ছবি: সংগৃহীত
বর্ষাকাল মানেই ইলিশের মৌসুম। ইলিশ এমন এক মাছ, তা যেভাবেই রান্না করে খাওয়া হোক না কেন, স্বাদে কোনো পরিবর্তন আসে না। ইলিশ ভাজা, ঝোল, রান্না, বাটা, ভাপা সকলভাবেই খাওয়া যায়। আমাদের এখানে ইলিশ রান্নায় পেঁয়াজবাটার ব্যবহার একটু বেশি।
দুই বাংলায় ইলিশ রান্নার পদ্ধতি আলাদা হলেও স্বাদের কিন্তু কমতি নেই। মাচায় ঝোলা যে সবজি হয়, সেটা দিয়ে ইলিশ রান্না বেশি জমে। তা ছাড়া ইলিশের লেজ, মাথা, ডিমের স্বাদও কম নয়। ব্রিটিশরা ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ বজায় রাখতে ইলিশ মাছকে স্মোকড করে খেত। তাদের হাত ধরেই এই অঞ্চলে স্মোকড ইলিশের প্রচলন শুরু হয়। ইলিশ স্মোকড করে খাওয়ার আরেকটি কারণ ছিল, তারা মাছের কাঁটা বেছে খেতে পারত না। স্মোকড ইলিশ রান্নার পদ্ধতিগত কারণেই মাছের কাঁটা খুব নরম হয়ে যেত। আর ইলিশে আছে ওমেগা-৩, যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলকে রোধ করে। যে কারণে ব্রিটিশরা এই মাছ খেতে ভালোবাসত।
ইলিশ নিয়ে বিদেশিরা কিন্তু আমাদের ঐতিহ্যবাহী রেসিপি খেতেই ভালোবাসেন। যদিও বাইরের দেশগুলোতে ইলিশ ততটা সহজলভ্য নয়। একবার কিছু বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে আমার ভাইয়ের বাসায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাঁদের আপ্যায়ন করতে ইলিশ পোলাও, ভাপা ইলিশ রান্না করা হলো। ইলিশের এসব বাঙালি রান্না খেয়ে তাঁরা এতই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে এখনো সেই স্বাদের কথা বলেন।
এখন অনেক রেস্তোরাঁ, বুফে বা পাঁচ তারকা হোটেলগুলোতে ইলিশ নিয়ে নানা নিরীক্ষাধর্মী রান্না করা হয়। স্মোকড ইলিশ, ইলিশের কাবাব, ফ্রাই আরও কত কি। আর নতুন প্রজন্ম কাঁটা বেছে মাছ খাবে, সেই সময় বা ধৈর্য তাদের নেই। সবকিছুতেই একটি সহজ সমাধান খোঁজে তারা। এ জন্য ইলিশ রান্নাতেও আসছে পরিবর্তন। যাতে ভাত ছাড়াও এই মাছ খাওয়া যেতে পারে, সে জন্য তৈরি হচ্ছে নানা ফিউশন রেসিপি।
আর.এইচ