সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনের প্রভাব কমাতে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোরের সিদ্ধান্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:৫০ অপরাহ্ন, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

ছবি : সংগৃহীত

চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা এবং বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপারে যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জি-২০ সম্মেলনে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড ইনভেস্টমেন্ট (পিজিআইআই) এবং ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর (আইএমইসি) এর একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে একত্রিতভাবে সভাপতিত্ব করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে ইইউ, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, মরিশাস, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং বিশ্ব ব্যাংকের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

পিজিআইআই উদ্যোগটির মূল লক্ষ্য হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামোগত ব্যবধান পূরণ করা এবং বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যগুলো পূরণে সাহায্য করা। অন্যদিকে আইএমইসি ভারতকে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করছে এবং এর অন্য একটি করিডোর ভারত-মধ্যপ্রাচ্যকে ইউরোপের সাথে সংযুক্ত করছে। এর মাধ্যমে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ রুটে রেল ও সড়ক পরিবহনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ অঞ্চল জুড়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।

মূলত এ উদ্যোগ ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অঞ্চলগুলোর দেশসমূহে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিকল্প প্রদান করে চীনের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাবও অনেকটাই কমে যাবে।

আরো পড়ুন: নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে চীন সরকার

নরেন্দ্র মোদী তার বক্তব্যে এই ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোরের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বলেন, এর মাধ্যমে ভারত ও ইউরোপের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরো সহজতর হবে।

হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে এই করিডোর স্থাপনকে নবযুগের সূচনা বলে অভিহিত করা হয়। 

এর মাধ্যমে উভয় মহাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সংযুক্ত হবে। তাছাড়া উভয় মহাদেশের মধ্যে রপ্তানি ব্যবস্থা ও স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ সহজতর হবে। 

আরো পড়ুন: চীন থেকে এগিয়ে রয়েছে ভারত: আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারপারসন

আইএমইসি এর সমঝোতা স্মারকটিতে ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি, ফ্রান্স এবং জার্মানি স্বাক্ষর করে। 

এ উদ্যোগটি কেবল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও উন্নয়নকেই শক্তিশালী করে না, একইসাথে এই অঞ্চলগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ব্যবস্থাও গড়ে তোলে।

বিআরআই বা বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশ জুড়ে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি করে, ফলে এ অঞ্চলগুলোতে মার্কিন প্রভাব দুর্বল হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। একইসাথে প্রতিবেশী দেশ চীনের সাথে ভারতের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পেলে সীমান্ত বিরোধের ক্ষেত্রেও এর ফলাফল ভোগ করতে হতে পারে ভারতকে।

অবকাঠামোগত প্রকল্পের জন্য তহবিল প্রদানের মাধ্যমে, চীন বিআরআই-তে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর উপর অর্থনৈতিক প্রভাব অর্জন করে। এর ফলে এই অঞ্চলগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের অর্থনৈতিক প্রভাব হ্রাস পেতে পারে।

তাছাড়া বিআরআই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর ঋণফাঁদে পড়ার সুযোগ তৈরি হয়, ফলে এসব দেশগুলোর অর্থনীতিতে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

এসকে/ এএম/ 


চীন ভারত জাতিসংঘ মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকান ইউনিয়ন করিডোর

খবরটি শেয়ার করুন