ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশে দেশে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ ৯০ দিন স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ায় এ দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। গতকাল বুধবার (৯ই এপ্রিল) এ স্থগিতাদেশ আসে।
পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ বিরতি বাংলাদেশকে প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় দিচ্ছে। চীন শুল্কের মুখে পড়ায় আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারবে।’
দেশের শীর্ষ এক পোশাক রপ্তানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুখবর ডটকমকে বলেন, ‘তবে দীর্ঘমেয়াদে এ শিল্পের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আগামী ৯০ দিনে বাংলাদেশ আমেরিকার সঙ্গে কতটা কার্যকরভাবে দরকষাকষি করতে পারছে, এর ওপর।'
বুধবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে শুল্ক আরোপ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
তিনি লেখেন, ‘আমরা আপনার বাণিজ্যনীতির সমর্থনে আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’
বেশ কয়েকজন পোশাক কারখানার মালিক জানিয়েছেন, আগামী ৯০ দিনের বিরতিতে তারা স্বস্তি পেয়েছেন। তবে উদ্বেগ থেকে গেছে। ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্ক ৯০ দিন পর কার্যকর হলে দেশের ৪০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক শিল্প সংকটে পড়বে। কারণ, আমেরিকার বাজারে তখন রপ্তানিকারকদের ৫৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক গুণতে হবে।
সেই ঘোষণায় ২০ শতাংশের কম আমেরিকান তুলার টি-শার্টে শুল্ক ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ। সর্বশেষ ৩৭ শতাংশ শুল্ক আগের শুল্কের সঙ্গে যোগ হওয়ায় তা ৫৩ দশমিক পাঁচ শতাংশে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন কয়েকটি পোশাক কারখানার মালিক।
তারা আরও জানান, বাংলাদেশে তৈরি বেশিরভাগ পোশাকে ২০ শতাংশেরও কম আমেরিকান তুলা ব্যবহার করা হয়।
গত ২রা এপ্রিল হোয়াইট হাউস থেকে এক আদেশে বলা হয়, ‘শুল্কের (নতুন) হার ... অন্যান্য শুল্ক, ফি, কর বা চার্জের বাইরে।’ পণ্যভেদে শুল্কের হার ভিন্ন হবে। দেশীয় পোশাক কারখানার মালিকরা গড়ে ৫০ শতাংশের মতো শুল্ক হারের আশঙ্কা করছেন।
আমেরিকার আমদানি করা ১০৫ বিলিয়ন ডলারের পোশাক বাজারের নয় দশমিক তিন শতাংশ বাংলাদেশের দখলে। বাংলাদেশ আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ আমেরিকায় সাত দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে।
চীনা পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক বহাল থাকায় চীন ইউরোপের বাজারে সস্তা কাপড়ের বন্যা বইয়ে দিতে পারে। এতে বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য আরেকটি সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহির এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সরকারের উচিত আমেরিকার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় আলোচনা শুরু করা। আমেরিকায় বিক্রি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় এক বিদেশি ক্রেতা আগের কার্যাদেশ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন।’
এইচ.এস/