শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাতক্ষীরায় লবণাক্ত জমিতে অভাবনীয় কৃষি সাফল্য

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:৪৯ অপরাহ্ন, ২১শে জুন ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

সাতক্ষীরায় লবণাক্ত জমিতে এখন দেখা দিয়েছে অভাবনীয় কৃষি সাফল্য। দিগন্তজুগড় শস্যের ক্ষেতগুলোতে ভুট্টা ও সবজির আবাদে সবুজ হয়ে গেছে। এক ফসলী জমিগুলো এখন তিন ফসলে রূপান্তর হচ্ছে। সেই লবণাক্ত জমিতে লাউ, কুমড়া, পেঁপে, ঢেড়শ, পুঁইশাক, উচ্ছে, শসা ও লালশাকসহ  বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করে সফল হয়েছে।

গত কয়েক দশক ধরেই লবণাক্ততার কারণে জমিতে ফলে না ফসল। মিঠাপানির আধারগুলো গেছে শুকিয়ে। গ্রামের পাশ দিয়ে খাল প্রবহমান থাকলেও পানির অভাবে শস্য আবাদ করতে পারেন না উপকূলের কৃষকরা। শুষ্ক মৌসুমে দিগন্তজুড়ে দেখা দেয় খরা। এরই মধ্যে সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখছে এই এলাকার কৃষকরা। পতিত থাকা ফসলী জমির কোনায় পুকুর করে মিঠা পানির সংস্থান করছেন তারা। সেই পানি দিয়ে এখন ফলানো হচ্ছে শস্য।

গল্পের এই পরিবর্তনের নাম সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার কাশিমারি ইউনিয়নের খুটিকাটা গ্রামের কৃষকদের। আগে এখানকার কৃষকরা শুধু আমন ধান আবাদ করতে পারতো। এখন সেই লবণাক্ত জমিতে লাউ, কুমড়া, পেঁপে, ঢেড়শ, পুঁইশাক, উচ্ছে, শসা ও লাল শাকসহ  বিভিন্ন প্রকার সবজি উৎপাদন করে সফল হয়েছেন। তারা সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আশপাশের কৃষকদের। পতিত জমি এখন আশা দেখাচ্ছে। স্বপ্ন বুনছেন আগামীর জন্য। 

খুটিকাটা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক নির্মল সরকার, রবিন্দ্র নাথ সরকার ও নিহার সরকার জানান, লবণাক্ততার কারণে তাদের গ্রামের শত শত হেক্টর কৃষি জমি পতিত থাকে। ফসল ফলে না ঠিকমত। তাছাড়া মিঠাপানির আধারগুলো শুকিয়ে গেছে। গতবছর সিনজেনটার সহযোগিতায় লবণাক্ত জমিতে ফসল উৎপাদন করে এলাকায় রীতিমত সাড়া ফেলে দিয়েছেন তারা। গ্রামের অধিকাংশ কৃষককে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে পুকুর খনন করে দিয়েছে সিনজেন্টা। এছাড়া আবাদের জন্য ভার্মিং কম্পোজ সার প্লান্ট, শস্য বীজ এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করেছে। কৃষকরা লবণাক্ত জমিতে বৃষ্টির পানি ব্যবহার করে নানা প্রকার ফসল উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। চলতি মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে একেক জন কৃষক ৩০-৫০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। আরো অধিকসংখ্যক পুকুর খনন এবং গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো খনন করে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে বারো মাসই সবজিসহ বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপাদন করা সম্ভব।

আরো পড়ুন : দিনাজপুরে চাষ হচ্ছে গোলাপি ও এলাচি জাতের নতুন লিচু

এ বিষয়ে সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেদায়েত উল্লাহ বলেন, সাতক্ষীরার যে অঞ্চলে লবণাক্ততার কারণে সারাবছর ফসল ফলাতে পারতো না সেখানে সিনজেনটার প্রযুক্তিগত ও উপকরণ সহায়তার মাধ্যমে এক ফসলী জমিকে তিন ফসলী জমিতে রূপান্তর করা সম্ভব হয়েছে। এতে কৃষকের সক্ষমতা এবং জীবন জীবিকার মানউন্নয়ন হয়েছে। কৃষিতে একটা আমূল পরিবর্তন আনা গেছে। এ অঞ্চলে টেকসই কৃষি ব্যবস্থার পাশাপাশি রিজেনারেটিভ এগ্রিকালচার পদ্ধতিগুলো বাস্তবায়ন করছে সিনজেনটা।

এস/  আই.কে.জে

কৃষক ভূট্টা ও সবজি

খবরটি শেয়ার করুন