প্রতীকী ছবি
প্রাচীনকাল থেকে জ্বর, বাত, হাঁপানি এবং ব্রঙ্কাইটিসের চিকিৎসার জন্য কেঁচো ব্যবহার করে আসছেন চীনারা। কিন্তু বর্তমানে অতিরিক্ত পরিমাণে ফসল কাটার ফলে কেঁচোর সংখ্যা কমে গিয়েছে চীনে।
বর্তমানে অনেক চীনারা ভিয়েতনাম থেকে কেঁচো ক্রয় করছে। এতে অনেক ভিয়েতনামের কৃষকই তাদের উপর বিরক্ত কারণ জমি উর্বর এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে তারাও কেঁচোর উপর নির্ভরশীল।
ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে কেঁচো শিকার করতে কৃষকদের ক্ষেত কিংবা বাগানে বিনা অনুমতিতেই ঢুকে পড়ছে চীনারা।
তবে ভিয়েতনামের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার চীন হলেও দক্ষিণ চীন সাগর, মাছ ধরার জায়গা, তেল ও গ্যাস খননের অধিকার ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক বিরোধ চলছে।
বর্তমানে ‘হোয়া বিন’ প্রদেশের কমলা চাষীরা কেঁচো চোরাচালান বন্ধ করতে ২৪ ঘন্টাই পাহারা দিচ্ছে। এ বিষয়ে তারা কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কাছেও সাহায্য চায়।
কেঁচো ধরার মাধ্যমে চীনারা অর্থ উপার্জনও করছে। প্রতি কেজি কেঁচোর মূল্য ৩ থেকে ৩.৩০ মার্কিন ডলার। দেখা যায়, প্রতি রাতে চীনা চোরাকারবারিরা ১০০ থেকে ১২০ কেজি পর্যন্ত কেঁচো ধরতে সক্ষম।
অতীতের বিভিন্ন ঘটনায় দেখা যায়, নানা অসুখের প্রতিষেধক হিসেবে চীনারা কেঁচোকে ব্যবহার করেছে। বর্তমানে চীনে কেঁচোর পরিমাণ এতো কমে গিয়েছে যে ভিয়েতনামের কাছে হাত পাতা ছাড়া তাদের আর অন্য কোন উপায় নেই।
জুয়ান এবং হুং নামের দুইজন বিজ্ঞানী জানান কেঁচোর অনুপস্থিতিতে মাটির গুণমান, ফসল এবং সামগ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি হয়। কেঁচোর অনুপস্থিতিতে মাটি এতোটাই সংকুচিত হয়ে পড়ে যে শিকড়গুলোর জন্য জল শোষণ করা পর্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রাকৃতিক লাঙ্গলচাষী হিসেবে কেঁচোকে সম্বোধন করে তারা বলেন, বর্তমানে ফসল কাটার জন্য যে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলোর কারণে কেঁচোর বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া ভিয়েতনামের অনেক চোরাকারবারিরা টাকার বিনিময়ে চীনাদের কাছে কেঁচো বিক্রি করছে। তারা কেঁচো ধরার জন্যে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছে, যার ফলে কেঁচোর সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত ঘটছে।
অতীতে মহিষের খুর, জোঁক, কাজু পাতা ইত্যাদির পণ্যে চীনা চাহিদার জন্য ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ভিয়েতনাম।
এম.এস.এইচ/
খবরটি শেয়ার করুন