ছবি: অ্যানথ্রপিক
লেখকদের দায়ের করা কপিরাইট লঙ্ঘনের মামলা নিষ্পত্তিতে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ১৫০ কোটি ডলার (প্রায় ১.১১ বিলিয়ন পাউন্ড) পরিশোধ করতে সম্মত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিক। লেখকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি তাদের বই অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করেছে ক্লদ নামে এআই চ্যাটবট প্রশিক্ষণের জন্য। তথ্যসূত্র: বিবিসি।
এই নিষ্পত্তি আমেরিকার জেলা জজ উইলিয়াম অলসাপের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। মামলাকারী লেখকদের আইনজীবীদের মতে, আদালতের সম্মতি পেলে এটি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কপিরাইট ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
দুই মাস আগে জজ অলসাপ রায় দিয়েছিলেন, বই ব্যবহার করে এআই প্রশিক্ষণ আমেরিকার কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করে না, তবে অ্যানথ্রোপিককে চুরি করা উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে আদেশ দেন।
গত শুক্রবার (৫ই সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে অ্যানথ্রোপিক জানায়, এই রফার মাধ্যমে বিচারাধীন সব ‘লেগাসি ক্লেইমস’ নিষ্পত্তি হবে। প্রতিষ্ঠানটি বরাবরই নিজেদের প্রতিযোগীদের তুলনায় নৈতিক বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে।
অ্যানথ্রোপিকের ডেপুটি জেনারেল কাউন্সেল অপর্ণা শ্রীধর বলেন, ‘আমরা নিরাপদ এআই সিস্টেম তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন এগিয়ে নিতে এবং জটিল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে।’
উল্লেখ্য, অ্যানথ্রোপিককে সমর্থন দিচ্ছে আমাজন ও গুগলের মালিকানাধীন অ্যালফাবেট।
২০২৪ সালে দায়ের করা মামলায় বেস্ট সেলিং থ্রিলার লেখক আন্দ্রেয়া বার্টজ। অভিযোগ করেন, তার বই চুরি করে ক্লদ এআই প্রশিক্ষিত হয়েছে। মামলার অন্য দুজন লেখক হলেন ‘দ্য গুড নার্স’-এর লেখক চার্লস গ্র্যাবার ও ‘দ্য ফেদার থিফ’-এর লেখক কার্ক ওয়ালেস জনসন।
তাদের অভিযোগ, অ্যানথ্রোপিক ৭ মিলিয়ন বা ৭০ লাখের বেশি চুরি করা বই সংরক্ষণ করে এবং সেগুলো ব্যবহার করে বহু বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা গড়ে তুলেছে।
ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির বিচার শুরু হওয়ার কথা ছিল, তার আগেই এই রফা হলো।
লেখকদের আইনজীবী জাস্টিন নেলসন বলেন, ‘এআই যুগে এটিই প্রথম এমন নিষ্পত্তি। এটি শুধু অর্থবহ ক্ষতিপূরণই নিশ্চিত করছে না, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি নজির স্থাপন করছে—এআই কোম্পানিগুলোকে কনটেন্টের মূল মালিকদের অর্থ প্রদান করতে হবে।’
এআই প্রশিক্ষণে বই ব্যবহার, অ্যাপলের বিরুদ্ধে লেখকদের মামলাএআই প্রশিক্ষণে বই ব্যবহার, অ্যাপলের বিরুদ্ধে লেখকদের মামলা
লন্ডন বিজনেস স্কুলের ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স ও অপারেশনসের অধ্যাপক অ্যালেক্স ইয়াং বলেন, ‘এআই প্রশিক্ষণের জন্য মানবিক কনটেন্ট জরুরি। যদি এআইভিত্তিক উৎপাদিত কনটেন্টের কপিরাইট বাড়ানো হয়, তবে মানুষের তৈরি কনটেন্টের জন্য ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করাও জরুরি।’
এদিকে, অ্যানথ্রোপিকের পাশাপাশি ওপেনএআই, মাইক্রোসফট ও মেটার বিরুদ্ধেও একই ধরনের কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা চলছে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন