ছবি-ফাইল
নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মদিন আজ। প্রতি বছর এদিন রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রিয়জনদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটতেন তিনি। সকাল হলে ভক্তরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেন প্রিয় লেখককে। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে পালিত হতো তার জন্মদিন।
এবারও নানা আয়োজনে উদযাপিত হবে দিনটি। ক্ষণজন্মা এ কথাশিল্পীর ২০১২ সালে জীবন কেড়ে নেয় ক্যানসার। তবে মুগ্ধ পাঠকের হৃদয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন তার রচনাবলিতে। ক্যালেন্ডার বলছে, আজ ১৩ নভেম্বর। বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র, শব্দের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ-এর ৭৫তম জন্মদিন। তার কলম থেমে গেলেও কর্ম অবিচল। রসবোধের সঙ্গে লৌকিকতা আর অলৌকিকতার সমগ্র সুন্দরের মিশেলে বাংলা কথাসাহিত্যকে যিনি সমৃদ্ধ করেছেন, সেই কিংবদন্তির জন্মদিন আজ।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। ৬৩ বছরের জীবন কাটিয়ে ২০১২ সালে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। কিন্তু চলে যাবার আগে যে সমৃদ্ধ, বর্ণিল জগত সৃষ্টি করে গেছেন, তা ধ্রুবতারার মতো দ্যুতি ছড়ায় আজও।
হুমায়ূন আহমেদকে বলা হয় নন্দিত কথাসাহিত্যিক। গল্প-উপন্যাস লিখে তিনি যতটা জনপ্রিয়তা, সাফল্য পেয়েছিলেন, তা বিরল। তার রচিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ রচনা করে অমরত্ব পেয়েছেন।
চলচ্চিত্র ও নাটকের ইতিহাসে তার নামটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি যেসব নাটক রচনা করেছেন, নির্মাণ করেছেন, সেগুলো আজ অব্দি আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়। তার সৃষ্ট বাকের ভাই, মিসির আলী কিংবা হিমু চরিত্রগুলো এখনো যেন হেঁটে বেড়ায় শহর থেকে মফস্বলে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে হুমায়ূন আহমেদের অভিষেক হয় ১৯৯৪ সালে। সে বছর তিনি নির্মাণ করেছিলেন ‘আগুনের পরশমণি’। যেটি আটটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছিল।
আর পড়ুন: ৩ কোটি টাকায় বিক্রি মাইকেল জ্যাকসনের জ্যাকেট
পরবর্তীতে তিনি ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘আমার আছে জল’ ও ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ চলচ্চিত্রগুলো। এগুলো বিভিন্ন শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল।
সাহিত্য ও নির্মাণে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়ে হুমায়ূন আহমেদ অর্জন করেছিলেন বহু পুরস্কার-সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
ব্যক্তিগত জীবনে হুমায়ূন আহমেদ দুটি বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম ছিল গুলতেকিন। ১৯৭৩ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তারা দাম্পত্যে আবদ্ধ ছিলেন। এই সংসারের সন্তান অভিনেত্রী শীলা আহমেদ, নোভা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ ও নুহাশ হুমায়ূন।
২০০৫ সালে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওনকে। এই সংসারে তিনি নিশাত হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন দুই ছেলের বাবা হন।
জন্মদিনে আড়ম্বরতা পছন্দ ছিল না হুমায়ূন আহমেদের। শনিবার (১২ নভেম্বর) তার অবর্তমানে বাংলা একাডেমিতে দেওয়া হলো ‘অন্যদিন হুমায়ূন সাহিত্য পুরস্কার ২০২২’। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এই নন্দিত ব্যক্তিত্ব।
এসি/ আই. কে. জে/