শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুসল্লিদের চোখের পানিতে ইমামের রাজকীয় বিদায়

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৪৭ অপরাহ্ন, ১লা জুন ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ক্ষিদ্র মালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মুনছুর রহমানকে সংবর্ধনার মধ্যে রাজকীয় বিদায় দিয়েছেন এলাকাবাসী। ৪১ বছর ইমামতি করার পর এলাকাবাসীর ভালোবাসায় মুগ্ধ মাওলানা মুনছুর রহমান। আর স্থানীয়দের দাবি বাগাতিপাড়ায় এ ঘটনা প্রথম। মসজিদের সব ইমামকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেয়ার দাবি করেন এলাকাবাসী।

শুক্রবার (৩১শে মে) দুপুরে জুম্মার নামাজের পর ক্ষিদ্র মালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ৭০ বছর বয়সী এ ইমামকে হাত ধরে ঘোড়ার গাড়িতে তুলেন এলাকাবাসী। ঘোড়ার গাড়িতে উঠার আগে শেষবারের মতো এলাকাবাসীর কাছে ভুল-ত্রুটির ক্ষমা চান তিনি। ঘোড়ার গাড়ির আগে ও পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরে ইসলামপুর গ্রামে ইমামের বাড়িতে পৌঁছে দেন এলাকাবাসী।

জুম্মার নামাজের পর মসজিদের বিদায়ী ইমাম মুনছুর রহমানকে নানা ধরনের উপহার দেয়ার পাশাপাশি নগদ ৬২ হাজার ৮০০ টাকা দিয়েছেন মুসল্লিরা। ঘোড়ার গাড়িতে উঠার আগে এলাকাবাসীর ভালোবাসায় অশ্রুসিক্ত হন মাওলানা মুনছুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে এ মসজিদে ইমাম হিসাবে যোগদান করেছি। ৪১ বছর ইমামতি করার সময় এলাকাবাসীর ভালোবাসা পেয়েছি। বিদায় বেলায়ও তাদের ভালোবাসায় মুগ্ধ আমি। এলাকাবাসীর এমন ভালোবাসা কম মানুষের ভাগ্যে জুটে।’

আরো পড়ুন : সিলেটে বন্যা বানভাসি অসহায় মানুষের পাশে বিজিবি

পরে ঘোড়ার গাড়ির আগে ও পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিকেলে এলাকাবাসী মাওলানা মুনছুর রহমানের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন। আর দীর্ঘদিনের ইমামকে প্রাপ্ত সম্মান জানাতে পেরে আনন্দিত এলাকাবাসী।

বাগাতিপাড়া সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকার বাসিন্দা সেলিম রেজা বলেন, ‘বাগাতিপাড়া উপজেলায় এটিই প্রথম ঘটনা। তাদের উদ্যোগ দেখে বাগাতিপাড়ার সব মসজিদের ইমামকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দিবে এমনটা প্রত্যাশা করি।’

ক্ষিদ্র মালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম বলেন, ‘পুরো ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকায় এখন ৪টি মসজিদ হয়েছে। তবে তিনি যখন এখানে যোগ দেন তখন একটি মসজিদ ছিল। পুরো এলাকার প্রতিটি পরিবারের ৩ পুরুষের ইমামতি করেছেন তিনি। এছাড়া এলাকায় মাদ্রাসা স্থাপনসহ নানা ধর্মীয় কাজে তার বড় অবদান রয়েছে। তাই বিদায় বেলা তার প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয়েছে।’

ক্ষিদ্র মালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সভাপতি আরশেদ আলী বলেন, ‘ইমাম সমাজের নেতা। অথচ ইমামদের বিদায়ে প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয় না। তাই এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন মুসল্লিরা।

ক্ষিদ্র মালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদটি স্থাপিত হয় ১৯০১ সালে।

এস/ আই.কে.জে/


ইমাম মুসল্লি

খবরটি শেয়ার করুন