শনিবার, ১১ই অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে গুজব, যা বললেন ছেলে জয় *** ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীরা সব সময় ধর্ম পালনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা *** বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনসংক্রান্ত অনুচ্ছেদ সংবিধান থেকে বিলুপ্তি চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন *** ‘কারা লুঙ্গি তুলে চেক করে মানুষ মেরেছে, তা সবারই জানা’ *** শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়া মাচাদোকে অভিনন্দন জানালেন ড. ইউনূস *** শনিবার ভোরে দেশে ফিরছেন শহিদুল আলম *** ইসরায়েল থেকে মুক্ত শহিদুল আলম এখন তুরস্কে *** স্বামী নিখোঁজের পর দেবরের সঙ্গে বিয়ে, পরের দিনই হাজির স্বামী! *** সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শরৎ উৎসব স্থগিত নিয়ে যা জানাল চারুকলা অনুষদ *** গাজায় যুদ্ধবিরতি ‘কার্যকর’, নিজ এলাকায় ফিরছেন ফিলিস্তিনিরা, সরছেন ইসরায়েলি সেনারা

টিউলিপ এখনো বাংলাদেশের ভোটার, আছে পাসপোর্ট, এনআইডিও

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৯:৫৫ অপরাহ্ন, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের অনুপস্থিতিতেই বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে একটি দুর্নীতির মামলা বিচারাধীন। অতীতে তিনি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) গ্রহণ করেছিলেন। ঢাকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ব্রিটেন-ভিত্তিক দ্য টাইমস বলেছে, টিউলিপ অতীতে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, নতুন তথ্যগুলোর সঙ্গে তা সরাসরি সাংঘর্ষিক।

বাংলাদেশি একটি সংবাদমাধ্যমের (প্রথম আলো) সঙ্গে যৌথ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আজ বৃহস্পতিবার (১৮ই সেপ্টেম্বর) দ্য টাইমস উল্লেখ করেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করেছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর। এ ছাড়া ২০১১ সালের জানুয়ারিতে তিনি একটি বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্রও পান।

বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস ও নির্বাচন কমিশনের ডেটাবেইসেও এ-সংক্রান্ত রেকর্ড মিলে গেছে। উভয় ক্ষেত্রেই তার স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ ছিল ঢাকার ধানমন্ডির বাড়ি, যা তার খালা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মালিকানাধীন।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রভাবশালী এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক দাবি করে আসছেন, তিনি কেবলই ব্রিটিশ নাগরিক। কিন্তু প্রথম আলোর হাতে আসা নথিতে দেখা যাচ্ছে, টিউলিপের নামে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে। তিনি এখানকার ভোটার। বাংলাদেশি পাসপোর্টও করেছিলেন তিনি।

গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত নথিগুলো নিয়ে প্রথম আলো ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস-এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে যাচাই করে এসব নথির সত্যতা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে আজ দুই পত্রিকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।

প্রথম আলো ও দ্য টাইমস-এর অনুসন্ধান হিসেবে যে প্রতিবেদন প্রথম আলোর ছাপা সংস্করণে আজ প্রকাশিত হয়েছে, একই তথ্যের প্রতিবেদন এর অনেক আগে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টে প্রচারিত হয়েছে। গত ২১শে এপ্রিল ঢাকা পোস্ট 'টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও' শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রচার করে। এর আগে বেসরকারি টিভি চ্যানেল ডিবিসিতে এ বিষয়ে তথ্যসমৃদ্ধ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে।

'টিউলিপকে নিয়ে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য' শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে গত ১২ই সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও তথ্যগুলোর বিস্তারিত উল্লেখ আছে। অর্থাৎ, টিউলিপের বিষয়ে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো দেশের পাঠক-দর্শকের কাছে পুরনো ও প্রচারিত। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অভিযোগগুলো সামনে আনা হয়েছে।

বিশিষ্ট সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন 'বিরাট ছিদ্রান্বেষী প্রতিবেদন' শিরোনামে প্রথম আলোর প্রতিবেদনের লিংক নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে বৃহস্পতিবার বলেন, '২৪০ বছরের পুরানা ব্রিটিশ সংবাদপত্রের সঙ্গে যৌথ অনুসন্ধানে এই বিরাট ছিদ্রান্বেষী প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। তাই তো চার কলাম প্রধান শিরোনাম। ২০১১ সালে ইস্যু ও ২০১৬ সালে শেষ নবায়নকৃত পাসপোর্টে বাবার নাম, মায়ের নাম, তৎকালীন ঠিকানা প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) খালার ধানমন্ডির বাসগৃহ প্রভৃতি গভীর গোপন দুর্জ্ঞেয় তথ্যাদি উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে। তবে দ্বিশতাব্দী প্রাচীন ইংরেজি পত্রিকাটির প্রতিবেদনে যৌথ সহযোগী বাংলা দৈনিকটি যে সিকি শতাব্দীর তা গর্বভরে উল্লেখ করা হয়েছে কি-না দেখা সম্ভব হয়নি।'

