গর্ভাবস্থায় অনেক নারী স্ট্রোকের শিকার হন। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে অসুস্থতাজনিত মৃত্যুর অন্যতম কারণ স্ট্রোক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ডেটা অনুযায়ী, ২০২০ সালে কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত প্রতি ছয়জনের একজনের মৃত্যু হয়েছে স্ট্রোকে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।
গর্ভাবস্থায় অনেক নারী স্ট্রোকের শিকার হন। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী, তা এক ভিডিওতে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম। পরামর্শগুলো তার ভাষায় উপস্থাপন করা হলো।
আপনারা অনেক ক্ষেত্রেই দেখবেন, বিভিন্ন সময় পাবেন, আপনার আশেপাশে দুই-একজনকে হয়তো পেয়েছেন প্রেগন্যান্সির সময় বা ডেলিভারির পরে স্ট্রোক নিয়ে আসেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্রেনের, অনেক ক্ষেত্রে স্পাইনাল কর্ডেরও নিয়ে আসে। ব্রেনের স্ট্রোকটা প্রেগন্যান্সির সময় দুই ধরনের হয়। একটা হচ্ছে প্রেগন্যান্সির সময় আমরা জানি হাইপারডাইনামিক সার্কুলেশন থাকে রক্তের ভলিউম বেড়ে যায়, রক্ত চলাচল করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রেশারও বাড়ে, সেটা আমরা জানি। রক্তনালি জমাট বাঁধার টেনডেন্সি (প্রবণতা) একটু বেড়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে। এই সংক্রান্ত দুই ধরনের স্ট্রোকই পাওয়া যায়।
ধমনি রিলেটেড স্ট্রোক বা শিরা রিলেটেড স্ট্রোক। শিরা রিলেটেড স্ট্রোকগুলোকে আমরা বলি সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রমবোসিস। ব্রেন এবং সাইনাস থ্রমবোসিস হলে যেটা হয়। এই রোগীগুলো তীব্র মাথাব্যথা নিয়ে আসে। আমাদের কাছে যখন আসে, তখন একটা বড় অংশের সিটি স্ক্যানে কালো দেখি রক্ত চলাচল কম হচ্ছে এ কারণেই। শিরা মানে কী, আর্টারি দিয়ে রক্ত যাচ্ছে। রক্তটা শিরা দিয়ে ফিরে আসতে পারতেছে। এই ধরনের স্ট্রোক। আর ধমনিতে স্ট্রোক মানে আর্টেরিতে রক্ত যাচ্ছে। জাস্ট উল্টা।
তো অনেক ক্ষেত্র্রে শিরা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণও তৈরি হয়, যেটাকে আমরা বলি হেমোরেজিক ইনফল। এ ম্যানেজমেন্টগুলো একটু কঠিন। হাইড্রেশন লাগে। বিভিন্ন ধরনের রক্ত জমাট বাঁধার টেনডেন্সি কমে যায়, সেই টাইপের ওষুধ দিতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডিকমপ্রেসিভ সার্জারি লাগে। আবার অনেক নারীরই থাকে এ ধরনের রক্ত জমাট বাঁধার টেনডেন্সি বেশি। আমরা কিছু কিছু পরীক্ষা করে সে কারণগুলো দেখি এবং সেই রিলেটেড ওষুধ উনাকে দীর্ঘদিন চালাতে হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে যে হেমোরেজ হয়েছে, রক্তক্ষরণ হয়েছে, আমরা কিছু সার্জারিও লাগে।
ইনিশিয়াল ড্যামেজটা যদি আমরা কন্ট্রোল করতে পারি, ভালো হয়ে যায়। সবাই ভালো হয় অলমোস্ট এবং নরমাল লাইফ ফিরে পায়। আর ধমনির জন্য যেটা হয়, এটা রাপচার এবিএম হইতে পারে, অ্যানিউরিজম রাপচার হতে পারে।
তো এই রোগীগুলো আমাদের ডিটেক্ট করা দরকার আছে যে, কী কারণে এগজ্যাক্টলি স্ট্রোকটা হয়েছে এবং চিকিৎসা করা। সমস্যা যেটা হয়, পেটে বাচ্চা আছে, এই সময়ে রক্তনালির অসুখটা ডিটেক্ট করতে আমাদের ঝামেলা হয়ে যায়। আমি এক্সরে করি বা সিটি স্ক্যান করি বা এনজিওগ্রাম করি, সবকিছু আসলে অনেক রেডিয়েশন এমিট হয়, যেটা বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর।
আরো পড়ুন: মাতৃ স্বাস্থ্যসেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপযোগিতা বিষয়ক কর্মশালা
এই কেসগুলো আমরা কেয়ারফুলি ডিল করি, প্রত্যেকটা কেস বাই কেস। কোনো কোনো কেস আমাদের কাছে মনেই হয় যে, আমরা একটু অপেক্ষা করি। বাচ্চারা একটু ডেলিভারি হোক বা জেস্টেশন, মায়ের পেটে একটু বড় হোক। ফর দ্য সেইক অফ দ্যাট বেবি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যদি করতেই হয় যে, দেরি করলে আসলে ব্লিডিং হওয়ার চান্স বেশি, সেই ক্ষেত্রে আমরা স্পেশাল প্রটেকশনে বেবিকে আমরা লিডশিট কাভার দিয়ে এনজিওগ্রাম করে আমরা চিকিৎসার দিকে যাই।
এম এইচ ডি/ আইকেজে