ছবি : সংগৃহীত
রমজান মাসে রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, একে ‘তারাবি নামাজ’ বলা হয়। তারাবির নামাজের সময় হলো- এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।
হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রমজান সম্পর্কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমজান অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গোনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারি, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস, ১৮৭৯)
তারাবি নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। পুরুষদের জন্য মসজিদে জামাতের সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নত। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত তারাবি সুন্নত।
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রা.-এর সময়কালে তারাবির নামাজ সম্পর্কে আবদুর রাহমান ইবনু আবদ আল-ক্বারী রহ.বলেন—
আমি রমজানের এক রাতে ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর সাথে মসজিদে নাববীতে গিয়ে দেখি যে, লোকেরা এলোমেলোভাবে জামাতে বিভক্ত। কেউ একাকি নামাজ আদায় করছে আবার ইকতেদা করে একদল লোক নামাজ আদায় করছে।
ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি মনে করি যে, এই লোকদের যদি আমি একজন কারীর (ইমামের) পিছনে একত্রিত করে দেই, তবে তা উত্তম হবে। এরপর তিনি উবাই ইবনু কাব রা.-এর পিছনে সকলকে একত্রিত করে দিলেন।
আরো পড়ুন : রমজানের প্রথমার্ধেই ৮২ লাখ মুসল্লির ওমরা পালন
এরপর আরেকদিন রাতে আমি ওমর রা.-এর সঙ্গে বের হলাম। তখন লোকেরা তাদের ইমামের সাথে নামাজ আদায় করছিল।
ওমর বললেন, কত না সুন্দর এই নতুন ব্যবস্থা! তোমরা রাতের যে অংশে ঘুমিয়ে থাক তা রাতের ওই অংশ অপেক্ষা উত্তম যে অংশে তোমরা নামাজ আদায় কর...(বুখারি, (ইসলামিক ফাউন্ডেশন), হাদিস, ১৮৮০)
এশার নামাজ না পড়ে তারাবি পড়া যাবে?
এশার নামাজের সময় থেকেই তারাবি নামাজের সময় হয়ে যায়, তবে তারাবি পড়তে হয় এশার নামাজের পর থেকে। এশার নামাজ পড়ার আগে তারাবি নামাজ আদায় করা যায় না। কেউ আদায় করে থাকলে তার সেই তারাবি নামাজ আদায় হবে না।
যেমন কেউ যদি রমজান মাসে এশার নামাজে মসজিদে যেতে দেরি করে। এবং মসজিদে গিয়ে দেখে এশার জামাত শেষে তারাবি শুরু হয়ে গেছে। তখন খতম ছুটে যাবে ভেবে এশার নামাজ না পড়েই তারাবিতে শরীক হয়ে যায় এবং পরে মসজিদ বা বাসায় এসে এশা ও বিতির আদায় করে তাহলে তার তারাবি নামাজ আদায় হবে না।
এক্ষেত্রে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদরা বলেন, তারাবি নামাজ সহিহ হওয়ার জন্য আগে এশার ফরজ আদায় করা জরুরি। এশার ফরজ পড়ার আগে তারাবি পড়লে তা আদায় হয় না।
তাই কেউ মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ শুরু হয়ে গেছে দেখলে তার করণীয় হলো— আগে এশার ফরজ আদায় করা, এরপর তারাবির জামাত পেলে এতে শরীক হওয়া।
-(আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়েখ, পৃ. ৮৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৩৫; আল কাউসার অনলাইন, আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৫২; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪)
এস/ আই.কে.জে
খবরটি শেয়ার করুন