ছবি : সংগৃহীত
অনেকের ক্ষেত্রে ডাস্ট অ্যালার্জি কষ্টদায়ক হলেও কিছু কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও প্রতিকার আছে, যা এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। চলুন জেনে নিই, ডাস্ট অ্যালার্জি কেন হয়, প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে-
কেন ডাস্ট অ্যালার্জি হয়?
ডাস্ট অ্যালার্জির বেশ কিছু কারণ আছে। ঘরের ধুলোবালিতে থাকা উপাদানগুলো ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপ্ত করে অ্যালার্জির লক্ষণ তৈরি করে। সাধারণ কারণগুলো হলো:
ডাস্ট মাইট: ক্ষুদ্রাকার পরজীবী, যা মানুষের মরা ত্বক থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে এবং অ্যালার্জি সৃষ্টি করে।
মোল্ড ও ফাঙ্গাস: স্যাঁতসেঁতে জায়গায় থাকা মোল্ড বা ছত্রাকের স্পোর বাতাসে ভেসে থাকে, যা শ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে অ্যালার্জির কারণ হয়।
পোষা প্রাণীর লোম: পোষা প্রাণীর শরীরের লোম বা মৃত ত্বকের কোষও ডাস্ট অ্যালার্জি উদ্রেক করতে পারে।
ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর ও অন্যান্য নরম আসবাব: এসব জায়গায় ধুলিকণা জমে থাকে, যা ঘরে বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়।
আরো পড়ুন : মুহূর্তেই মন ভালো করার টিপস
ডাস্ট অ্যালার্জির লক্ষণ
ডাস্ট অ্যালার্জির কারণে সাধারণত নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা যায়- নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া; হাঁচি এবং চোখে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া; শ্বাসকষ্ট এবং গলায় অস্বস্তি ও ত্বকে চুলকানি বা র্যাশ হওয়া।
ডাস্ট অ্যালার্জি প্রতিকারের উপায়
নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা: ঘর পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত ঝাড়ু বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করুন। বিছানার চাদর, বালিশের কাভার, পর্দা, ও নরম আসবাবপত্র নিয়মিত ধুয়ে নিন। সূর্যের আলোতে শুকালে ধুলাবালির জীবাণু দূর হতে পারে।
এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা: এয়ার পিউরিফায়ার বা বায়ু বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র ঘরের বাতাসের ধুলিকণা ও অন্যান্য অ্যালার্জিক উপাদান শোষণ করে, যা অ্যালার্জি কমাতে সহায়ক।
পোষা প্রাণীর যত্ন নেওয়া: পোষা প্রাণী থাকলে তাদের নিয়মিত পরিষ্কার করুন এবং প্রয়োজনে ঘরে প্রবেশ সীমিত রাখুন।
মাস্ক ব্যবহার করা: ঘর পরিষ্কারের সময় বা বাইরে ধুলোময় এলাকায় গেলে মাস্ক পরিধান করুন। এটি ধূলিকণা শ্বাসনালীতে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
নিয়ন্ত্রিত আর্দ্রতা বজায় রাখা: ঘরের আর্দ্রতা ৩০-৫০% এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন, যা মোল্ড এবং ডাস্ট মাইটের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: অ্যালার্জির সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি-অ্যালার্জিক ওষুধ বা ইনহেলার ব্যবহার করুন। এতে শ্বাসকষ্ট বা অস্বস্তি প্রশমিত হবে।
প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার: গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে নাক পরিষ্কার করার মাধ্যমে অ্যালার্জি উপশম হতে পারে। এছাড়া মধু এবং আদার চা পান করলে গলায় আরাম পাওয়া যায় এবং অ্যালার্জির লক্ষণ কিছুটা কমে।
কিছু অতিরিক্ত টিপস
পর্দা ও কার্পেটের বদলে ধুলা জমতে পারে না এমন মেঝের কাপড় বা সজ্জা ব্যবহার করতে পারেন। রান্নার সময় নির্দিষ্ট চিমনি বা কিচেন হুড ব্যবহার করলে রান্নাঘরের ধোঁয়া এবং অন্যান্য অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ডাস্ট অ্যালার্জি যতটা বিরক্তিকরই হোক না কেন, নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, মাস্কের ব্যবহার, এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের মাধ্যমে এটি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ছোট ছোট অভ্যাসের পরিবর্তন এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখাই ডাস্ট অ্যালার্জির প্রতিকার ও প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।
এস/ আই.কে.জে