বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদন আইনগতভাবে বিবেচনা না করে, রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল। এ বিষয়ে আজ রোববার আইনমন্ত্রী বক্তব্য দেওয়ার পর গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় কায়সার কামাল এ অভিযোগ করেন।
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ প্রথম আলোকে বলেছেন, আইনগতভাবে অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ সরকারের হাতে নেই। সেই মতামতই আইন মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। নিজ দপ্তরের সামনে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে তাঁর ভাই যে আবেদনটি করেছিলেন, সে বিষয়ে আইনি মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে কায়সার কামাল বলেন, এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে দেশে আইনের শাসন নেই। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার প্রতি এক ভয়ংকর তামাশা করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা আছে, সরকার চাইলেই নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দিতে পারতেন এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে পারতেন।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে রাজবন্দীদের মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করানোর দৃষ্টান্ত রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল। খালেদা জিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এর ব্যাখ্যায় কায়সার কামাল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী পাবলিক স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছিলেন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে যদি আবেদন করা হয়, সেটি সুবিবেচনা করা হবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার গত ২৫ সেপ্টেম্বর আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই আবেদনটি আইনগতভাবে বিবেচনা না করে, রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফলাফল আজকে আমরা এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। সর্বশেষ কিছুদিন আগে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাঁর মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৫২ দিন ধরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে দেশের বাইরে নিতে চায় পরিবার।
একে/