শুক্রবার, ২৪শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৯ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** গানের সুরে শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন মাদক গ্রহণের কথা, ভিডিও ভাইরাল *** এ মাসেই ২০০ আসনে প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন *** পশ্চিম তীর দখলে ইসরায়েলি পদক্ষেপের কঠোর নিন্দা জানাল বাংলাদেশ *** বিনা শর্তে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির *** নির্বাচনে নিজস্ব সিদ্ধান্তেই সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে পারবে ইসি *** নাম বদলে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ হয়ে গেল ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ *** দেড় বছর পর ওয়ানডে সিরিজ জয় বাংলাদেশের *** ঢাকা সফরে আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী *** আদালত যাদের পলাতক বলবেন তারা নির্বাচন করতে পারবেন না: আসিফ নজরুল *** নির্বাচনে প্রার্থীর দেশি-বিদেশি আয়ের তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক

জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে হাঁড়িভাঙা আম

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:১৯ অপরাহ্ন, ১১ই মার্চ ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

প্রকৃতিতে বইছে আগুনঝরা ফাগুনের গান। গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ধরে ভেসে বেড়াচ্ছে মিষ্টি ঘ্রাণ। কোকিলের কুহু কুহু কলতান আর আমের মুকুলের সুমিষ্ট ঘ্রাণে আন্দোলিত চাষিদের মন। বসন্তময় ঋতু বৈচিত্র্যের এই ফাগুনে আমগাছের থোকায় থোকায় ভরা মুকুলে স্বপ্ন বুনছেন রংপুরের চাষিরা।

বছরের নির্দিষ্ট এই সময় জুড়ে তাই চাষি তো বটেই, কম-বেশি সব শ্রেণির মানুষের দৃষ্টি থাকে সবুজ পাতায় ঢাকা আমগাছের শাখা-প্রশাখায়। প্রকৃতি বৈরি না হলে এবারও সাধারণ আমের পাশাপাশি হাঁড়িভাঙা আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিক ও চাষিরা। হাঁড়িভাঙা আমের মুকুলে এবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন উত্তরের চাষিরা। এদিকে শতরঞ্জির পর এবার জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে বিখ্যাত আম হাঁড়িভাঙা। 

সম্প্রতি রংপুর সদরের পালিচড়া, বদরগঞ্জের শ্যামপুর, মিঠাপুকুরের খোড়াগাছসহ বিভিন্ন এলাকা যেতে দেখা মিলে সারি সারি গাছ। রাস্তার দুপাশে যেন হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের সবুজ বিপ্লব। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমির আইলে আইলে লাগানো হয়েছে আমের গাছ। বাদ পড়েনি বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা, পুকুরপাড়, বাড়ির উঠান। এখন বসন্ত বাতাসে আম গাছে দোল খাচ্ছে হাঁড়িভাঙা আমের মুকুল। সদ্য মুকুল ফোটার এমন দৃশ্য এখন শুধু বিস্তৃত গ্রামীণ জনপদেই নয়, শহরের গাছে গাছেও সুঘ্রাণ ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। একই চিত্র মিঠাপুকুরের আখিরাহাট, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গোপালপুর, নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়িসহ আশপাশের এলাকাতেও।

ইতোমধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে হাঁড়িভাঙা আম এখন বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ার খবরে আনন্দিত এই অঞ্চলের মানুষ। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের কারণে গত বছর বাংলাদেশ সরকার ভারত, ব্রিটেন, তুরস্ক ও আমেরিকার রাষ্ট্রপ্রধানসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের এই আম উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাঁড়িভাঙ্গার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হাঁড়িভাঙা আমের দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছে না চাষি এবং ব্যবসায়ীদের। প্রতি বছর কম বেশি শত কোটি টাকার ওপরে বিক্রি হয় হাঁড়িভাঙা আম। কিন্তু পদাগঞ্জ হাটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। তারা মনে করছেন, সঠিক সময়ে আম বাজারজাত ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো না গেলে অনেকেই লোকসানে পড়বেন।

হাঁড়িভাঙা আমের গোড়াপত্তন করেছিলেন খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের নফল উদ্দিন পাইকার নামে এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। স্বাধীনতার আগের বছর ১৯৭০ সালে নফল উদ্দিন ১২০ বছর বয়সে মারা যান। এখন তার লাগানো হাঁড়িভাঙা গাছটির বয়স ৬৮ বছর।

মাতৃগাছটির সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ হোসেন পাইকার জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু করে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আমের মুকুল এলে কৃষকরা আম বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঝড় কিংবা বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ফলন ভালো হবে। হাঁড়িভাঙা আম এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আরো পড়ুন : ফের শুরু ভারত থেকে আলু আমদানি, কমতে পারে দাম

একই ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমচাষি শাহ্জাহান মিয়া। বছর দশেক আগেও তিনি শুধু ধান, ভুট্টা আর পাট চাষ করতেন। কিন্তু গ্রামে হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছের বাগানের পর বাগান দেখে তিনিও আমের বাগান গড়ে তোলেন।

হাঁড়িভাঙা আমকে ঘিরে বেকারের সংখ্যাও কমেছে রংপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়। বিশেষত মিঠাপুকুরের লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানিসহ আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা এখন আম ব্যবসায় জড়িয়ে বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে আবার উদ্যোক্তা হিসেবে  হাঁড়িভাঙার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

এস/ আই. কে. জে/ 

হাঁড়িভাঙা আম

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250