বারবার পরিচয় অস্বীকার

দ্য টাইমসের তথ্যমতে, টিউলিপ সিদ্দিক বারবার দাবি করেছেন—তিনি কোনো বাংলাদেশি পরিচয়পত্র পাননি এবং শৈশবের পর থেকে পাসপোর্টও রাখেননি। গত আগস্টে তার আইনজীবী স্টিফেনসন হারউডও ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছিলেন, ‘টিউলিপ কখনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি পাননি।’

তবে এসব পরিচয়ের বিষয়ে নতুন নথি প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি ও তার দল (লেবার পার্টি) একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোপাগান্ডা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাদের দাবি, এসব নথি জাল এবং বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ তার সুনাম ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।

বাংলাদেশি নাগরিকত্ব প্রসঙ্গ

আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী কিংবা বাংলাদেশি পিতা-মাতার সন্তান স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পান। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনে জন্মগ্রহণ করলেও তার মা-বাবা উভয়ই বাংলাদেশি হওয়ায় তিনি দ্বৈত নাগরিকত্বের অধিকারী। তবে তিনি বহুবার প্রকাশ্যে নিজেকে শুধু ব্রিটিশ পরিচয়ে তুলে ধরেছেন। ২০১৭ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ব্রিটিশ এমপি, আমি বাংলাদেশি নই।’

দুর্নীতি মামলা ও রাজনৈতিক যোগসূত্র

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বর্তমানে বাংলাদেশে একটি দুর্নীতি মামলা চলছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার খালা শেখ হাসিনার প্রভাব খাঁটিয়ে মা ও ভাই-বোনদের জন্য জমি বরাদ্দ নিয়েছিলেন। তবে টিউলিপ এই অভিযোগকেও অস্বীকার করে মামলাটিকে ‘রাজনৈতিক নিপীড়ন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম দ্য টাইমসকে জানিয়েছেন—টিউলিপের পাসপোর্ট, এনআইডি এবং ট্যাক্স আইডির রেকর্ড পাওয়া গেছে। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনও নথিগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নির্বাচন কমিশনও এই তথ্য মিলিয়ে দেখেছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

২০১১ সালে যখন টিউলিপের বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিল, সেই সময়টিতে তিনি ঢাকায় সরকারি অনুষ্ঠানেও অংশ নেন। খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠক ও অনুষ্ঠানে তাকে দেখা যায়। এমনকি জাতিসংঘ অধিবেশন ও মস্কো সফরেও তিনি হাসিনার সঙ্গে ছিলেন।

ব্রিটেনে পদত্যাগ ও প্রতিক্রিয়া

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের অ্যান্টি-করাপশন মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তদন্তে উঠে আসে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার পরিবারের যোগসূত্র লেবার সরকারকে সুনামের ঝুঁকিতে ফেলছে। তবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সমর্থন তিনি ধরে রেখেছিলেন। টিউলিপ দাবি করেছিলেন, তিনি সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে পদত্যাগ করেছেন এবং একদিন আবার মন্ত্রিসভায় ফিরতে পারবেন।

এখনো আগের অবস্থানে অনড়

টিউলিপ সিদ্দিকের মুখপাত্রের বক্তব্যে বলা হয়েছে, প্রায় এক বছর ধরে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তাকে জড়িয়ে নথি জাল করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকারের উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসও তাকে নির্দোষ প্রমাণ করেছেন বলে দাবি করা হয়।

তবে সব মিলিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও এনআইডি নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশের পর টিউলিপ সিদ্দিকের নাগরিকত্ব ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা নিয়ে বিতর্ক আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে।

টিউলিপ সিদ্দিক টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে নিয়ে গুজব, যা বললেন ছেলে জয়

🕒 প্রকাশ: ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীরা সব সময় ধর্ম পালনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করেন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

🕒 প্রকাশ: ০১:২৯ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রদর্শনসংক্রান্ত অনুচ্ছেদ সংবিধান থেকে বিলুপ্তি চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

🕒 প্রকাশ: ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

‘কারা লুঙ্গি তুলে চেক করে মানুষ মেরেছে, তা সবারই জানা’

🕒 প্রকাশ: ০১:১১ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

শান্তিতে নোবেলজয়ী মারিয়া মাচাদোকে অভিনন্দন জানালেন ড. ইউনূস

🕒 প্রকাশ: ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, ১১ই অক্টোবর ২০২৫

Footer Up 970x250