওমরাহ সম্পন্ন করে বাড়িতে ফিরে আসার পরও ৪০ দিন পর্যন্ত হাজির দোয়া কবুল হতে থাকে।

হজের সফরে এমন কিছু সময় ও স্থান রয়েছে, যে সময় ও স্থানে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। দোয়া করার প্রসিদ্ধ কিছু স্থান উল্লেখ করা হলো:

কাবাঘরে দৃষ্টি পড়ার সময় : পবিত্র কাবার দিকে তাকিয়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। হজরত ইবনে জুরাইজ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) কাবা শরিফকে দেখে এই দোয়া পড়েছিলেন-হে আল্লাহ! আপনি এই ঘরের সম্মান, মর্যাদা ও মহিমা বৃদ্ধি করে দিন এবং যে ব্যক্তি এই ঘরে হজ ও ওমরাহ করে তারও সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিন।’ (মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার : ৯৭৯৬)

হাজরে আসওয়াদের কাছে : হাজরে আসওয়াদ দোয়া করার অন্যতম স্থান। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) হাজরে আসওয়াদকে দুই ঠোঁটে চুমু খেয়ে লম্বা সময় ধরে কান্নাকাটি করলেন। এরপর তাকিয়ে দেখলেন ওমর (রা.)-ও কান্নাকাটি করছেন। বললেন, উমর! এটা অশ্রু ঝরার স্থান!’ ( ইবনে মাজাহ : ২৯৪৫)

রুকনে ইয়ামানির কাছে : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,  ‘যে ব্যক্তি রুকনে ইয়ামানি ইস্তিলাম করে এরপর দোয়া করে তার দোয়া কবুল করা হয়’ (মুসান্নাফে আবদুুর রাজ্জাক : ৪৪৪০)

জমজমের পানি পান করে : হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘জমজমের পানি যে উদ্দেশ্যে পান করা হয় সেটা সাধিত হয়।’ (ইবনে মাজা : ৩০৬২)

আরাফার ময়দান : হজের সময় আরাফার ময়দানে অবস্থানের দিন অর্থাৎ ৯ জিলহজ বান্দার দোয়া কবুল করা হয়। হজরত আমর ইবনে শুয়াইব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরাফার দিনের দোয়া হলো সর্বোত্তম দোয়া।’ (তিরমিজি : ৩৫৮৫)

মুজদালিফা : হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) মুজদালিফায় অবস্থানকালে বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ডাকো। তোমাদের দোয়া কবুলের কিছু স্থান আছে। তবে জেনে রেখো, আল্লাহ তায়ালা গাফেল অন্তরের দোয়া কবুল করেন না।’ (তিরমিজি : ৩৪৭৯)

জামারার কাছে : হাদিসে এসেছে, ‘হজরত ইবনে ওমর (রা.) জামারায় সাতটি পাথর নিক্ষেপ করলেন এবং প্রতিটি পাথর নিক্ষেপের সময় তাকবির দিলেন। এরপর কেবলার দিকে মুখ করে লম্বা সময় দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে দোয়া করলেন। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘আমি এভাবে রাসুল (সা.)-কে দোয়া করতে দেখেছি।’ (বুখারি : ১৭৫২)

মুলতাজাম : হজরত আমর ইবনে শুয়াইব (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আমি ইবনে ওমর (রা.)-এর সঙ্গে হজে ছিলাম। ইবনে ওমর (রা.) হাজরে আসওয়াদ ও কাবা শরিফের দরজার মাঝের দেয়ালের কাছে দাঁড়ালেন। নিজের বুক, দুই হাত ও কপাল লাগিয়ে রাখলেন এবং বললেন, ‘রাসুল (সা.)-কে আমি এভাবেই করতে দেখেছি।’ (ইবনে মাজা : ২৯৬২)

উল্লিখিত স্থান ব্যতীত পুরো হারাম শরিফেও দোয়া কবুল হওয়ার কথা বর্ণিত আছে। এ ছাড়া রাসুল (সা.)-এর জন্মস্থান, হজরত খাদিজা (রা.)-এর বাড়ি, গারে হেরা, গারে সাওর, রিয়াজুল জান্নাত, দুই উস্তুয়ানা, দারে আরকাম, মেহরাবে নবী, আসহাবুস সুফফা ইত্যাদি স্থানও দোয়া কবুল হওয়ার স্থানের অন্তর্ভুক্ত। হজের প্রধান উদ্দেশ্য, আল্লাহর দরবারে মুক্তিপ্রাপ্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়া। সময় ও জবান ঠিকমতো কাজে লাগিয়ে হাজিদের জন্য রয়েছে সেটা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

ওআ/ আই.কে.জে/


হজ দোয়া

খবরটি শেয়ার করুন