ছবি: সংগৃহীত
এই শতকের প্রথম দশকে ভারতীয় টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখগুলোর একজন ছিলেন আমনা শরিফ। একতা কাপুরের হিট ধারাবাহিকে কাশীশ সুজল গারেওয়ালের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি ঘরে ঘরে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সহশিল্পী রাজীব খান্ডেলওয়ালের সঙ্গে তার রসায়নকে এখনো ভারতীয় টিভি–ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু এ আলোয় পৌঁছানোর পথটা মোটেও সহজ ছিল না। রক্ষণশীল পরিবারে জন্ম নেওয়া আমনাকে স্বপ্নপূরণের জন্য লড়তে হয়েছে নিজের চারপাশের সব বাধার সঙ্গে।
১৯৮২ সালের ১৬ই জুলাই মুম্বাইয়ে জন্ম আমনা শরিফের। বাবা ভারতীয়, মা বাহরাইনি। খুব ছোট বয়সেই বাবাকে হারান তিনি। মাকেই আশ্রয় করে বড় হওয়া। সম্প্রতি হিন্দি রাশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমনা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু পরিবার ছিল খুবই রক্ষণশীল। পরিস্থিতির কারণে পড়াশোনা চালিয়ে নিতে আমাকে একসময় বুটিকেও কাজ করতে হয়েছিল।’ খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
কলেজে পড়ার সময়ই প্রথম বিজ্ঞাপনের সুযোগ পান তিনি। মায়ের অনুমতি পেতে ছয় মাস ধরে বোঝাতে হয়েছে তাকে। অবশেষে মা পরিবারের বিরোধিতা সত্ত্বেও মেয়ের পাশে দাঁড়ান। এ কারণে আত্মীয়রা দুই বছর তার সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেননি। এরপর কুমার শানু, ফাল্গুনী পাঠক ও দলের মেহেন্দির গানের ভিডিওতে কাজ করেন আমনা। বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতেই তাকে দেখে একতা কাপুর ডাকেন অডিশনের জন্য। সেখান থেকেই শুরু হয় আমনার আসল যাত্রা।
একতা কাপুরের আলোচিত সিরিয়াল ‘কাহি তো হোগা’ শেষ হয় ২০০৭ সালে। এরপর বলিউডে হাত পাকাতে চান আমনা। ‘আলু চাট, ‘আও উইশ করে’, শকাল পে মাত যা’র মতো ছবিতে অভিনয় করলেও বক্স অফিসে একটিরও সাফল্য মেলেনি। টিভিতে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন হোঙ্গে ‘জুদা না হম’–এর মাধ্যমে, তবে কম রেটিংয়ের কারণে মাত্র ছয় মাসেই অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৩ সালে দীর্ঘদিনের প্রেমিক, চলচ্চিত্র প্রযোজক অমিত কাপুরকে বিয়ে করেন আমনা শরিফ। ২০১৫ সালে তাদের পুত্রসন্তান আরাইন জন্ম নেয়। হিন্দু–মুসলিম দুই সংস্কৃতিই পরিবারে সমানভাবে জায়গা করে নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একসঙ্গে করওয়া চৌথ আর ঈদ উদ্যাপনের ছবিও শেয়ার করেন তারা।
খবরটি শেয়ার করুন