ছবি: সংগৃহীত
বাবাকে না জানিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে হঠাৎ বাবার ঘরে ফিরে এলেন মেয়ে। দরজা খুলতেই সামনে মেয়েকে দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলেন বাবা। বিস্ময়, আনন্দ আর অশ্রুতে কেঁপে উঠলো বুক। মুহূর্তেই জড়িয়ে ধরলেন আদরের সন্তানকে।
যেন সময় থেমে গিয়ে ফিরে এলো শৈশবের সেই ভালোবাসা। এ দৃশ্য দেখে আবেগে ভাসছেন হাজারো মানুষ। সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অসংখ্য ফেসবুক পেজ আর গ্রুপে ভেসে বেড়াচ্ছে বাবা-মেয়ের সেই আবেগঘন ভিডিওটি। যা দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা।
ভিডিওতে দেখা যায়, সদ্য বিবাহিত এক মেয়ে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফিরে বাবাকে সারপ্রাইজ দেন। যা এক আবেগপূর্ণ মুহূর্ত তৈরি করে। যেখানে বাবা মেয়েকে দেখে হতবাক এবং আনন্দিত।
জানা যায়, নওগাঁ শহরের দয়ালের মোড়ে বসবাস নূর মোহাম্মাদ নান্টু নামের এক ব্যবসায়ীর। মেয়ে লামিয়া জান্নাতকে বিয়ে দিয়েছেন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করছিলেন লামিয়া জান্নাত। বাবার বাড়িতে অনেক দিন আসা হয়নি তার।
হঠাৎ করেই কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই বাবার কাছে চলে আসেন মেয়ে। দরজার কড়া নাড়ার পরপরই ঘরের দরজা খুলে লামিয়াকে সামনে দেখতে পান বাবা নূর মোহাম্মাদ নান্টু। মুহূর্তেই আবেগাপ্লুত হয়ে ওঠেন তিনি। এক নিমেষেই মেয়েকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে কপালে কপাল লাগিয়ে স্নেহ আর আদরে ভরিয়ে দেন।
এই আবেগঘন মুহূর্ত মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করেন লামিয়ার ছোট বোন মালিহা জান্নাত। তারপর লামিয়া নিজেই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর অসংখ্য মানুষ আবেগঘন প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন।
কেউ লিখেছেন, ‘বাবা-মেয়ের ভালোবাসা পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র সম্পর্ক।’ আবার কেউ কেউ নিজের বাবার সঙ্গে কাটানো স্মৃতির কথা মনে করে আবেগ প্রকাশ করেছেন।
ভিডিওটি পোস্ট করে লামিয়া জান্নাত ভিডিওটির ক্যাপশনে ঘটনার পেছনের গল্পটি তুলে ধরেছেন। ক্যাপশনে লেখেন, ‘কয়েক দিন থেকেই বাসার সবাই নওগাঁ আসতে বলছিল। ভাবছিলাম, ইফফির বিয়েটা খেয়ে এসে ঘুরে যাব। এরপর আবার কনফিউজড আসব কি না।'
তিনি লেখেন, '২৩ (আগস্ট) তারিখ রাতে হুট করে ডিসিশন নিলাম পরের দিন আসব। একটু পর ঠিক হলো পরের দিন যেহেতু বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে তাহলে পরের দিন আসব। কিন্তু আম্মু-বাবাকে জানাব না।'
তিনি আরো লেখেন, ‘বাসে আম্মু একবার ফোন দিলেও আমি কেটে দিয়েছিলাম। এরপর বিকেলে আবার ফোন দিচ্ছিলেন আর ওই মুহূর্তে আমি ঘরে ঢুকছি। আম্মু একদম বাচ্চাদের মতো ছলছল করে উঠছেন। এরপর বাবাও এলেন দোকান থেকে। দেখে এমন সারপ্রাইজড যে কিছুক্ষণ বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। তার খুশি দেখে মনে হচ্ছিল বেড়াতে আসাটা সার্থক। এটাই হলো বাবার রিয়েকশন। আর ভিডিওর লাস্টে বলা কথাটা হলো বাস্তবতা।’
জান্নাতের ভিডিও পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই ভাইরাল হতে থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বাবা-মা ও মেয়ের অমূল্য সম্পর্কের এই দৃশ্য জল এনেছে অনেকের। কেউ কেউ আবার নিজেদের অভিজ্ঞতার কথাও লিখেছেন। তুলে ধরেছেন নিজেদের আবেগ। অনেকেই বলছেন, এই ভিডিওটি বাবা-মায়ের অম্লান বন্ধনের কথা তুলে ধরেছে।
খবরটি শেয়ার করুন