ফাইল ছবি
বাংলা ব্যান্ড সংগীতকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েছেন আজম খান; অনুরাগীদের কাছে তিনি পপগুরু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। ২০১১ সালের ৫ই জুন মারা যান তিনি। আজম খান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, একাত্তরে অস্ত্র হাতে গেরিলাযুদ্ধ করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর আজম খান বন্ধুদের নিয়ে সংগীতের দল গড়েন, নাম দেন ‘উচ্চারণ’। দুঃখজনক হচ্ছে, আজম খানের মৃত্যুর পর ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের কার্যক্রম থেমে যায়। ১৪ বছর পর নতুন উদ্যমে ফিরছে আজম খানের হাতে গড়া ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’।
নতুন উদ্যমে ফেরার পেছনে আজম খানের পরিবার যেমন উদ্যোগী হয়েছেন, তেমনি ব্যান্ড সদস্য এবং ইভেন্ট আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা রয়েছে—এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানিয়েছে ব্যান্ড উচ্চারণ।
আজম খানের হাতে গড়া ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’কে নতুন উদ্যমে ফেরাতে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ৮ই নভেম্বর ঢাকার ধানমন্ডিতে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে আজম খানের পরিবারের পক্ষে তার কন্যা অরনী খান, ব্যান্ডের দলনেতা দুলাল জোহাসহ সব সদস্য, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার শোভন, ব্যবস্থাপক এজাজ রহমান এবং কুল এক্সপোজারের পক্ষে প্রধান নির্বাহী এরশাদুল হক চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
১৯৭২ সালে ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের যাত্রা শুরু হয়। সে বছরই বিটিভিতে প্রচারিত ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ আর ‘চার কলেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। এরপর ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘হারিয়ে গেছে খুঁজে পাব না’ ইত্যাদি গানে তিনি শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চুক্তি অনুযায়ী আজম খানের পরিবার তার নাম, ছবি ও সৃষ্টিশীল সব কাজের কপিরাইট এবং মালিকানায় থাকবে। কুল এক্সপোজার গণমাধ্যমে প্রচারণা, রয়্যালটি ব্যবস্থাপনা, কনসার্টসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
ব্যান্ডের দলনেতা দুলাল জোহা বলেন, ‘এই চুক্তি শুধু উচ্চারণের জন্য নয়, বরং আজম খানের সংগীত ঐতিহ্যকে নতুনভাবে বিশ্বে তুলে ধরার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। আমরা তার গানগুলোকে শুধু দেশের ভেতরে নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও পৌঁছে দিতে চাই, সে কারণে এই উদ্যোগ।’
‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের বর্তমান লাইনআপ হচ্ছে দুলাল জোহা (ভোকাল ও রিদম গিটার), পেয়ারু খান (ভোকাল ও পারকেশান), সেকান্দার আহমেদ খোকা (বেজ গিটার), পার্থ মজুমদার (লিড গিটার), প্রেম (কিবোর্ড) এবং বাপ্পী (ড্রামস)।
ব্যান্ড সূত্র জানিয়েছে, আগামী বছর উচ্চারণ দেশে ও বিদেশে একাধিক লাইভ কনসার্টে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পাশাপাশি এ মাস থেকে বেশ কয়েকটি টেলিভিশনে সরাসরি গানের অনুষ্ঠানেও অংশ নেবে উচ্চারণ।
‘এক যুগ’ নামে আজম খানের প্রথম অডিও ক্যাসেট প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে। সব মিলিয়ে আজম খানের গানের অ্যালবাম ১৭টি। গানের ভুবনের বাইরে খেলাধুলার প্রতিও ছিল তার দারুণ ভালোবাসা ছিল।
১৯৯১ থেকে ২০০০ সালে তিনি গোপীবাগ ফ্রেন্ডস ক্লাবের পক্ষ হয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলতেন। আজম খান অভিনয়ও করেছিলেন ২০০৩ সালে, ‘গডফাদার’ নামের একটি বাংলা চলচ্চিত্রে। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছেন এবং সাঁতারের প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন