বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় পালং শাক

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৫১ অপরাহ্ন, ১৯শে আগস্ট ২০২৩

#

পালং শাক

বাঙালির শাকসবজি মানে পাতের পাশে একটা শাক থাকবেই। বিভিন্ন শাকের মধ্যে পালং শাক বাঙালির বেশ প্রিয়। এই শাক দিয়ে রাঁধা পালং পনিরও বেশ তৃপ্তি করে খান অনেকে। পালং শাককে বলা হয় রক্ত পরিষ্কারক খাদ্য। প্রচুর আয়রন থাকায় শরীরে রক্ত বাড়াতেও সহায়তা করে এই শাক। 

পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, এক কাপ পালং শাক শরীরের দৈনিক ফাইবার চাহিদার ২০% পূরণ করে। পাশাপাশি, ভিটামিন ‘এ ’ও ‘কে’-তে ভরপুর পালং শাক। পালং শাকে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘ই’, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, ফলিক অ্যাসিড ও সেলেনিয়াম। একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য এই উপাদানগুলো খুবই জরুরি। 

পালং শাক একটি শীতকালীন সবজি যাতে রয়েছে শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখার জন্য প্রচুর পুষ্টি উপাদান। বিভিন্ন প্রকার অসুখ-বিসুখকে দূরে রাখতে খাবারের তালিকায় শাকটি রাখা যেতে পারে। চলুন শাকটির ১০টি স্বাস্থ্যকর গুনাগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।

পালং শাকের ১০টি স্বাস্থ্যকর গুনাগুণ

পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান, তাই শাকটি খাওয়ার মাধ্যমে আমরা সুস্থ থাকা সহ অনেক অসুখ-বিসুখের হাত থেকে রেহাই পেতে পারি। পালং শাকের ১০ টি উপকারিতা-

১। রক্তচাপ কমাতে-

পালং শাকে রয়েছে থাকা উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম। এর ফলে নিয়মিত পালং শাক খেলে তা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।

২। দেহের ওজন কমাতে-

যদি কম ক্যালরি যুক্ত খাবার বাছাই করতে চান সেক্ষেত্রে আপনি পালং শাককে বেছে নিতে পারেন। কারণ  প্রতি ১০০গ্রাম পালং শাকে ক্যালোরি রয়েছে মাত্র ৭ কিলোক্যালরি যা আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

৩। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তাদের ভালোভাবে জীবনযাপন করাটা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। অনেকে আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের ভয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে ভয় পান। যেহেতু পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নির্ভয়ে খেতে পারেন সবজিটি।

৪। দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি রোধ করে-

বিভিন্ন প্রকার সবুজ শাক সবজিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইটোকেমিক্যাল থাকে যা আমাদের দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি বাঁধা দেয়। পালং শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকায় তা আমদের চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। 

৫। ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে-

পালং শাকে থাকা ভিটামিন ‘এ’ ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটা বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ, বলিরেখা পড়া ইত্যাদির দূরীকরণেও বেশ কার্যকর। এছাড়া এটা ত্বকের বয়সের ছাপ পড়ার গতিকে ধীর করে এবং ত্বককে নরম ও স্থিতিস্থাপক অবস্থা ধরে রাখতে সাহায্য করে। 

৬। দেহের ক্লান্তিভাব দূর করে-

পালং শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার আয়রন যা দেহে অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য খুবই জরুরী। এছাড়া এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ভিটামিন সি ও ই কে তরান্বিত করে আমদের পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। এতে আমাদের শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। এছাড়া এই সবজি আমাদের রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। 

৭। প্রদাহ জনিত সমস্যা রোধ করে-

পালং শাকে রয়েছে ‘নিওজেন্থিন’ নামক ইয়পাদান যা প্রদাহ নিরাময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যাদের জয়েন্টে ব্যাথার সমস্যা আছে তারা অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এটি রাখতে পারেন এবং উপকৃত হতে পারেন।

৮। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে-

পালংশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিনেজা সুস্থ কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের জন্য খুবই জরুরী। তাই হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য সবজিটি আমাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিতভাবে রাখা দরকার।

৯। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে-

এই সবজিতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ সহ  রোগ প্রতিরোধী রক্তের শ্বেত কণিকার সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। ফলে দেহ বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা পায়।

১০। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে-

পালং শাকে রয়েছে ১০টিরও বেশি ভিন্ন ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড যা ভয়ানক রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে। এই পলিনিউট্রিয়েন্টস গুলো দেহের ফ্রি রেডিকেলকে নিরপেক্ষ করে। ফলে দেহ থাকে ক্যান্সারের আক্রমণ থেকে ঝুঁকিমুক্ত।

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়  বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি থাকা এক কথায় বাঞ্ছনীয়। কারণ শাক সবজি ছাড়া সুষম খাবারের শর্তই পূরণ হয়না। আমাদের সবারই উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শাক সবজি রাখা। তাই সুষম খাদ্য উপাদান হিসাবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পালং শাক হতে পারে একটি আদর্শ সবজি। 

এসকে/




পালং শাক পালং শাকের ১০টি স্বাস্থ্যকর গুনাগুণ

খবরটি শেয়ার করুন