বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিরোধী দল হওয়ার এখনো কোনো সিগন্যাল পাইনি: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, ২০শে জানুয়ারী ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

এখন পর্যন্ত বিরোধী দল হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সিগন্যাল পাননি উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও রংপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য জিএম কাদের বলেছেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কিছুই জানতে পারিনি। তবে আশা করছি সংসদ অধিবেশন শুরুর আগেই স্পিকারের কাছ থেকে আমরা একটা মতামত পাব হয়তো।’

শনিবার (২০শে জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর মহানগরীর পৈতৃক নিবাস স্কাইভিউতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান তিনি।

এ সময় জিএম কাদের বলেন, ‘বিরোধী দল বিষয়ে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের রেজুলেশনের সিদ্ধান্ত স্পিকারের কাছে পাঠানো হয়েছে, আশা করি সংসদ বসার আগেই আইন অনুযায়ী জাতীয় পার্টি বিরোধী দল করা হবে।’

এর আগে, ঢাকা থেকে ৫ দিনের সফরে রংপুরে এসে পল্লী নিবাসে দলটির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মাজার জিয়ারত করেন তিনি।

জিএম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পাটিতে ভাঙনের কোনো আশঙ্কা নেই, নির্বাচনের পর যারা ভুল বুঝেছিলেন, তারা পরে তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। জাতীয় পার্টি ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর থেকেই ভাঙনের ষড়যন্ত্র হয়েছে।’

এসময় বিরোধী দলে থাকা প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা গত সংসদে প্রধান বিরোধী দল ছিলাম। দেশ ও জাতির কল্যাণে সবসময় আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছি। সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা এবং আমাদের সুপারিশসহ অনিয়ম-দুর্নীতি ও জনগণের পক্ষে যেসব দাবি উত্থাপন করার কথা সেগুলো আমরা তুলে ধরেছি। এখনো আমরা সেই রাজনীতি করছি।’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমান সংসদে প্রধান দুটি দলের মধ্যে একটি আওয়ামী লীগ। নৌকা মার্কা নিয়ে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দল হিসেবে সরকার গঠন করেছে। তারপরই লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির আমরা ১১ জন সংসদ সদস্য আলাদা আরেকটি রাজনৈতিক দল। আর যারা রয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের সহমতের আওতার ভেতরে। সেই কারণে আমরা মনে করি, সরকারের বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

জিএম কাদের আরও বলেন, ‘সরকার যদি জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল হিসেবে অবস্থান নাও দেয় তারপরও দেশ ও জাতির কল্যাণে সরকারের বিরুদ্ধে একমাত্র দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব থাকবে সরকারের সমালোচনা করা। জনগণের চোখে সরকারের যেসব ভুল-ত্রুটি ধরা পড়ছে সেগুলোকে সংসদে তুলে ধরা এবং সেগুলো সম্পর্কে সুপারিশ দিয়ে সরকারকে সহায়তা করে সঠিক পথে চালনা করা। কাজেই যেকোনো পর্যায়েই আমাদের সিদ্ধান্ত হলো আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব। এই মুহূর্তে এটা বেশি জরুরি।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতা বা অন্যকিছু পদ-পদবি নির্ধারণ করা স্পিকারের আওতাধীন। যদিও আমরা জানি সার্বিকভাবে এটা (বিরোধী দল) জাতীয় পার্টির পাওয়ার কথা। আমরা যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেটা জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল থেকে আমাকে বিরোধীদলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা এবং চিফ হুইপ হিসেবে মজিবুল হক চুন্নুর নাম আমরা প্রস্তাব করে একটা রেজুলেশন নিয়েছি। সেটা আমরা স্পিকারের কাছে পত্রমারফত পেশ করেছি।’

নির্বাচনের পর ঢাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। অনেককে বহিষ্কার করা হয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে দল ভাঙছে আবার নতুন দলও হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির অবস্থান প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্রের শিকার। সরকার থেকে সরে আসার পর থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকগুলো বিষয় কাজ করেছে। আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের একটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল। সেটাকে বিভিন্নভাবে নষ্ট করার জন্য তার প্রতিপক্ষরা চেষ্টা করেছিল। অনেক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার হয়েছে, সেগুলো পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবে এখন ভাঙনের যে কথা বলা হচ্ছে, সেই সম্ভাবনা দেখছি না।’

ওআ/

জিএম কাদের

খবরটি শেয়ার করুন