ছবি: সংগৃহীত
শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমী ছিল আজ মঙ্গলবার (৩০শে সেপ্টেম্বর)। ঢাকাসহ সারাদেশের দুর্গামণ্ডপ উৎসবমুখর হয়ে উঠেছিল। সকালে দুর্গাদেবীর বিহিত পূজা শেষে মন্দিরে মন্দিরে অঞ্জলি প্রদান শুরু হয়। মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ ছিল কুমারী পূজা।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে উৎসবমুখর পরিবেশে অঞ্জলি প্রদান করতে দেখা যায়। সকাল ১১টায় রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজা শুরু হয়। বহু ভক্ত মণ্ডপে উপস্থিত হয়ে অংশ নেন দেবী দুর্গার আরাধনা ও দর্শনে। দুপুর ১২টায় পূজা শেষ হয়। ভক্তদের স্বাগত জানাতে সকাল থেকে প্রস্তুত ছিল মন্দির প্রাঙ্গণ।
রামকৃষ্ণ মিশনে ‘কুমারী মায়িকি জয়, দুর্গা মায়িকি জয়’ ধ্বনিতে কুমারী দেবীকে মণ্ডপে আনা হয়। এ সময় দুর্গা প্রতিমার সামনে কুমারী দেবীর বেদি স্থাপন করা হয়। পূজার শুরুতে মন্ত্রপাঠ ও প্রার্থনা হয়। পরে পঞ্চ উপকরণে কুমারী দেবীকে আরাধনা করেন পুরোহিত ও ভক্তরা। রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে প্রতিবছরই ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে হয় কুমারী পূজা।
পূজার ফাঁকে ঢাক-ঢোল, শঙ্খ, কাঁসর ও ঘণ্টা ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে মণ্ডপ। ভক্তরা ঘুরে ঘুরে উলুধ্বনি দেন। এরপর হয় প্রসাদ বিতরণ।
কুমারী পূজা সম্পর্কে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সহকারী সম্পাদক উত্তম মহারাজ বলেন, ‘কুমারী পূজা হলো নারীকে মাতৃশক্তির প্রতীক হিসেবে শ্রদ্ধা করা। এজন্য আমরা প্রতি বছর মহাঅষ্টমীর দিন কুমারী পূজা আয়োজন করি। তাছাড়া আমাদের শাস্ত্রে বলা আছে, প্রতিটি নারীর মধ্যেই দেবীশক্তি বিদ্যমান। এই পূজার মাধ্যমে সেই শক্তিকে আমরা সম্মান জানাই।’
শ্রীরামকৃষ্ণের মতে- সব স্ত্রীলোক ভগবতীর এক একটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ। দুর্গাপূজার অষ্টমী বা নবমীতে সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছরের একটি কুমারীকে প্রতিমার পাশে বসিয়ে পূজা করা হয়। চণ্ডীতে বলা হয়েছে— ‘যা দেবী সর্বভূতেষু; মাতৃরূপেণ সংস্থিতা। নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্য মধ্যে মায়ের রূপ’।
মহাঅষ্টমীতে অষ্টমী পূজা ছাড়াও রাতে হয় সন্ধি পূজা। অষ্টমী তিথির শেষ ও নবমীর শুরু–এই সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হয় বলে এ পূজার নাম সন্ধি পূজা। যেসব মণ্ডপে কুমারী পূজা হয়, সেখানে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয় তিনটি পূজা।
খবরটি শেয়ার করুন