ছবি: সংগৃহীত
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা ব্যাহত হলেও সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি খারাপ নেই। তবে ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাওয়ায় মানুষের আয়ে প্রভাব পড়ছে, বলেন তিনি।
বুধবার (৫ই মার্চ) সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ
ও সরকারি
ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ
কমিটির সভা
শেষে সাংবাদিকদের তিনি আরো বলেছেন, এরপরেও অর্থনীতি
ধ্বংসের পথে
নেই; অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতি উদ্ধার
করেছে। একইভাবে দেশে নতুন
কর্মসংস্থান সৃষ্টি
কমে গেছে উল্লেখ করে এর কারণ হিসেবে
অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প
কমে যাওয়ার কথা বলেছেন। এ নিয়ে একনেক বৈঠকে আলোচনাও
হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা এ নিয়ে
আশার কথাও শুনিয়েছেন। সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি
আনার চেষ্টা
করছে। একই
সঙ্গে এসএমই
খাতে ঋণের
প্রবাহ বাড়াতে
বাংলাদেশ ব্যাংককে
বলা হয়েছে। তবে মানুষের
কিছুটা কষ্ট
হচ্ছে বলে
স্বীকার করেন
তিনি। সে
জন্য নতুন
কর্মসংস্থান দরকার
বলে মন্তব্য
করেন। নতুন কর্মসংস্থান নিয়ে কী কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তারও একটি বর্ণনা দিয়ে
তিনি বলেছেন, বার্ষিক উন্নয়ন
কর্মসূচি সংশোধন
করা হয়েছে।
তৈরি পোশাক খাতের
কারখানা বন্ধ
হয়ে যাওয়ার
প্রসঙ্গে তিনি
বলেন, সরকার
কিছু কিছু
ক্ষেত্রে নগদ
প্রণোদনা দিচ্ছে।
আরও বিভিন্ন
সুযোগ-সুবিধা
দিয়ে এই
খাত সচল
রাখার চেষ্টা
করা হচ্ছে। বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠীর ১৪টি
কারখানা বন্ধ
হয়ে যাওয়ার
প্রসঙ্গে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন,
বিষয়টির দায়িত্ব সরকার নিয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের
চেষ্টা করা
হচ্ছে। বিডার
সঙ্গে কথা
হয়েছে, এই
শ্রমিকদের বিকল্প
কর্মসংস্থানের চেষ্টা
করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টাকে
সাধুবাদ জানাতেই হয়। তিনি প্রকৃত সত্যটা উপলব্দি করতে পেরেছেন এবং প্রকাশ করেছেন।
মানুষের কিছুটা কষ্ট হচ্ছে, এটা তার সৎ উপলব্ধি। কিন্তু মানুষের কষ্টটা শুধু এখন
নয়, অতীতেও ছিল। তবে তা স্বীকার বা প্রকাশ
করার সংস্কৃতি বা মানসিকতা তখন ছিল না।
দেশের বা অর্থনীতির বাস্তব অবস্থা কখনোই প্রকাশ পেত না। সব সময় উন্নয়নের
ভেরেণ্ডাভাজি ভাজা হতো। সেই দিক থেকে অর্থ উপদেষ্টা ব্যতিক্রম। তিনি বলেছেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য
কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। এটা তার সত্য উচ্চারণ। মানুষের উপলব্ধির কথাই তিনি প্রতিধ্বনিত করেছেন।
আসলে মানুষ যে কষ্টে
আছে, তা টিসিবির ট্রাকের সামনে বা ওএমএসের দোকানের সামনে অপেক্ষামাণ নারী-পুরুষ, বৃদ্ধদের সারি দেখলেই
বুঝা যায়। এ সারিতে এখন শুধু নিম্নবিত্তরাই নন , বিপুল সংখ্যক মধ্যবিত্ত প্রতিদিন যোগ হচ্ছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কয়েকদিন ধরে একটু নাগালের মধ্যে থাকলেও আবারও
বাড়তির দিকে ঝুঁকছে। বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠীর ১৪টি কারখানাসহ দেশের অনেক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে গেছেন। অন্যদিকে অবকাঠামো নির্মাণসহ বিভিন্ন
প্রকল্প কমে
যাওয়ায় কর্মসংস্থানও নতুন করে হচ্ছে না।
অর্থ উপদেষ্টা
বলেছেন, সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার
চেষ্টা করছে। কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্যোগের কথাও
বলেছেন তিনি। শ্রমিকদের পাওনাও পরিশোধ করা হচ্ছে। সবই আশার কথা। মানুষের প্রত্যাশাও
তাই। এসব উদ্যোগ যত বেশি দৃশ্যমান হবে, সরকারের
প্রতি মানুষের আস্থাও তত বাড়বে। আমরাও প্রত্যাশা করি, এসব নিরসনে সরকার দ্রুত উদ্যোগ নেবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসাসহ কর্মসংস্থানের দরজা আরো প্রশস্ত এবং দৃশ্যমান হবে।
কেসি/এইচ.এস