শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের গুরুত্ব শুধুই ভোটের সময়: হিন্দু মহাজোট

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৫৫ অপরাহ্ন, ১০ই নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

দেশে শুধুমাত্র ভোট এলেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের গুরুত্ব বাড়ে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়। তিনি বলেন, একটানা অবজ্ঞা, অবহেলার মধ্যেই আছে এদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা। এদের গুরুত্ব শুধুই ভোটের সময়। এর আগেও না, পরেও না। যা ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক, অমর্যাদাকর ও অবিচার।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করো হয়। 

ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এখন নিরাপত্তাহীন পরিবেশের মধ্যে আছে দাবি করে লিখিত বক্তব্যে মৃত্যুঞ্জয় কুমার বলেন, আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের জন্য যেসব অঙ্গীকার করেছিল তার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। বরং আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা এখন নিরাপত্তাহীন পরিবেশের মধ্যে আছি। আওয়ামী লীগ সরকার বারবার আমাদের উপেক্ষা করার চেষ্টা করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে যে নির্বাচনী ইশতেহার আওয়ামী লীগ ঘোষণা করেছিল, সে ইশতেহারে বেশ কয়েকটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু স্বার্থ বান্ধব অঙ্গীকার ছিল। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলে আদিবাসীদের জন্যে আলাদা ভূমি কমিশন গঠনের মতো বেশ কিছু অঙ্গীকার বাস্তবায়ন হবে বলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারি দলের পাঁচ বছর প্রায় অতিক্রম হলেও একটি প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠাকরণসহ সাত দফা দাবি করে আসছিল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইশতেহারে এই দাবি পূরণের অঙ্গীকার করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। অথচ যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কথা বলেছেন, তারাও সচেতনভাবেই হোক আর অসচেতনভাবে হোক সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন... যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, কোনো বিচার না হওয়ায় প্রশ্রয় পেয়ে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা সংখ্যালঘুদের ভূ-সম্পত্তি ও বাড়িঘর দখল করে নিয়ে, দেবালয়-দেবদেবীর প্রতিমা ধ্বংস করে দিয়ে, বিভিন্নভাবে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করাসহ বর্বর অত্যাচার করে সংখ্যালঘুদের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই নির্মম পরিণতি ঠেকানো সরকারের দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য। বিশেষ করে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধুর কন্যা যখন ক্ষমতায় আসীন।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে উলে্লখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন হলো একটি মোক্ষম মাধ্যম। যার মাধ্যমে অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উৎখাত করার সুযোগ পাওয়া যায়। কঠোর হস্তে বঙ্গবন্ধু এই অশুভ শক্তিকে কবরে ঢুকিয়েছিলেন। এরা অব্যাহতভাবে দেশ ও সমাজে অঘটন ঘটিয়ে চলেছে।

হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে উৎখাত করার জন্য নির্বাচনী অঙ্গীকার পত্রে সুস্পষ্ট ওয়াদা থাকতে হবে। কাজেই আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সবগুলো রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের জোরালো আহ্বান থাকবে, তারা যেন নির্বাচনী অঙ্গীকারপত্র তৈরির সময় জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশের সংবিধানের কথা মনে রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু মহাজোটের অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসকে/ 

ভোট হিন্দু মহাজোট ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভোট ডা. মৃত্যুঞ্জয় কুমার রায়

খবরটি শেয়ার করুন