ছবি: সংগৃহীত
বহুল প্রতীক্ষার পর অবশেষে দেশের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্পজাতীয় মা মাছ। পাহাড়ি ঢল ও অনুকূল পরিবেশ থাকায় রেকর্ডসংখ্যক ডিম সংগ্রহ হয়েছে বলে জানান হালদা গবেষকরা।
রোববার (১৮ জুন) রাত থেকে সোমবার (১৯ জুন) সকাল পর্যন্ত শতাধিক নৌকা নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ডিম সংগ্রহ করছে নদী পাড়ের মানুষ। ব্যাপক ডিম সংগ্রহ করতে পারায় খুশির জোয়ার বইছে হালদা পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে।
ডিম সংগ্রহকারী কামাল জানান, কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম দেয়ার জন্য বজ্রসহ বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের অপেক্ষা করে। এবার প্রজনন মৌসুমের দেড় মাসজুড়েই এসব কিছু হয়নি। অন্যান্য সময়ে এপ্রিলের শেষ ও মে মাসের শুরুতে ডিম ছাড়ে। কিন্তু এবার তীব্র দাবদাহের কারণে হালদা নদীতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় ডিম ছাড়তে দেরি হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হওয়ায় রোববার রাতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। রামদাস মুন্সির হাট, গড়দুয়ারা, মাছুয়াঘোনা, নয়াহাটসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়। এবার প্রচুর ডিম সংগ্রহ করতে পারায় খুশি সবাই।
হালদা গবেষক মঞ্জুরুল কিবরিয়া জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় ডিম ছেড়েছে মা মাছ। এবার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় রেকর্ড পরিমাণ ডিম সংগ্রহের আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুন (বাংলা মাস চৈত্র থেকে আষাঢ়) কর্ণফুলী ও সাঙ্গুর মতো বিভিন্ন নদী থেকে দেশীয় কার্পজাতীয় মাছ, যেমন: রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালি বাউশ হালদায় আসে এবং সময়ের মধ্যে যে কোনো সময় ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ নিশ্চিত হতে হয়। তাপমাত্রা, পানি, প্রবল স্রোত ও বজ্রবৃষ্টি ইত্যাদি মা মাছের ডিম ছাড়ার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে।
আরো পড়ুন: পদ্মা সেতুর ঋণের ৩য় ও ৪র্থ কিস্তির প্রায় ৩১৬ কোটি টাকা পরিশোধ
চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এপ্রিল থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। শনিবার (১৭ জুন) মানিকছড়ি ও ফটিকছড়ি উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীদের মুখে হাসি ফোটে। রোববার রাতে ডিম ছাড়ায় আগের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে তারা ডিম সংগ্রহ করছেন।
হালদা নদীতে গতবার মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ছিল সাড়ে ছয় হাজার কেজি। এর আগে ২০২১ সালে আট হাজার ৫০০ কেজি। ২০২০ সালে নদীতে ডিম সংগ্রহের পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৫ হাজার কেজি।
এম/