সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীন ও ইরানের বিরুদ্ধে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:২৬ অপরাহ্ন, ১৮ই মে ২০২৩

#

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর গত সোমবার (স্থানীয় সময়), বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ সময় তারা চীন ও ইরানে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, দিনদিন অত্যাচারী দেশগুলো তাদের অত্যাচারের মাত্রা বৃদ্ধি করেই চলেছে। বিশ্বের অনেক দেশের সরকারই নির্যাতন, বেআইনি নজরদারিসহ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চালিয়েই যাচ্ছে।

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত ভিন্নমতাবলম্বী উইঘুর সম্প্রদায়ের উপর চীনা নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি চীনকে বিশ্বের মানবাধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতার সবচেয়ে নিকৃষ্ট অপব্যবহারকারী হিসেবে অভিহিত করেন।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে প্রায় ১০ হাজার বা তারও বেশি ভিন্নধর্মী মানুষদেরকে অহেতুক আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে।

চীন প্রধানত উইঘুর মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালালেও তিব্বতি বৌদ্ধ, চীনা খ্রিস্টান এবং ফালুন গং বিশ্বাসীদের উপরেও তাদের অত্যাচার-নির্যাতন চলমান।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পূর্বেও বলেছে যে উইঘুরদের প্রতি চীনা নির্যাতন গণহত্যার সমতুল্য। প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ নির্যাতন বর্তমান সময়েও অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে তিব্বতীয় বৌদ্ধদের উপর চীনা নির্যাতনের কথাও উঠে আসে। 

গত বছর চীনা অধিকৃত তিব্বতে ভিন্নধর্মাবলম্বী ভিক্ষু, সন্ন্যাসী ও অন্যান্যদের উপর কোনও প্রকার বিচার ছাড়াই জোরপূর্বক গুম, গ্রেফতার, শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

চীনা সরকারি কর্মকর্তারা অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তারা উইঘুর মুসলমানদের ‘সন্ত্রাসী’ দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে ন্যায্য বলে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন।

ইরানের ইসলামিক মনোভাবকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেন ব্লিঙ্কেন। তাদের এই মনোভাবের কারণে নাগরিকদের উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় এবং যারা এই বিধিনিষেধ মেনে চলতে অপারগতা প্রদর্শন করেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। 

গত সেপ্টেম্বরে এক তরুণীর মৃত্যুতে সমালোচনার শিকার হয় ইরান। দেশের শত শত তরুণীসহ ইরানের নাগরিকেরা ধর্মীয় স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, ইরানি তরুণী মাসা আমিনি হিজাব দিয়ে তার চুল পরিপূর্ণভাবে ঢাকেন নি বলে গত সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেফতার ও হত্যা করা হয়।

প্রতিবেদনে রাশিয়া এবং অধিকৃত ইউক্রেনে রাশিয়া কর্তৃক ধর্মীয় স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ব্যাপক লঙ্ঘনের তথ্যও উঠে আসে।

অন্যদিকে বেলজিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের বৌদ্ধ সংখ্যালঘুদের স্বীকৃতি দেয় এবং ব্রাজিলের আইন প্রণেতারা আফ্রো-ব্রাজিলীয় আদিবাসীদের জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করেন বলেও জানান ব্লিঙ্কেন।

আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিবেদনটি প্রতি বছর স্টেট ডিপার্টমেন্ট দ্বারা প্রকাশিত হয় এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার অবস্থা, স্বাধীনতা লঙ্ঘনকারীদের তথ্য ইত্যাদি প্রকাশ করে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন

খবরটি শেয়ার করুন